চাঁদ দেখা যাওয়ায় সৌদি আরবসহ মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতে ১ মার্চ (শনিবার) থেকে পবিত্র রমজান মাস শুরু হচ্ছে। সৌদি সুপ্রিম কোর্টের ঘোষণা অনুযায়ী, ২৮ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যায় মক্কায় চাঁদ দেখা গেছে। ফলে শুক্রবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) শেষ রমজানের পূর্বপ্রস্তুতি হিসেবে “শাবান মাসের ৩০তম দিন” পালন করা হবে।
কীভাবে ঠিক হলো রোজার তারিখ?
ইসলামিক ক্যালেন্ডার অনুসারে নতুন মাস শুরু হয় চাঁদ দেখার মাধ্যমে। সৌদি আরবের আকাশে ২৮ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যায় রমজানের চাঁদ দেখা যায়। সৌদি সুপ্রিম কোর্টের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে:
“মক্কা, মদিনা ও রিয়াদে একাধিক স্বাধীন কমিটি চাঁদ দেখার সাক্ষ্য দিয়েছেন। তাই ১ মার্চ থেকে রোজা রাখা বাধ্যতামূলক।”
প্রথম দিনের সময়সূচি
- সেহরি:স্থানীয় সময় ভোর ৪:৪৫ মিনিট পর্যন্ত (বাংলাদেশ সময় সকাল ৭:৪৫)।
- ইফতার:সূর্যাস্তে ৬:১৭ মিনিটে (বাংলাদেশ সময় রাত ৯:১৭)।
- তারাবিহ:মক্কার মসজিদে হারামে প্রথম তারাবিহ নামাজ আদায় হবে রাত ৮:৩০ মিনিটে।
সরকারি প্রস্তুতি ও সুবিধা
- রমজান বাজার:রিয়াদ ও জেদ্দায় বিশেষ দামে খাদ্যপণ্য বিক্রির জন্য ২০০টি অস্থায়ী স্টল খোলা হয়েছে।
- মসজিদে সুবিধা:মসজিদে হারাম ও নববীতে ঠাণ্ডা পানি, খেজুর ও প্রাথমিক চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়েছে।
- কর্মঘণ্টা:সরকারি অফিস সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৩টা পর্যন্ত খুলবে।
সৌদি আরবের ইসলামিক মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ড. খালিদ আল-গামদি বলেন,
“রোজাদারদের সুবিধার জন্য আমরা ১০ হাজার স্বেচ্ছাসেবক মোতায়েন করেছি। কোনো ধরনের বিশৃঙ্খলা যেন না হয়, সেদিকেও নজর রাখা হচ্ছে।”
রোজা কী এবং কেন রাখা হয়?
রমজান মাসে মুসলিমরা সূর্যোদয় থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত খাবার-পানি না খেয়ে থাকেন। এটি ইসলামের পাঁচটি স্তম্ভের একটি। এই মাসে:
- আত্মশুদ্ধি হয়:রোজা রাখলে ধৈর্য ও সহানুভূতি বাড়ে।
- গরিবদের সাহায্য:সবাই জাকাত (দান) দেয়, যাতে গরিবরা ঈদের আনন্দ পায়।
- কুরআন অধ্যয়ন:এই মাসেই পবিত্র কুরআন নাজিল শুরু হয়েছিল।
রোজাদারদের জন্য টিপস
- সেহরিতে কী খাবেন:ফল, ওটস, ডিম ও প্রচুর পানি খান। ভাজাপোড়া এড়িয়ে চলুন।
- ইফতারে সতর্কতা:একসাথে বেশি না খেয়ে ধীরে ধীরে খান। খেজুর দিয়ে ইফতার শুরু করুন।
- শিশুদের জন্য:যারা ছোট, তারা অর্ধদিন রোজা রাখতে পারে। বাড়ির বড়দের দেখাদেখি শিখবে।
মক্কার এক রোজাদারের কথায়
মক্কার বাসিন্দা আহমেদ আল-হারবি বলেন,
“রমজান এলে পুরো শহর যেন ইবাদতের নুরে ভরে ওঠে। হারাম শরিফে তারাবিহ পড়ার অনুভূতি ভাষায় বোঝানো যায় না।”
শেষ কথা
রমজান শুধু উপবাসের মাস নয়, এটি আত্মার পরিশুদ্ধির সময়। সৌদি আরবের পবিত্র নগরীগুলোতে এই মাসের প্রস্তুতি ও উৎসাহ দেখে বোঝা যায়, কীভাবে বিশ্বজুড়ে কোটি মুসলিম একসাথে এই পবিত্র সময় উদযাপন করেন। আগামী ৩০ দিন পর ঈদুল ফিতরের চাঁদ দেখার অপেক্ষায় থাকবেন সবাই।
যোগাযোগ:
- সৌদি আরবের ইসলামিক মন্ত্রণালয়: +966 112 555 000
- রমজান সংক্রান্ত হেল্পলাইন: ৯৩৯
- সময়সূচি জানতে:haramain.info