“যারা একদিন এই দেশ গড়ার স্বপ্ন দেখেছিলেন, তাদের অবদান ইতিহাসের পাতায় সোনার হরফে লেখা থাকবে,” — বাংলাদেশের উন্নয়নে প্রবীণ নাগরিকদের ভূমিকা স্মরণ করে এই কথাগুলো বলেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। ২২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ঢাকার একটি প্রবীণ নাগরিক সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি তরুণ প্রজন্মকে দেশ গড়ায় প্রবীণদের অভিজ্ঞতা কাজে লাগানোর আহ্বান জানান।
কী বললেন মির্জা ফখরুল?
- অবদানের স্বীকৃতি:“মুক্তিযুদ্ধ থেকে শুরু করে শিক্ষা, চিকিৎসা, কৃষি—প্রতিটি ক্ষেত্রে প্রবীণরা রক্ত-ঘাম ঢেলে কাজ করেছেন। তাদের জ্ঞান নতুন প্রজন্মের জন্য সম্পদ।”
- নীতিনির্ধারণে অংশগ্রহণ:“প্রবীণদের পরামর্শ ছাড়া জাতীয় নীতি প্রণয়ন অসম্পূর্ণ। তাদের জন্য সম্মানজনক পেনশন ও স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে হবে।”
- তরুণদের প্রতি বার্তা:“দাদা-নানার গল্প শুনুন। তাদের জীবনের সংগ্রাম থেকে শিখুন।”
প্রবীণদের জন্য কী করা হচ্ছে?
সরকারি ও বেসরকারি পর্যায়ে চলছে নানা উদ্যোগ:
১. সামাজিক সুরক্ষা: মাসে ১,০০০ টাকা হারে বৃদ্ধ ভাতা দেওয়া হচ্ছে ৬৫ বছর以上的 ব্যক্তিদের।
২. স্বাস্থ্যসেবা: ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চালু হয়েছে প্রবীণদের জন্য বিশেষ ওয়ার্ড।
৩. সাংস্কৃতিক কর্মসূচি: “প্রবীণ মেলা” আয়োজনে তাদের শিল্প, গান ও সাহিত্য তুলে ধরা হয়।
প্রবীণদের কণ্ঠে কী প্রতিক্রিয়া?
মুক্তিযোদ্ধা ও সাবেক শিক্ষক আব্দুল মান্নান (৭৮) বলেন,
“আমরা যখন যুবক ছিলাম, তখন রাস্তা-হাসপাতাল গড়েছি। আজ আমাদের কথা শুনলে ভালো হত। মির্জা ফখরুলের বক্তব্য আশা জাগায়।”
রাজশাহীর কৃষক নূরজাহান বেগম (৭০) বলেন,
“কৃষিতে নতুন প্রযুক্তি এলে আমরা বুঝতে পারি না। তরুণরা যদি আমাদের সহায়তা করে, দেশের চাল উৎপাদন আরও বাড়বে।”
বিশেষজ্ঞদের মতামত
সমাজবিজ্ঞানী ড. ফারহানা আহমেদ বলেন,
“প্রবীণরা সমাজের ‘জীবন্ত গ্রন্থাগার’। তাদের অভিজ্ঞতা ডিজিটাল আর্কাইভে সংরক্ষণ করা গেলে ভবিষ্যৎ প্রজন্ম উপকৃত হবে।”
ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা
- প্রবীণ নীতিমালা ২০৩০:প্রবীণদের কর্মসংস্থান ও সামাজিক মর্যাদা বাড়াতে বিশেষ নীতি প্রণয়নের ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।
- ইন্টারজেনারেশনাল প্রোজেক্ট:স্কুল-কলেজে তরুণ ও প্রবীণদের যৌথ প্রকল্পে যুক্ত করার পরিকল্পনা।
শেষ কথা
মির্জা ফখরুলের এই বক্তব্য শুধু রাজনৈতিক বার্তা নয়, সামাজিক দায়বদ্ধতারই প্রতিফলন। প্রবীণরা যেমন অতীতের বীজ বপন করেছেন, তরুণরা তা যত্নে বেড়ে তোলুক—এটাই সকলের কামনা।
যোগাযোগ:
- প্রবীণ হেল্পলাইন: ৩৩৩ | ওয়েবসাইট:molwa.gov.bd/elderly
- বাংলাদেশ এজিং ফাউন্ডেশন: ০২-৫৫০০০০৩৩