জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) নির্বাচন কমিশনের সাথে বৈঠক শেষে ‘শাপলা কলি’ প্রতীক নিতে রাজি হয়েছে। দলটি আগামী জাতীয় নির্বাচনে ৩০০ আসনে প্রার্থী দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে।
জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) তাদের নির্বাচনী প্রতীক হিসেবে ‘শাপলা কলি’ নিতে রাজি হয়েছে। একইসাথে, দলটি আগামী জাতীয় নির্বাচনে ৩০০ আসনেই প্রার্থী দেওয়ার জোরালো ঘোষণা দিয়েছে। আজ রোববার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিনের সঙ্গে বৈঠক শেষে এই ঘোষণা দেন দলটির মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী।
এনসিপির প্রধান ঘোষণাগুলো:
- প্রতীক: দলটি ‘শাপলা কলি’ প্রতীক নিয়ে নির্বাচনে অংশ নেবে।
- আসন: আগামী জাতীয় নির্বাচনে ৩০০ আসনেই প্রার্থী দেওয়া হবে।
নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী বলেন, “আমরা শাপলা কলি নেব। …আমরা কি ইলেকশন ফেজে (পর্যায়ে) ঢুকব না? তো সে জন্য আমরা বৃহত্তর স্বার্থটা চিন্তা করেই এই ডিসিশনটা (সিদ্ধান্ত) নিচ্ছি।” তিনি ব্যাখ্যা করেন যে, প্রতীকের বিষয়ে বিতর্কে আটকে না থেকে তারা নির্বাচনের মূল পর্যায়ে প্রবেশ করতে চান।
পাটওয়ারী আরও দাবি করেন, ‘শাপলা কলি’ প্রতীক নিয়ে তারা দেশজুড়ে ইতিবাচক সাড়া পেয়েছেন। তিনি এটিকে ‘শাপলার চেয়ে এক ধাপ এগিয়ে’ বলে মন্তব্য করেন। তার মতে, এখানে শাপলা ও কলি উভয়ই রয়েছে, যা নির্বাচন কমিশন এক ধাপ বাড়িয়ে চিন্তা করেছে।
নির্বাচন কমিশনকে ‘ইঞ্জিনিয়ারিং কমিশন’ আখ্যা
সিইসির সাথে বৈঠক করলেও নির্বাচন কমিশনের প্রতি তীব্র অনাস্থা প্রকাশ করেন এনসিপি নেতা। নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী বলেন, “এখনো নির্বাচন কমিশনকে যদি সংক্ষিপ্ত ওয়ার্ডে বলতে বলেন, আমরা এটাকে নির্বাচন কমিশন বলতে পারি না। এটাকে ইঞ্জিনিয়ারিং কমিশন বলতে পারি আমরা।”
তিনি অভিযোগ করেন, “এই ইঞ্জিনিয়ারিং কমিশনে এসেছি আমরা, এখানে অনেক কিছু ইঞ্জিনিয়ারিং হচ্ছে। সো ইঞ্জিনিয়ারিং কমিশনে আমরা আমাদের ফাইটটা করে যাচ্ছি।” ভবিষ্যতেও ইসি জনগণের সাথে স্বেচ্ছাচারী আচরণ করতে পারে বলে তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করেন।
‘বিএনপির চাঁদাবাজি, জামায়াতের ফ্যাসিবাদ’
এনসিপির মুখ্য সমন্বয়ক দেশের প্রধান দুই বিরোধী দলকেও সমালোচনা করেন। তিনি বলেন, “জামায়াতে ইসলামীর নেতৃত্বে দেশে ধর্মীয় ফ্যাসিবাদ কায়েম হয়েছে। আর বিএনপির নেতৃত্বে চাঁদাবাজি, সন্ত্রাস হচ্ছে।”
তিনি একটি ঘটনার উদাহরণ টেনে বলেন, সকালে এক ব্যক্তির কাছে একটি নির্দিষ্ট দলের মনোনয়নের জন্য ২০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করা হয়েছে। পাটওয়ারী স্পষ্ট বলেন, “জামায়াতে ইসলামীর যে ধর্মীয় ফ্যাসিবাদ, এই ফ্যাসিবাদের তো আমরা সঙ্গী হতে পারব না। আবার বিএনপির যে চাঁদাবাজি, সন্ত্রাস, এটারও সঙ্গী হতে পারব না।”
৩০০ আসনে প্রার্থী দেবে এনসিপি
এনসিপি নির্বাচনে ৩০০ আসনেই প্রার্থী দেবে বলে পুনরায় নিশ্চিত করেন নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী। তিনি বলেন, দেশের যেকোনো প্রান্তের আগ্রহী প্রার্থীরা অফিসে যোগাযোগ করলে তা বিবেচনা করা হবে। তিনি নির্বাচন কমিশনকে দ্রুততম সময়ে এনসিপির নিবন্ধন কার্যক্রম সম্পন্ন করারও আহ্বান জানান।
সিইসির সঙ্গে বৈঠকে নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারীর সঙ্গে দলের যুগ্ম আহ্বায়ক এবং পলিসি ও রিসার্চ লিড খালেদ সাইফুল্লাহ এবং যুগ্ম সদস্যসচিব জহিরুল ইসলাম মুসা উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন: ক্যাডেট কলেজ ভর্তি পরীক্ষা ২০২৬: আবেদন, সিলেবাস ও প্রস্তুতির পূর্ণাঙ্গ গাইড

মিজানুর রহমান হৃদয় 














