ঢাকা, বাংলাদেশ: বাংলাদেশ জাতীয় ফুটবল দলের জার্সি গায়ে খেলার স্বপ্ন নিয়ে দেশে ফিরেছেন দুই প্রবাসী ফুটবলার। কাতার ও মালয়েশিয়ার লিগে খেলা রিয়াদ হোসেন (২৪) এবং রাফি আহমেদ (২২) গতকাল বুধবার (৩ এপ্রিল ২০২৫) বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে ট্রায়াল ম্যাচে অংশ নিয়েছেন। বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের (বাফুফে) আমন্ত্রণে তিন দিনের এই ট্রায়ালে তাদের পারফরম্যান্স মূল্যায়ন করবেন জাতীয় দলের কোচ ও স্কাউটিং টিম।
কাদের এই দুই ফুটবলার?
- রিয়াদ হোসেন:কাতারের দ্বিতীয় বিভাগের ক্লাব আল-শামালের মিডফিল্ডার। গত মৌসুমে ৮ গোল ও ১২ অ্যাসিস্টের রেকর্ড গড়েছেন। জন্ম নরসিংদীতে, তবে ১২ বছর বয়স থেকে কাতারে ফুটবল শিখেছেন।
- রাফি আহমেদ:মালয়েশিয়ার কেডাহ ডারুল আমান ক্লাবের ডিফেন্ডার। ২০২৩ সালে মালয়েশিয়া অনূর্ধ্ব-২০ লিগে সেরা রুকি নির্বাচিত হয়েছিলেন। পরিবার চট্টগ্রামের, কিন্তু পড়াশোনার জন্য মালয়েশিয়ায় থাকেন।
“স্বপ্ন পূরণের লড়াই”: রিয়াদ ও রাফির অনুভূতি
ট্রায়ালের পর রিয়াদ বলেন, “বাবা-মায়ের মুখ উজ্জ্বল করতে চাই। কাতারে অনেক সংগ্রাম করেছি, এখন দেশের জন্য খেলব—এটাই জীবনের লক্ষ্য।”
রাফি যোগ করেন, “মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশি কমিউনিটি আমাকে অনুপ্রাণিত করে। ট্রায়ালে সর্বোচ্চ দেওয়ার চেষ্টা করব।”
কোচের মূল্যায়ন:
জাতীয় দলের কোচ হাভিয়ের ক্যাবেরা বলেন, “দুই খেলোয়াড়ের ফিটনেস ও টেকনিক ভালো। তবে বাংলাদেশের গেম স্টাইলের সাথে খাপ খাইয়ে নেওয়াটাই বড় চ্যালেঞ্জ।”
কেন এই ট্রায়াল?
বাফুফে সূত্রে জানা গেছে, প্রবাসী তরুণদের দক্ষতা কাজে লাগিয়ে জাতীয় দলকে শক্তিশালী করতে এই উদ্যোগ। গত বছর জাপান থেকে ডিফেন্ডার সাকিব আলমকে ডাকার পর থেকেই বিদেশে থাকা বাংলাদেশি ফুটবলারদের খোঁজ শুরু করেছে সংস্থাটি।
পরিবারের প্রতিক্রিয়া:
রিয়াদের বাবা নরসিংদীর কৃষক জাহাঙ্গীর মিয়া বলেন, “ছেলেকে জাতীয় দলে দেখলে গর্বে বুক ফেটে যাবে। গ্রামের সবাই তার জন্য দোয়া করছে।”
পরবর্তী ধাপ:
ট্রায়াল সফল হলে আগামী মে মাসে ফিলিপাইনের বিপক্ষে ফ্রেন্ডলি ম্যাচের জন্য ডাক পেতে পারেন রিয়াদ-রাফি। তবে বাফুফে নীতিমালা অনুযায়ী, বাংলাদেশের নাগরিকত্ব ও জন্মসনদ জমা দেওয়া বাধ্যতামূলক।
প্রবাসী ফুটবলারদের জন্য সুযোগ:
বাফুফে’র নতুন নিয়মে, বিদেশে জন্মানো বা বেড়ে ওঠা বাংলাদেশি ফুটবলাররা এখন অনলাইনে আবেদন করে ট্রায়ালের সুযোগ পাবেন। আগামী জুন থেকে “প্রবাসী ট্যালেন্ট হান্ট” নামে একটি প্রকল্প চালু করার কথাও ভাবছে সংস্থাটি।
পরিশেষে:
বাংলাদেশ ফুটবলের ইতিহাসে এটাই প্রথম কোনো প্রবাসী খেলোয়াড়ের ট্রায়াল। ক্রীড়া বিশ্লেষকরা বলছেন, বৈশ্বিক অভিজ্ঞতা সম্পন্ন খেলোয়াড় দলে এলে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে প্রতিযোগিতার মান বাড়বে।