দেশের চালের চাহিদা মেটাতে ভার্টি ও হান্ডিম্যাক্স নামের দুটি বিদেশি জাহাজ চট্টগ্রাম বন্দরে ভিড়েছে। ১৭ মার্চ ২০২৫ সকালে বন্দর কর্তৃপক্ষ নিশ্চিত করেছে, এই জাহাজ দুটিতে মোট ৩৫ হাজার মেট্রিক টন চাল আমদানি করা হয়েছে। এর মধ্যে ২০ হাজার মেট্রিক টন চাল এসেছে ভিয়েতনাম থেকে, বাকি ১৫ হাজার মেট্রিক টন মিয়ানমার থেকে। বাজারে চালের দাম স্থিতিশীল রাখতেই এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
জাহাজ ও চালের বিস্তারিত
- জাহাজের নাম:এমভি ভার্টি (ভিয়েতনামি), এমভি হান্ডিম্যাক্স (মিয়ানমার)।
- চালের ধরন:ভিয়েতনাম থেকে নন-বাসমতি, মিয়ানমার থেকে ব্রি-২৮ জাত।
- খরচ:প্রতি মেট্রিক টন চালের দাম গড়ে ৫০০ ডলার (প্রায় ৫৫ হাজার টাকা)।
চট্টগ্রাম বন্দরের চেয়ারম্যান রিয়ার এডমিরাল মো. শাহজাহান বলেন,
“এই চাল দ্রুত বন্দর থেকে উত্তোলন করে সারা দেশে পাঠানো হবে। গত সপ্তাহের তুলনায় চাল আমদানি ৩০% বেড়েছে, যা বাজারে ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে।”
কেন এই আমদানি?
গত ফেব্রুয়ারিতে বন্যা ও ফসলের ক্ষয়ক্ষতির কারণে দেশে চালের সংকট দেখা দিয়েছিল। প্রতি কেজি চালের দাম বেড়ে দাঁড়িয়েছিল ৭০-৮০ টাকা। সরকারি তথ্য অনুযায়ী, মার্চের মধ্যে ১ লাখ মেট্রিক টন চাল আমদানির লক্ষ্য ঠিক করা হয়েছে।
বাজারে কী প্রভাব পড়বে?
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় আশা করছে, এই চাল বাজারে আসার পর:
- দাম কমবে:প্রতি কেজি চাল ৫-১০ টাকা কমতে পারে।
- সরবরাহ বাড়বে:এপ্রিলের মধ্যে ৫০ হাজার মেট্রিক টন চাল মজুদ থাকবে।
পরবর্তী পদক্ষেপ
- আরও জাহাজ আসছে:মার্চের শেষ সপ্তাহে ভারত ও থাইল্যান্ড থেকে আরও ৪টি জাহাজে ৬০ হাজার মেট্রিক টন চাল আসবে।
- মজুদ বাড়ানো:দেশের ৫০টি সাইলোতে অতিরিক্ত চাল সংরক্ষণের ব্যবস্থা করা হয়েছে।
স্থানীয় চাষি ও বিক্রেতাদের প্রতিক্রিয়া
কুমিল্লার চাষি আব্দুল মজিদ বলেন,
“আমদানি চাল বাড়লে আমাদের উৎপাদিত চালের দাম কমে যাবে। তবে সরকার যদি আমাদের সহায়তা করে, তাহলে পরের মৌসুমে বেশি ফসল ফলাব।”
ঢাকার কাওরান বাজারের বিক্রেতা রফিকুল ইসলাম বলেন,
“গ্রাহকরা এখন দাম কমার আশায় কম কিনছেন। নতুন চাল বাজারে এলে বিক্রি বাড়বে।”
শেষ কথা
চালের যোগান বাড়লে সাধারণ মানুষের পাশাপাশি সরকারের সুনামও বাড়বে। তবে দীর্ঘমেয়াদি সমাধানের জন্য স্থানীয় কৃষকদের সহায়তা ও জলবায়ু সহনশীল ফসল উৎপাদনের দিকেও নজর দেওয়া জরুরি।
যোগাযোগ:
- চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ: ০৩১-৬৩৩৩৩ | ওয়েবসাইট:cpa.gov.bd
- বাণিজ্য মন্ত্রণালয়: ০২-৫৫০০০০৫৫