বাহরাইনের প্যাসিফিক অ্যাফেয়ার্স প্রধানের সঙ্গে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূতের বৈঠক, এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় সহযোগিতা জোরদারের অঙ্গীকার

0

বাহরাইনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্যাসিফিক অ্যাফেয়ার্স বিভাগের প্রধান ড. সালেহ আল-মাররির সঙ্গে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত ড. নুসরাত জাহানের আজ এক গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের দেশগুলোর সাথে বাহরাইনের কূটনৈতিক ও অর্থনৈতিক সম্পর্ক প্রসারে বাংলাদেশের ভূমিকা এবং সম্ভাব্য যৌথ প্রকল্প নিয়ে আলোচনা করা হয়।

আলোচনার মূল বিষয়

১. বাণিজ্য ও বিনিয়োগ:

  • প্রশান্ত মহাসাগরীয় দেশগুলোর (অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড, ফিজি) সাথে বাংলাদেশের পাট, ওষুধ ও আইটি সেবা রপ্তানির নতুন সুযোগ তৈরি করতে বাহরাইনের মধ্যস্থতা চাওয়া হয়েছে।
  • বাহরাইনের তেল ও গ্যাস খাতে বাংলাদেশি প্রকৌশলীদের প্রশিক্ষণ ও কর্মসংস্থানের প্রস্তাব।

২. জলবায়ু সহযোগিতা:

  • সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধি ও প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলায় প্রশান্ত মহাসাগরীয় দ্বীপরাষ্ট্রগুলোর সাথে বাংলাদেশের অভিজ্ঞতা বিনিময়।
  • বাহরাইনের অর্থায়নে সমুদ্রসম্পদ রক্ষায় যৌথ গবেষণা প্রকল্প চালুর পরিকল্পনা।

৩. সাংস্কৃতিক বিনিময়:

  • বাহরাইন-প্রশান্ত মহাসাগরীয় দেশগুলোর সাথে বাংলাদেশের লোকশিল্প, নৃত্য ও উৎসবের প্রদর্শনী আয়োজনের প্রস্তাব।
  • শিক্ষার্থী বিনিময় কর্মসূচির মাধ্যমে ভাষা ও প্রযুক্তি শেখার সুযোগ তৈরি।

রাষ্ট্রদূতের বক্তব্য

ড. নুসরাত জাহান বলেন, “বাংলাদেশ শুধু দক্ষিণ এশিয়ায় নয়, প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের সাথেও সংযোগ বাড়াতে চায়। বাহরাইনের কূটনৈতিক নেটওয়ার্ক ব্যবহার করে আমরা এই অঞ্চলে বাণিজ্য ও পরিবেশ সুরক্ষায় ভূমিকা রাখব।”

প্যাসিফিক অ্যাফেয়ার্স প্রধানের প্রতিক্রিয়া

ড. সালেহ আল-মাররি বলেন, “বাংলাদেশের টেকসই উন্নয়নের মডেল প্রশান্ত মহাসাগরীয় দেশগুলোর জন্য অনুপ্রেরণা। আমরা বাংলাদেশকে এই অঞ্চলে একটি কৌশলগত অংশীদার হিসেবে দেখতে চাই।”

কেন এই বৈঠক গুরুত্বপূর্ণ?

বাহরাইন প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের সাথে বাণিজ্য ও কূটনৈতিক সেতুবন্ধ হিসেবে কাজ করতে চায়। বাংলাদেশের মাধ্যমে দক্ষিণ এশিয়ার বাজারে প্রবেশের পাশাপাশি, প্রশান্ত মহাসাগরীয় দেশগুলোর সমুদ্রসম্পদ ব্যবস্থাপনায় বাংলাদেশের অভিজ্ঞতা কাজে লাগানো যেতে পারে।

শিশুদের জন্য সহজ ব্যাখ্যা

বাংলাদেশ ও বাহরাইন মিলে যেন দুই বন্ধু! তারা চায়, প্রশান্ত মহাসাগরের দেশগুলোর সাথেও বন্ধুত্ব গড়ে তুলতে। যেমন—বাংলাদেশের পাট দিয়ে অস্ট্রেলিয়ায় ব্যাগ বানানো, কিংবা ফিজির মানুষকে বন্যার সময় সাহায্য করা।

পরবর্তী পদক্ষেপ

  • মে মাসে বাংলাদেশ, বাহরাইন ও ফিজির মধ্যে একটি ত্রিপক্ষীয় বৈঠক হবে জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায়।
  • বাংলাদেশি পণ্যের প্রদর্শনীর জন্য বাহরাইনে “প্যাসিফিক-বাংলাদেশ ট্রেড উইক” আয়োজনের সিদ্ধান্ত।

শেষ কথা:
এই বৈঠক বাংলাদেশের বৈশ্বিক কূটনৈতিক অ্যাক্টিভিজমের নতুন দিগন্ত খুলে দিয়েছে। প্রশান্ত মহাসাগরীয় দেশগুলোর সাথে অংশীদারিত্ব বাড়লে বাংলাদেশের অর্থনীতি ও প্রভাব বৃদ্ধি পাবে বলে আশাবাদী বিশেষজ্ঞরা।

Leave A Reply

Your email address will not be published.