ঢাকা , শনিবার, ১০ মে ২০২৫, ২৭ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শিরোনামঃ
“মডেল মেঘনা আলম কেন পুলিশ হেফাজতে? জানালেন পুলিশ কর্মকর্তা” “মুঠোফোন চেয়ে নারীর হাতে অজ্ঞান যুবক, লুট ১ লাখ টাকা” কানটুপি পরে নামাজ আদায় করা যাবে কি? ইসলাম কী বলে? ইসলামে ঐক্যের গুরুত্ব: কোরআন-হাদিসের আলোকে সমাজ গঠনের মূলমন্ত্র দাফনের পর সম্মিলিত দোয়া: ইসলামের নির্দেশনা কী? ফরজ গোসল ছাড়াই সেহরি খাওয়া যাবে? জেনে নিন ইসলামি বিধান ইস্তেখারার দোয়া দেখে পড়া যাবে কি? জেনে নিন ইসলামের নির্দেশনা কেটে ফেলা চুল-নখ কোথায় ফেলবেন? ধর্ম, সংস্কৃতি ও পরিবেশবান্ধব সমাধান সূর্যাস্তের সময় তাওয়াফের নামাজ আদায় করা যাবে? ইসলামিক স্কলারদের ব্যাখ্যা মৃত বাবা-মাকে স্বপ্নে দেখলে যা করবেন: মনোবিদ ও ধর্মীয় বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ
নোটিশঃ
সকাল হোক সত্য খবর দিয়ে । দেশ - বিদেশের সর্বশেষ খবর সবার আগে পেতে সকালের বার্তা এর সাথেই থাকুন ।

প্রাক্তন স্ত্রীর মায়ের সাথে পর্দা: ইসলাম কী বলে?

বিবাহ বিচ্ছেদের পর স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্ক ছিন্ন হলেও শ্বশুরবাড়ির সদস্যদের সাথে সম্পর্কের ইসলামী নিয়ম নিয়ে অনেকেরই দ্বিধা কাজ করে। বিশেষ করে প্রাক্তন স্ত্রীর মায়ের সাথে পর্দা (হিজাব) প্রসঙ্গে ইসলামের স্পষ্ট নির্দেশনা কী? ফিকাহবিদ ও ইসলামিক স্কলারদের মতামত নিয়ে জেনে নিন বিস্তারিত।

ইসলামী বিধান: পর্দার প্রয়োজন আছে কি?

ইসলামে মাহরাম (যাদের সাথে বিবাহ হারাম) ও র-মাহরাম (যাদের সাথে বিবাহ জায়েজ) এর পার্থক্য গুরুত্বপূর্ণ। প্রাক্তন স্ত্রীর মা সম্পর্কে বিধান:

  • বিবাহ-পূর্ব:স্ত্রীর মা ছিলেন মাহরাম (বিয়ে নিষিদ্ধ)।
  • বিবাহ বিচ্ছেদের পর:তালাকের মাধ্যমে সম্পর্ক ছেদ হলে, তিনি গৈর-মাহরাম হয়ে যান। ফলে তার সাথে পর্দা (শরীর ও সৌন্দর্য ঢাকা) বাধ্যতামূলক।

কোরআন-হাদিসের দৃষ্টিকোণ

  • সূরা নূর (আয়াত ৩১):“মুমিন নারীদের বলো, তারা যেন তাদের গোপনাঙ্গের হিফাজত করে এবং তাদের সৌন্দর্য প্রকাশ না করে, кроме того, যা স্বাভাবিকভাবে প্রকাশ হয়…”
  • হাদিস:নবীজি (সা.) বলেছেন, “স্ত্রীর মা তোমাদের জন্য হারাম (মাহরাম)।” (বুখারি: ৫০৯৯)। তবে এটি শুধু বিবাহ থাকাকালীন প্রযোজ্য। তালাকের পর সম্পর্ক ছিন্ন হলে মাহরামের মর্যাদা থাকে না।

ব্যতিক্রম: সন্তান থাকলে

যদি দম্পতির সন্তান থাকে, তাহলে প্রাক্তন শ্বশুরবাড়ির সাথে দেখা-সাক্ষাৎ জরুরি হতে পারে। এ ক্ষেত্রে:

  • পর্দা রেখে দেখা:সন্তানের বিষয়ে কথা বলতে হলে পর্দার মধ্যে থেকে আলোচনা করুন।
  • তৃতীয় ব্যক্তির উপস্থিতি:একান্ত প্রয়োজনে কোনো আত্মীয়ের উপস্থিতিতে মিটিং করুন।

ইসলামিক স্কলারদের মতামত

  • মুফতি তাকি উসমানী:“তালাকের পর প্রাক্তন স্ত্রীর মা গৈর-মাহরাম। তাই তার সাথে পর্দা করা ওয়াজিব।”
  • ইসলামিক ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ:“বিবাহ বিচ্ছেদের পর শ্বশুরবাড়ির নারীদের সাথে সম্পর্ক শরিয়তের সীমার মধ্যে রাখুন।”

সচরাচর জিজ্ঞাসা

প্রশ্ন: সন্তানের খোঁজখবর নেওয়ার জন্য ফোনে কথা বলতে পারব?
উত্তর: জরুরি প্রয়োজনে কথা বলতে পারেন, তবে অপ্রয়োজনীয় কথাবার্তা এড়িয়ে চলুন।

প্রশ্ন: প্রাক্তন শ্বশুরবাড়িতে সন্তান দেখতে গেলে কী করণীয়?
উত্তর: মহিলা সদস্যদের সাথে পর্দা রেখে সন্তানের সাথে সময় কাটান। পুরুষ আত্মীয়দের সাথে স্বাভাবিক আচরণ করা যায়।

শিশুদের বোঝার ভাষায়

প্রশ্ন: আব্বু, দাদির সাথে দেখা করতে গেলে আম্মুকে কাপড় দিয়ে ঢাকতে হবে?
উত্তর: হ্যাঁ, ইসলাম শেখায়—যাদের সাথে বিয়ে নিষিদ্ধ নয়, তাদের সামনে মা-খালাদের মতো কাপড় ঢেকে রাখতে হয়।

সামাজিক প্রেক্ষাপট ও সতর্কতা

বাংলাদেশের সমাজে প্রাক্তন পরিবারের সাথে সম্পর্ক জটিল হলেও ইসলামী বিধান মেনে চলাই উত্তম। অপ্রয়োজনে যোগাযোগ এড়িয়ে সম্মানজনক দূরত্ব বজায় রাখুন।

উপসংহার

ইসলাম সম্পর্কের সীমারেখা সুস্পষ্ট করে দিয়েছে। প্রাক্তন স্ত্রীর মায়ের সাথে পর্দা করা ঈমানী দায়িত্ব। সামাজিক বা মানসিক চাপে শরিয়তের বিধান উপেক্ষা করবেন না। মনে রাখবেন, আল্লাহর সন্তুষ্টিই সর্বোচ্চ লক্ষ্য।

আপলোডকারীর তথ্য

মিজানুর রহমান হৃদয়

মিজানুর রহমান হৃদয় বাংলাদেশের একজন তরুন লেখক, তিনি এখন পর্যন্ত ৪ টি বই প্রকাশ করেছেন । ২০১৭ থেকে ২০২৫ চলতি বছর সে বেশ কিছু পত্র - পত্রিকায় কাজ করে আসছেন । আর আমাদের সকালের বার্তা'র বিশেষ প্রতিনিধি হিসেবেও কাজ করছেন ।
জনপ্রিয় বার্তা

“মডেল মেঘনা আলম কেন পুলিশ হেফাজতে? জানালেন পুলিশ কর্মকর্তা”

প্রাক্তন স্ত্রীর মায়ের সাথে পর্দা: ইসলাম কী বলে?

আপডেট সময় ১২:৩০:০১ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১১ এপ্রিল ২০২৫

বিবাহ বিচ্ছেদের পর স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্ক ছিন্ন হলেও শ্বশুরবাড়ির সদস্যদের সাথে সম্পর্কের ইসলামী নিয়ম নিয়ে অনেকেরই দ্বিধা কাজ করে। বিশেষ করে প্রাক্তন স্ত্রীর মায়ের সাথে পর্দা (হিজাব) প্রসঙ্গে ইসলামের স্পষ্ট নির্দেশনা কী? ফিকাহবিদ ও ইসলামিক স্কলারদের মতামত নিয়ে জেনে নিন বিস্তারিত।

ইসলামী বিধান: পর্দার প্রয়োজন আছে কি?

ইসলামে মাহরাম (যাদের সাথে বিবাহ হারাম) ও র-মাহরাম (যাদের সাথে বিবাহ জায়েজ) এর পার্থক্য গুরুত্বপূর্ণ। প্রাক্তন স্ত্রীর মা সম্পর্কে বিধান:

  • বিবাহ-পূর্ব:স্ত্রীর মা ছিলেন মাহরাম (বিয়ে নিষিদ্ধ)।
  • বিবাহ বিচ্ছেদের পর:তালাকের মাধ্যমে সম্পর্ক ছেদ হলে, তিনি গৈর-মাহরাম হয়ে যান। ফলে তার সাথে পর্দা (শরীর ও সৌন্দর্য ঢাকা) বাধ্যতামূলক।

কোরআন-হাদিসের দৃষ্টিকোণ

  • সূরা নূর (আয়াত ৩১):“মুমিন নারীদের বলো, তারা যেন তাদের গোপনাঙ্গের হিফাজত করে এবং তাদের সৌন্দর্য প্রকাশ না করে, кроме того, যা স্বাভাবিকভাবে প্রকাশ হয়…”
  • হাদিস:নবীজি (সা.) বলেছেন, “স্ত্রীর মা তোমাদের জন্য হারাম (মাহরাম)।” (বুখারি: ৫০৯৯)। তবে এটি শুধু বিবাহ থাকাকালীন প্রযোজ্য। তালাকের পর সম্পর্ক ছিন্ন হলে মাহরামের মর্যাদা থাকে না।

ব্যতিক্রম: সন্তান থাকলে

যদি দম্পতির সন্তান থাকে, তাহলে প্রাক্তন শ্বশুরবাড়ির সাথে দেখা-সাক্ষাৎ জরুরি হতে পারে। এ ক্ষেত্রে:

  • পর্দা রেখে দেখা:সন্তানের বিষয়ে কথা বলতে হলে পর্দার মধ্যে থেকে আলোচনা করুন।
  • তৃতীয় ব্যক্তির উপস্থিতি:একান্ত প্রয়োজনে কোনো আত্মীয়ের উপস্থিতিতে মিটিং করুন।

ইসলামিক স্কলারদের মতামত

  • মুফতি তাকি উসমানী:“তালাকের পর প্রাক্তন স্ত্রীর মা গৈর-মাহরাম। তাই তার সাথে পর্দা করা ওয়াজিব।”
  • ইসলামিক ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ:“বিবাহ বিচ্ছেদের পর শ্বশুরবাড়ির নারীদের সাথে সম্পর্ক শরিয়তের সীমার মধ্যে রাখুন।”

সচরাচর জিজ্ঞাসা

প্রশ্ন: সন্তানের খোঁজখবর নেওয়ার জন্য ফোনে কথা বলতে পারব?
উত্তর: জরুরি প্রয়োজনে কথা বলতে পারেন, তবে অপ্রয়োজনীয় কথাবার্তা এড়িয়ে চলুন।

প্রশ্ন: প্রাক্তন শ্বশুরবাড়িতে সন্তান দেখতে গেলে কী করণীয়?
উত্তর: মহিলা সদস্যদের সাথে পর্দা রেখে সন্তানের সাথে সময় কাটান। পুরুষ আত্মীয়দের সাথে স্বাভাবিক আচরণ করা যায়।

শিশুদের বোঝার ভাষায়

প্রশ্ন: আব্বু, দাদির সাথে দেখা করতে গেলে আম্মুকে কাপড় দিয়ে ঢাকতে হবে?
উত্তর: হ্যাঁ, ইসলাম শেখায়—যাদের সাথে বিয়ে নিষিদ্ধ নয়, তাদের সামনে মা-খালাদের মতো কাপড় ঢেকে রাখতে হয়।

সামাজিক প্রেক্ষাপট ও সতর্কতা

বাংলাদেশের সমাজে প্রাক্তন পরিবারের সাথে সম্পর্ক জটিল হলেও ইসলামী বিধান মেনে চলাই উত্তম। অপ্রয়োজনে যোগাযোগ এড়িয়ে সম্মানজনক দূরত্ব বজায় রাখুন।

উপসংহার

ইসলাম সম্পর্কের সীমারেখা সুস্পষ্ট করে দিয়েছে। প্রাক্তন স্ত্রীর মায়ের সাথে পর্দা করা ঈমানী দায়িত্ব। সামাজিক বা মানসিক চাপে শরিয়তের বিধান উপেক্ষা করবেন না। মনে রাখবেন, আল্লাহর সন্তুষ্টিই সর্বোচ্চ লক্ষ্য।