আগামী ৪৮ ঘণ্টায় দেশের উত্তরাঞ্চল ও মধ্যাঞ্চলে ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস দিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। ১৯ মার্চ ২০২৫ প্রকাশিত এক বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, রংপুর, রাজশাহী ও সিলেট বিভাগের কিছু এলাকায় ২০০ মিলিমিটার পর্যন্ত বৃষ্টিপাত হতে পারে, যার ফলে নদ-নদীর পানি বিপৎসীমা অতিক্রম করতে পারে।
কোথায় কতটা বৃষ্টি?
- উত্তরাঞ্চল (রংপুর, কুড়িগ্রাম):১৮০-২০০ মিলিমিটার
- মধ্যাঞ্চল (ঢাকা, ময়মনসিংহ):১০০-১৫০ মিলিমিটার
- চট্টগ্রামের পাহাড়ি এলাকা:১২০-১৬০ মিলিমিটার
আবহাওয়া অধিদপ্তরের পরিচালক ড. সামিনা ইয়াসমিন বলেন,
“বৃষ্টির সাথে সাথে ঘণ্টায় ৬০-৭০ কিলোমিটার গতিবেগে ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে। নদীর তীরবর্তী ও পাহাড়ি এলাকার বাসিন্দাদের বিশেষ সতর্ক থাকতে হবে।”
বন্যা ও পাহাড়ধসের শঙ্কা
- উত্তরাঞ্চলে:তিস্তা, ধরলা ও ব্রহ্মপুত্র নদে পানি ১-১.৫ মিটার উপরে উঠতে পারে।
- পাহাড়ি এলাকায়:চট্টগ্রাম ও বান্দরবানের কিছু অংশে মাটিধসের আশঙ্কা।
- সম্ভাব্য ক্ষয়ক্ষতি:আমন চাষের জমি ডুবতে পারে, শহরে জলাবদ্ধতা বাড়বে।
সরকারি প্রস্তুতি
- জরুরি সেবা:ফায়ার সার্ভিস ও সেনাবাহিনীর ৫০টি টিম প্রস্তুত রাখা হয়েছে।
- নদী তীরবর্তী এলাকায়:৫০০টি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে।
- স্বাস্থ্য বিভাগ:ডায়রিয়া ও পানিবাহিত রোগের ওষুধ মজুদ করা হয়েছে।
জনসাধারণের জন্য পরামর্শ
১. নদীর কাছে যাবেন না: শিশুদের নদী বা খাল থেকে দূরে রাখুন।
২. বজ্রপাত থেকে সতর্কতা: উঁচু গাছ বা বিদ্যুতের খুঁটির নিচে দাঁড়াবেন না।
৩. জরুরি প্রস্তুতি: শুকনো খাবার, টর্চলাইট ও ফার্স্ট এইড বক্স প্রস্তুত রাখুন।
কৃষকদের জন্য বিশেষ নির্দেশনা
- ফসল রক্ষা:ধানের ক্ষেত থেকে পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা করুন।
- বীজ সংরক্ষণ:বৃষ্টির পানি যেন বীজের গুদামে ঢুকতে না পারে, তা নিশ্চিত করুন।
শহরবাসীর প্রতিক্রিয়া
ঢাকার গুলশান বাসিন্দা রনি আহমেদ বলেন,
“প্রতিবারের মতো এবারও রাস্তায় পানি জমলে অফিস যাওয়া কঠিন হবে। জলাবদ্ধতা রোধে সিটি কর্পোরেশনকে আগেভাগেই নালা পরিষ্কার করা উচিত।”
রংপুরের কৃষক জাহাঙ্গীর আলমের কথায়,
“আমনের ক্ষেত ডুবে গেলে বছরের শ্রম মাটি হয়ে যাবে। সরকার যদি জলনিকাশের ব্যবস্থা করে, তাহলে কিছুটা স্বস্তি পাব।”
শেষ কথা
এই বৃষ্টি ফসলের জন্য আশীর্বাদ হলেও প্রাকৃতিক দুর্যোগের ঝুঁকি বাড়াচ্ছে। আবহাওয়া অধিদপ্তরের সতর্কবার্তা মেনে সচেতনতাই পারে ক্ষয়ক্ষতি কমাতে।
যোগাযোগ:
- আবহাওয়া হটলাইন: ১৬১০০ | ওয়েবসাইট:bmd.gov.bd
- জরুরি সেবা: ৯৯৯

মিজানুর রহমান হৃদয় 















