হজ বা উমরাহ পালনের সময় তাওয়াফের পর দুই রাকাত নামাজ (তাওয়াফের নামাজ) পড়া সুন্নত। তবে সূর্যাস্তের মতো নিষিদ্ধ সময়ে এই নামাজ আদায়ের বিষয়ে অনেকেরই দ্বিধা কাজ করে। ইসলামিক স্কলারদের মতামত ও কুরআন-হাদিসের আলোকে এই প্রশ্নের জবাব জানানো হলো।
ইসলামে নামাজের নিষিদ্ধ সময়
ইসলামিক ফিকহ্ অনুযায়ী, দিনে তিনটি সময়ে নামাজ পড়া নিষিদ্ধ:
১. সূর্যোদয়ের সময় (সূর্য উঠা শুরু থেকে পুরোপুরি ওঠা পর্যন্ত)
২. সূর্য যখন ঠিক মাথার ওপরে থাকে (জোহর নামাজের আগের মুহূর্ত)
৩. সূর্যাস্তের সময় (সূর্য ডোবার শুরু থেকে পুরোপুরি অস্ত যাওয়া পর্যন্ত)।
এই সময়ে কোনো নফল নামাজ পড়া যায় না। তবে ফরজ নামাজের কাযা পড়া বা জুমার খুতবা চলাকালীন নামাজের নিয়ত থাকলে তা আদায় করা যাবে।
তাওয়াফের নামাজের হুকুম
মদিনার ইসলামিক রিসার্চ সেন্টারের স্কলার ড. খালিদ আল-রশিদ বলেন, “তাওয়াফের পরের দুই রাকাত নামাজ সুন্নত। তাই সূর্যাস্তের সময় এই নামাজ আদায় করা যাবে না। যদি তাওয়াফ শেষ করেন সূর্য ডোবার আগে, তাহলে নামাজ দ্রুত আদায় করুন। আর সূর্যাস্ত শুরু হয়ে গেলে, নামাজ মাগরিবের পর পড়বেন।”
কী করবেন যদি তাওয়াফের সময় সূর্যাস্ত হয়?
- পরিস্থিতি ১:তাওয়াফ শেষ করেছেন, কিন্তু নামাজ পড়ার আগেই সূর্য ডুবে গেছে → নামাজ মাগরিবের পর আদায় করুন।
- পরিস্থিতি ২:তাওয়াফ চলাকালীন সূর্যাস্ত শুরু হয়েছে → তাওয়াফ শেষ করুন, কিন্তু নামাজের জন্য অপেক্ষা করুন মাগরিবের পর।
স্কলারদের পরামর্শ:
- মক্কার প্রখ্যাত আলেম শেখ আহমেদ বিন হামজা বলেন,“নিষিদ্ধ সময়ে সুন্নত নামাজ পড়া থেকে বিরত থাকুন। এতে কোনো গুনাহ নেই, বরং সাওয়াব থাকবে নিয়ম মানার।”
- জরুরি ক্ষেত্রে (যেমন: হজের সময়সীমা কম থাকা) নামাজের সময় ফুরিয়ে গেলে, পরে কাযা করে নিন।
সচেতনতা:
কিছু লোকজন মনে করেন, হারাম শরিফের ভেতর সব সময় নামাজ জায়েজ। এটা ভুল ধারণা। নিষিদ্ধ সময়ে শুধু ফরজ নামাজের কাযা বা ফরজ ইবাদতই করা যায়।
সচরাচর জিজ্ঞাসা (FAQ):
প্রশ্ন: সূর্যাস্তের সময় তাওয়াফ নিজেই করা যাবে?
উত্তর: হ্যাঁ, তাওয়াফ করা যাবে। শুধু নামাজ নিষিদ্ধ সময়ের নিয়ম প্রযোজ্য।
প্রশ্ন: যদি কেউ না জেনে নিষিদ্ধ সময়ে তাওয়াফের নামাজ পড়ে ফেলেন?
উত্তর: ইচ্ছাকৃত না হলে গুনাহ হবে না, তবে পুনরায় পড়া ভালো।