মাসকাট, ওমান: সৌদি আরবের প্রতিবেশী দেশ ওমানে পবিত্র রমজান মাসের ৩০টি রোজা পালনের পর ৩১ মার্চ (সোমবার) ঈদুল ফিতর উদযাপনের ঘোষণা দিয়েছে দেশটির জাতীয় চাঁদ দেখা কমিটি। শনিবার (৩০ মার্চ ২০২৫) সন্ধ্যায় আকাশে রমজানের চাঁদ না দেখা গেলে রোববার (৩০ মার্চ) ৩০তম রোজা রাখার মধ্য দিয়ে ঈদের দিন চূড়ান্ত হয়।
কী কী ঘোষণা করা হয়েছে?
ওমানের ধর্ম মন্ত্রণালয় ও হিলাল কমিটির যৌথ সিদ্ধান্তে জানানো হয়েছে:
১. ঈদের তারিখ: ৩১ মার্চ (সোমবার) সারা দেশে ঈদুল ফিতর পালিত হবে।
২. ছুটির সময়সীমা: সরকারি-বেসরকারি সকল প্রতিষ্ঠান ৩০ মার্চ থেকে ২ এপ্রিল পর্যন্ত বন্ধ থাকবে।
৩. ঈদের নামাজের সময়: প্রধান মসজিদগুলোতে সকাল ৬:৩০ টায় নামাজের আয়োজন করা হবে।
“ঈদে সকলের মাঝে সম্প্রীতি ছড়াক”: প্রধান মুফতি
ওমানের প্রধান মুফতি শেখ খালিদ আল-মাহরুয়ি বলেন, “রমজানের শেষ দিনে ক্ষমা, ভ্রাতৃত্ব ও সহযোগিতার শিক্ষা আমাদের জীবনে বাস্তবায়ন করাই ঈদের প্রকৃত উদ্দেশ্য। প্রবাসীরা যেন এই উৎসবকে সুন্দরভাবে উদযাপন করতে পারেন, সে জন্য সব ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।”
প্রবাসীদের জন্য সুখবর:
- ঈদের বিশেষ ট্রান্সপোর্ট:ঈদের দিন সকাল ৫:০০ টা থেকে ১০:০০ টা পর্যন্ত সরকারি বাসে বিনামূল্যে যাতায়াতের সুযোগ।
- বাংলাদেশি কমিউনিটির আয়োজন:মাসকাটের আল-মাবেল্লা পার্কে ৩১ মার্চ সন্ধ্যায় আয়োজন করা হবে “ঈদ মিলনী”। থাকবে বাংলাদেশি ঐতিহ্যবাহী পিঠা, সেমাই ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।
চাঁদ দেখা প্রক্রিয়া:
৩০ মার্চ সন্ধ্যায় ওমানের বিভিন্ন এলাকায় ১৫টি বিশেষ টিম চাঁদ পর্যবেক্ষণ করে। আকাশ পরিষ্কার থাকায় সন্ধ্যা ৭:১৫ টায় মাসকাটের আল-আমিরাত অঞ্চল থেকে চাঁদ দেখা যাওয়ার খবর নিশ্চিত করে হিলাল কমিটি।
কী বলছেন প্রবাসীরা?
মাসকাটের একটি হাসপাতালে কর্মরত বাংলাদেশি নাসরিন আক্তার বলেন, “৩০টি রোজা রাখার পর ঈদ পেলে আনন্দই আলাদা! এবার পরিবারের সাথে ভিডিও কল করে কোলাকুলি করব।”
দোকান-বাজার ও নিরাপত্তা:
- শপিং মল:ঈদের আগের রাত (৩০ মার্চ) পর্যন্ত খোলা থাকবে দোকানপাট। ঈদের দিন বিকেল ৩:০০ টায় খুলবে মলগুলো।
- নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছে:মসজিদ ও পার্কে পুলিশের পাশাপাশি স্বেচ্ছাসেবকদের টিম মোতায়েন করা হয়েছে।
আবহাওয়ার পূর্বাভাস:
ঈদের দিন সর্বোচ্চ তাপমাত্রা থাকবে ৩৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। ধুলিঝড়ের সম্ভাবনা থাকায় বাইরে বের হলে মাস্ক ব্যবহারের পরামর্শ দিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
পরিশেষে:
ওমানে বসবাসরত প্রায় ৮ লাখ প্রবাসীর জন্য ঈদুল ফিতর মানে শুধু ধর্মীয় উৎসব নয়, একইসাথে মাতৃভূমির স্মৃতিকে ধরে রাখারও মাধ্যম। বাংলাদেশ দূতাবাস জানিয়েছে, ঈদের পর প্রবাসী তরুণদের জন্য “স্কিল ডেভেলপমেন্ট ওয়ার্কশপ” আয়োজন করা হবে।