বাংলাদেশের বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল (এসইজেড) গুলোতে বিনিয়োগ বাড়াতে কুয়েতের ব্যবসায়ীদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান। ৯ মার্চ ২০২৫ ঢাকায় কুয়েতি ব্যবসায়ী প্রতিনিধিদের সাথে এক বৈঠকে তিনি বলেন, “বিদ্যুৎ, গ্যাস, শ্রমিক সুবিধাসহ নানা ক্ষেত্রে বাংলাদেশে বিনিয়োগের অফুরন্ত সুযোগ রয়েছে। কুয়েতের সাথে আমাদের অর্থনৈতিক সম্পর্ক আরও গভীর হোক।”
কোথায় বিনিয়োগের সুযোগ?
সালমান এফ রহমান কুয়েতি বিনিয়োগকারীদের জন্য নিম্নোক্ত ক্ষেত্রগুলোতে অগ্রাধিকার দেওয়ার পরামর্শ দেন:
১. জ্বালানি খাত: এলএনজি টার্মিনাল, সৌরশক্তি প্রকল্প।
২. কৃষি প্রক্রিয়াকরণ: ফ্রোজেন ফুড, ফলের রপ্তানি।
৩. আধুনিক অবকাঠামো: স্মার্ট সিটি, টেকনোপার্ক।
৪. চামড়া শিল্প: পরিবেশবান্ধব ট্যানারি।
তিনি জানান,
“বাংলাদেশে শ্রমিকের মজুরি প্রতিযোগিতামূলক। বিনিয়োগকারীদের জন্য ১০ বছর ট্যাক্স ছাড়, জমি লিজে ৯৯ বছরের ছাড়সহ নানা সুবিধা দেওয়া হবে।”
কুয়েতের বিনিয়োগের নজির
- ২০২৪ সালে:কুয়েতের পাবলিক ইনভেস্টমেন্ট অথরিটি (পিআইএ) বাংলাদেশে ৫০০ মিলিয়ন ডলার বিনিয়োগের চুক্তি করেছে।
- চলমান প্রকল্প:কুয়েত ফান্ডের অর্থায়নে পায়রা সমুদ্রবন্দর ও পদ্মা সেতুর সংযোগ সড়ক নির্মাণ।
কুয়েতি প্রতিনিধিদের প্রতিক্রিয়া
কুয়েত চেম্বার অব কমার্সের প্রেসিডেন্ট খালিদ আল-ফারেজ বলেন,
“বাংলাদেশের অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা ও তরুণ জনশক্তি আমাদের আকর্ষণ করছে। আগামী ৫ বছরে আমরা এখানে ১ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগের পরিকল্পনা করছি।”
বিনিয়োগের সুবিধা
- জমি বরাদ্দ: এসইজেড এলাকায় বিনিয়োগকারীদের জন্য ১ একর জমি লিজের মূল্য মাত্র ১ ডলার (প্রতি বছর)।
- দ্রুত অনুমোদন: বিনিয়োগ প্রস্তাব ১৫ কর্মদিবসের মধ্যে অনুমোদন।
- বিদ্যুৎ সুবিধা: শিল্প কারখানায় ২৪/৭ বিদ্যুৎ সরবরাহের গ্যারান্টি।
কেন বাংলাদেশে বিনিয়োগ?
- কৌশলগত অবস্থান: ভারত, চীন ও আসিয়ানের বাজারে প্রবেশের সেরা গেটওয়ে।
- শ্রমিক দক্ষতা: ৬৫% জনসংখ্যার বয়স ৩৫ বছরের নিচে।
- রপ্তানি সুবিধা: ইউরোপীয় ইউনিয়নে শুল্কমুক্ত সুবিধা।
পরবর্তী পদক্ষেপ
- যৌথ ফোরাম গঠন: বাংলাদেশ ও কুয়েতের ব্যবসায়ীরা মাসিক আলোচনায় বসবেন।
- প্রতিনিধিদল পাঠানো: আগামী এপ্রিলে কুয়েতি বিনিয়োগকারীদের একটি দল বাংলাদেশের এসইজেড পরিদর্শন করবে।
শেষ কথা
বাংলাদেশ ও কুয়েতের অর্থনৈতিক সহযোগিতা বাড়লে দুই দেশই লাভবান হবে। কুয়েতের পুঁজি ও বাংলাদেশের উৎপাদন ক্ষমতা মিলে গড়ে উঠতে পারে নতুন এক বাণিজ্য জোট।
যোগাযোগ:
- বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডা): ০২-৫৫০০০০১২ | ওয়েবসাইট:bida.gov.bd
- কুয়েত দূতাবাস, ঢাকা: +880 2222-556677