ঢাকা , শনিবার, ১০ মে ২০২৫, ২৭ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শিরোনামঃ
“মডেল মেঘনা আলম কেন পুলিশ হেফাজতে? জানালেন পুলিশ কর্মকর্তা” “মুঠোফোন চেয়ে নারীর হাতে অজ্ঞান যুবক, লুট ১ লাখ টাকা” কানটুপি পরে নামাজ আদায় করা যাবে কি? ইসলাম কী বলে? ইসলামে ঐক্যের গুরুত্ব: কোরআন-হাদিসের আলোকে সমাজ গঠনের মূলমন্ত্র দাফনের পর সম্মিলিত দোয়া: ইসলামের নির্দেশনা কী? ফরজ গোসল ছাড়াই সেহরি খাওয়া যাবে? জেনে নিন ইসলামি বিধান ইস্তেখারার দোয়া দেখে পড়া যাবে কি? জেনে নিন ইসলামের নির্দেশনা কেটে ফেলা চুল-নখ কোথায় ফেলবেন? ধর্ম, সংস্কৃতি ও পরিবেশবান্ধব সমাধান সূর্যাস্তের সময় তাওয়াফের নামাজ আদায় করা যাবে? ইসলামিক স্কলারদের ব্যাখ্যা মৃত বাবা-মাকে স্বপ্নে দেখলে যা করবেন: মনোবিদ ও ধর্মীয় বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ
নোটিশঃ
সকাল হোক সত্য খবর দিয়ে । দেশ - বিদেশের সর্বশেষ খবর সবার আগে পেতে সকালের বার্তা এর সাথেই থাকুন ।

কানটুপি পরে নামাজ আদায় করা যাবে কি? ইসলাম কী বলে?

সামাজিক যোগাযোগ বা গান শোনার পাশাপাশি অনেকেই কানটুপি (ইয়ারফোন/হেডফোন) ব্যবহার করেন। কিন্তু নামাজের সময় কানটুপি ব্যবহার করা কি ইসলামে বৈধ? এই প্রশ্নের সমাধান জানতে কোরআন-হাদিস ও ইসলামিক স্কলারদের মতামত নিয়ে তৈরি হয়েছে এই প্রতিবেদন।

ইসলামী দৃষ্টিকোণ: নামাজে কানটুপি ব্যবহারের বিধান

নামাজের সময় কানটুপি ব্যবহারের বিষয়ে ইসলামের মূলনীতি হলো—নামাজের মনোযোগ শর্ত পূরণ। বিশ্লেষণ:

  • শরীরের আওরা ঢাকা:পুরুষের জন্য কান ঢাকা জরুরি নয়, তাই কানটুপি পরলে আওরা নষ্ট হয় না। তবে মহিলাদের ক্ষেত্রে সম্পূর্ণ শরীর ঢাকতে হয়।
  • মনোযোগ বিঘ্নিত হওয়া:নামাজে কানটুপি দিয়ে গান শুনলে বা কল রিসিভ করলে মনোযোগ নষ্ট হয়, যা নামাজের পরিপন্থী।
  • প্রয়োজনে ব্যবহার:শ্রবণপ্রতিবন্ধী ব্যক্তি যদি হিয়ারিং এইড ব্যবহার করেন, তা জায়েজ।

ইসলামিক স্কলারদের মতামত

  • মুফতি তাকি উসমানী:“নামাজের সময় কানটুপি ব্যবহার না করাই উত্তম। তবে অত্যন্ত প্রয়োজনে (যেমন: কোরআনের তেলাওয়াত শোনা) সংক্ষিপ্ত সময়ের জন্য ব্যবহার করা যেতে পারে, যদি তা নামাজের খুশু-খুজু নষ্ট না করে।”
  • ইসলামিক ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ:“নামাজে বাহ্যিক কোনো যন্ত্র ব্যবহার না করাই শরিয়তসম্মত। বিশেষ প্রয়োজনে স্থানীয় আলেমের পরামর্শ নিন।”

কখন ব্যবহার করা যেতে পারে?

১. হিয়ারিং এইড: শ্রবণশক্তি কম থাকলে চিকিৎসকের পরামর্শে ব্যবহার করা যায়।
২. একাকী নামাজ: বাড়িতে একা নামাজ পড়ার সময় কোরআন তেলাওয়াত শোনার জন্য সংক্ষিপ্ত ব্যবহার।
৩. এজেন্ডা রিমাইন্ডার: অসুস্থতা বা ভুলে যাওয়ার প্রবণতা থাকলে নামাজের সময়সূচি মনে করিয়ে দেওয়ার জন্য ভাইব্রেশন মোডে ব্যবহার।

যে ক্ষেত্রে ব্যবহার নিষেধ

  • জামাতের নামাজ:ইমামের কিরাত শুনতে বাধা দেয়।
  • সামাজিক মাধ্যম/গান:নামাজের সময় গান বা নোটিফিকেশন শোনা গুনাহের কাজ।
  • অনাবশ্যক ব্যবহার:ফ্যাশন বা অভ্যাসবশত ব্যবহার করা অনুচিত।

বিকল্প পদ্ধতি

  • নামাজের আগে ফোন বন্ধ করুন:নামাজের সময়টুকু সম্পূর্ণ আল্লাহর জন্য উৎসর্গ করুন।
  • শান্ত পরিবেশ বেছে নিন:যেখানে বাহ্যিক শব্দ কম, সেখানে নামাজ পড়ুন।
  • ধৈর্য্য শিক্ষা:নামাজের মাধ্যমে আত্মিক প্রশান্তি লাভের চেষ্টা করুন।

শিশুদের বোঝার ভাষায়

প্রশ্ন: নামাজ পড়ার সময় কি হেডফোন পরা যাবে?
উত্তর: না, কারণ নামাজে কানে আল্লাহর কথা শুনতে হয়! হেডফোন পরে গান শুনলে মনোযোগ যায়।

সচরাচর জিজ্ঞাসা

প্রশ্ন: কানে এয়ারফোন লাগিয়ে কোরআন শুনে নামাজ পড়া যাবে?
উত্তর: না, নামাজের সময় কোরআন তেলাওয়াত নিজে পড়তে হয়। শোনা নামাজের অংশ নয়।

প্রশ্ন: শ্রবণপ্রতিবন্ধী ব্যক্তি কি হিয়ারিং এইড ব্যবহার করতে পারবেন?
উত্তর: হ্যাঁ, এটি প্রয়োজনের অধীনে জায়েজ।

উপসংহার

নামাজ হলো আল্লাহর সাথে সাক্ষাতের মুহূর্ত। এ সময় বাহ্যিক যন্ত্রের ব্যবহার এড়িয়ে মনোযোগ বাড়ানোই ঈমানদারের কর্তব্য। বিশেষ প্রয়োজনে ব্যবহার করলে নিষ্ঠার সাথে নামাজ আদায় করুন এবং স্থানীয় আলেমের সাথে পরামর্শ নিন।

আপলোডকারীর তথ্য

মিজানুর রহমান হৃদয়

মিজানুর রহমান হৃদয় বাংলাদেশের একজন তরুন লেখক, তিনি এখন পর্যন্ত ৪ টি বই প্রকাশ করেছেন । ২০১৭ থেকে ২০২৫ চলতি বছর সে বেশ কিছু পত্র - পত্রিকায় কাজ করে আসছেন । আর আমাদের সকালের বার্তা'র বিশেষ প্রতিনিধি হিসেবেও কাজ করছেন ।
জনপ্রিয় বার্তা

“মডেল মেঘনা আলম কেন পুলিশ হেফাজতে? জানালেন পুলিশ কর্মকর্তা”

কানটুপি পরে নামাজ আদায় করা যাবে কি? ইসলাম কী বলে?

আপডেট সময় ০৫:৩৬:৪৪ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১১ এপ্রিল ২০২৫

সামাজিক যোগাযোগ বা গান শোনার পাশাপাশি অনেকেই কানটুপি (ইয়ারফোন/হেডফোন) ব্যবহার করেন। কিন্তু নামাজের সময় কানটুপি ব্যবহার করা কি ইসলামে বৈধ? এই প্রশ্নের সমাধান জানতে কোরআন-হাদিস ও ইসলামিক স্কলারদের মতামত নিয়ে তৈরি হয়েছে এই প্রতিবেদন।

ইসলামী দৃষ্টিকোণ: নামাজে কানটুপি ব্যবহারের বিধান

নামাজের সময় কানটুপি ব্যবহারের বিষয়ে ইসলামের মূলনীতি হলো—নামাজের মনোযোগ শর্ত পূরণ। বিশ্লেষণ:

  • শরীরের আওরা ঢাকা:পুরুষের জন্য কান ঢাকা জরুরি নয়, তাই কানটুপি পরলে আওরা নষ্ট হয় না। তবে মহিলাদের ক্ষেত্রে সম্পূর্ণ শরীর ঢাকতে হয়।
  • মনোযোগ বিঘ্নিত হওয়া:নামাজে কানটুপি দিয়ে গান শুনলে বা কল রিসিভ করলে মনোযোগ নষ্ট হয়, যা নামাজের পরিপন্থী।
  • প্রয়োজনে ব্যবহার:শ্রবণপ্রতিবন্ধী ব্যক্তি যদি হিয়ারিং এইড ব্যবহার করেন, তা জায়েজ।

ইসলামিক স্কলারদের মতামত

  • মুফতি তাকি উসমানী:“নামাজের সময় কানটুপি ব্যবহার না করাই উত্তম। তবে অত্যন্ত প্রয়োজনে (যেমন: কোরআনের তেলাওয়াত শোনা) সংক্ষিপ্ত সময়ের জন্য ব্যবহার করা যেতে পারে, যদি তা নামাজের খুশু-খুজু নষ্ট না করে।”
  • ইসলামিক ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ:“নামাজে বাহ্যিক কোনো যন্ত্র ব্যবহার না করাই শরিয়তসম্মত। বিশেষ প্রয়োজনে স্থানীয় আলেমের পরামর্শ নিন।”

কখন ব্যবহার করা যেতে পারে?

১. হিয়ারিং এইড: শ্রবণশক্তি কম থাকলে চিকিৎসকের পরামর্শে ব্যবহার করা যায়।
২. একাকী নামাজ: বাড়িতে একা নামাজ পড়ার সময় কোরআন তেলাওয়াত শোনার জন্য সংক্ষিপ্ত ব্যবহার।
৩. এজেন্ডা রিমাইন্ডার: অসুস্থতা বা ভুলে যাওয়ার প্রবণতা থাকলে নামাজের সময়সূচি মনে করিয়ে দেওয়ার জন্য ভাইব্রেশন মোডে ব্যবহার।

যে ক্ষেত্রে ব্যবহার নিষেধ

  • জামাতের নামাজ:ইমামের কিরাত শুনতে বাধা দেয়।
  • সামাজিক মাধ্যম/গান:নামাজের সময় গান বা নোটিফিকেশন শোনা গুনাহের কাজ।
  • অনাবশ্যক ব্যবহার:ফ্যাশন বা অভ্যাসবশত ব্যবহার করা অনুচিত।

বিকল্প পদ্ধতি

  • নামাজের আগে ফোন বন্ধ করুন:নামাজের সময়টুকু সম্পূর্ণ আল্লাহর জন্য উৎসর্গ করুন।
  • শান্ত পরিবেশ বেছে নিন:যেখানে বাহ্যিক শব্দ কম, সেখানে নামাজ পড়ুন।
  • ধৈর্য্য শিক্ষা:নামাজের মাধ্যমে আত্মিক প্রশান্তি লাভের চেষ্টা করুন।

শিশুদের বোঝার ভাষায়

প্রশ্ন: নামাজ পড়ার সময় কি হেডফোন পরা যাবে?
উত্তর: না, কারণ নামাজে কানে আল্লাহর কথা শুনতে হয়! হেডফোন পরে গান শুনলে মনোযোগ যায়।

সচরাচর জিজ্ঞাসা

প্রশ্ন: কানে এয়ারফোন লাগিয়ে কোরআন শুনে নামাজ পড়া যাবে?
উত্তর: না, নামাজের সময় কোরআন তেলাওয়াত নিজে পড়তে হয়। শোনা নামাজের অংশ নয়।

প্রশ্ন: শ্রবণপ্রতিবন্ধী ব্যক্তি কি হিয়ারিং এইড ব্যবহার করতে পারবেন?
উত্তর: হ্যাঁ, এটি প্রয়োজনের অধীনে জায়েজ।

উপসংহার

নামাজ হলো আল্লাহর সাথে সাক্ষাতের মুহূর্ত। এ সময় বাহ্যিক যন্ত্রের ব্যবহার এড়িয়ে মনোযোগ বাড়ানোই ঈমানদারের কর্তব্য। বিশেষ প্রয়োজনে ব্যবহার করলে নিষ্ঠার সাথে নামাজ আদায় করুন এবং স্থানীয় আলেমের সাথে পরামর্শ নিন।