মাসকাট, ওমান: জাতির গৌরবের দিন ২৬ মার্চ, মহান স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে ওমানে অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাস ও প্রবাসী কমিউনিটির যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত হয়েছে নানা অনুষ্ঠান। দিনভর পতাকা উত্তোলন, সাংস্কৃতিক পরিবেশনা, আলোচনা সভা ও শিশুদের চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতার মধ্য দিয়ে দিনটি উদযাপন করেন প্রবাসী বাংলাদেশিরা।
কী কী আয়োজন ছিল?
দূতাবাস সূত্রে জানা গেছে:
১. পতাকা উত্তোলন: ভোরে দূতাবাস প্রাঙ্গণে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত ড. নুসরাত জাহান। এ সময় জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশন করেন স্থানীয় স্কুলের শিক্ষার্থীরা।
২. আলোচনা সভা: “মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও নতুন প্রজন্ম” শীর্ষক আলোচনায় বক্তারা ১৯৭১ সালের গৌরবগাথা ও বর্তমান প্রজন্মের দায়িত্ব নিয়ে কথা বলেন।
৩. সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান: ওমানের বাংলাদেশি শিল্পীরা পরিবেশন করেন দেশের গান, নৃত্য ও কবিতা। বিশেষ আকর্ষণ ছিল শিশুদের নিয়ে ম্যুরাল আঁকা প্রতিযোগিতা।
“ওমানে বাংলাদেশের মুখ উজ্জ্বল করছেন প্রবাসীরা”: রাষ্ট্রদূত
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে ড. নুসরাত জাহান বলেন, “ওমানে আপনাদের সততা, পরিশ্রম ও মেধা বাংলাদেশের সম্মান বৃদ্ধি করছে। স্বাধীনতা দিবসে এই অর্জনগুলোই আমাদের প্রকৃত শ্রদ্ধা নিবেদনের মাধ্যম।”
তিনি আরও যোগ করেন, “ওমান সরকারের সহযোগিতায় এখানে বাংলাদেশি কমিউনিটির সুযোগ-সুবিধা বাড়ানোর চেষ্টা চলছে।”
ওমানি অতিথিদের অংশগ্রহণ:
ওমানের সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধি সালিম আল-রাহমানি বলেন, “বাংলাদেশের সংস্কৃতি বিশ্বে অনন্য। স্বাধীনতা দিবসের এই আয়োজন দুই দেশের বন্ধুত্বকে আরও শক্তিশালী করবে।”
প্রবাসীদের আবেগ:
মাসকাটের একটি রেস্তোরাঁর মালিক প্রবাসী ফারহানা আক্তার বলেন, “দূতাবাসের অনুষ্ঠানে দেশের গান শুনে চোখে পানি চলে এসেছিল। মা-বাবার সাথে ভিডিও কল করে ছবিগুলো দেখিয়েছি, তারা খুব খুশি।”
শিশুদের অংশগ্রহণ:
দিনের সবচেয়ে রঙিন অংশ ছিল শিশু-কিশোরদের জন্য আয়োজন। ১০ থেকে ১৫ বছর বয়সী ৫০ জন শিশু “স্বাধীন বাংলাদেশের স্বপ্ন” শীর্ষক চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতায় অংশ নেয়। বিজয়ী শিশু সারাহ ইসলাম (১২) বলে, “আমি আঁকলাম সবুজ মাঠ, লাল সূর্য আর বাবা-মায়ের হাসি।”
সামাজিক মাধ্যমে ছড়ালো উত্তাপ:
#OmanEJoyBangladesh ও #স্বাধীনতা৫৪ হ্যাশট্যাগে দূতাবাসের অনুষ্ঠানের ছবি-ভিডিও শেয়ার করেন শতাধিক প্রবাসী। ফেসবুক লাইভে এই আয়োজন দেখেছেন প্রায় ৫ হাজার দর্শক।
পরিশেষে:
স্বাধীনতা দিবসের এই আয়োজন শুধু আনুষ্ঠানিকতাই নয়, প্রবাসী প্রজন্মের মাঝে দেশপ্রেমের বীজ বপনেরও মাধ্যম ছিল। দূতাবাস জানিয়েছে, এপ্রিল মাসে মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক ডকুমেন্টারি প্রদর্শনী ও প্রবাসী তরুণদের জন্য সেমিনারের পরিকল্পনা করা হচ্ছে।