ঢাকা , শনিবার, ১০ মে ২০২৫, ২৭ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শিরোনামঃ
“মডেল মেঘনা আলম কেন পুলিশ হেফাজতে? জানালেন পুলিশ কর্মকর্তা” “মুঠোফোন চেয়ে নারীর হাতে অজ্ঞান যুবক, লুট ১ লাখ টাকা” কানটুপি পরে নামাজ আদায় করা যাবে কি? ইসলাম কী বলে? ইসলামে ঐক্যের গুরুত্ব: কোরআন-হাদিসের আলোকে সমাজ গঠনের মূলমন্ত্র দাফনের পর সম্মিলিত দোয়া: ইসলামের নির্দেশনা কী? ফরজ গোসল ছাড়াই সেহরি খাওয়া যাবে? জেনে নিন ইসলামি বিধান ইস্তেখারার দোয়া দেখে পড়া যাবে কি? জেনে নিন ইসলামের নির্দেশনা কেটে ফেলা চুল-নখ কোথায় ফেলবেন? ধর্ম, সংস্কৃতি ও পরিবেশবান্ধব সমাধান সূর্যাস্তের সময় তাওয়াফের নামাজ আদায় করা যাবে? ইসলামিক স্কলারদের ব্যাখ্যা মৃত বাবা-মাকে স্বপ্নে দেখলে যা করবেন: মনোবিদ ও ধর্মীয় বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ
নোটিশঃ
সকাল হোক সত্য খবর দিয়ে । দেশ - বিদেশের সর্বশেষ খবর সবার আগে পেতে সকালের বার্তা এর সাথেই থাকুন ।

অল্পবয়সী ছেলেদের বিবাহিত নারী পছন্দের কারণ! মনোবিজ্ঞানীরা যা বলছেন

সামাজিক ট্যাবু আর রীতিনীতির বাইরে গিয়ে কিছু যুবকের মধ্যে বিবাহিত নারীদের প্রতি আকর্ষণের ঘটনা নতুন নয়। কিন্তু কেন এমন হয়? সম্প্রতি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের একটি গবেষণায় উঠে এসেছে চমকপ্রদ কিছু তথ্য। গবেষণায় অংশগ্রহণকারী ২০-৩০ বছর বয়সী ৫০০ জন যুবকের মধ্যে ১৮% স্বীকার করেছেন যে তারা জীবনে কোনো না কোনো সময় বিবাহিত নারীর প্রতি আকর্ষণ বোধ করেছেন। মনোবিদ, সমাজবিজ্ঞানী এবং সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের সাক্ষাৎকার নিয়ে জানা গেছে এই আকর্ষণের পেছনে কাজ করে সমাজ, মনস্তত্ত্ব ও ব্যক্তিগত কিছু কারণ। চলুন জেনে নিই বিস্তারিত।

১. “ম্যাচিউরিটি” বা পরিপক্বতার আকর্ষণ

অনেক যুবকই মনে করেন, বিবাহিত নারীরা সম্পর্কের ক্ষেত্রে বেশি পরিপক্ব এবং অভিজ্ঞ। তারা জীবনের জটিলতাগুলো বুঝতে পারেন এবং আবেগের ভারসাম্য রাখতে জানেন। গবেষণায় অংশ নেওয়া ২২ বছর বয়সী রিয়াদ (ছদ্মনাম) বলেন, বিবাহিত নারীরা প্রেমের গ্যাম্বল থেকে বেরিয়ে বাস্তবতা বোঝেনতাদের সঙ্গে আলোচনা বা সময় কাটানো সহজ মনে হয়।”

২. সামাজিক নিষেধাজ্ঞার প্রতি বিদ্রোহ?

মনোবিজ্ঞানী ড. ফারহানা আক্তারের মতে, “কিছু যুবকের মধ্যে ‘ট্যাবু’ ভাঙার একটি মনস্তাত্ত্বিক ইচ্ছা কাজ করে। সমাজ যা মানতে নিষেধ করে, তা তাদের কাছে রোমাঞ্চকর মনে হয়। এই বিদ্রোহী মনোভাবই তাদের এমন সম্পর্কের দিকে ঠেলে দিতে পারে।” তবে তিনি সতর্ক করেন, এ ধরনের সম্পর্ক ব্যক্তিগত ও পারিবারিক জীবনে ধ্বংসাত্মক প্রভাব ফেলতে পারে।

৩. নিরাপত্তার অনুভূতি

গবেষণায় দেখা গেছে, কিছু যুবক বিবাহিত নারীদের মধ্যে “মাতৃসুলভ” স্নেহ বা নিরাপত্তা খুঁজে পান। বিশেষ করে যারা শৈশবে মায়ের সঙ্গ কম পেয়েছেন, তাদের মধ্যে এই প্রবণতা বেশি। সমাজবিজ্ঞানী ড. তানভীর হাসান ব্যাখ্যা করেন, এটি কোনো যৌন আকর্ষণ নয়, বরং মানসিক অভাব পূরণের চেষ্টা।”

৪. সাময়িক সম্পর্কের চাপমুক্তি

কিছু ক্ষেত্রে অল্পবয়সী যুবকরা চান না দীর্ঘমেয়াদি সম্পর্কের দায়িত্ব নিতে। তাদের ধারণা, বিবাহিত নারীরা সামাজিক ভয়ে এই সম্পর্ক গোপন রাখবেন এবং ভবিষ্যতের দাবিদাওয়া করবেন না। তবে বাস্তবে এ ধারণা প্রায়ই ভুল প্রমাণিত হয়।

বাংলাদেশের প্রেক্ষাপট: আইন ও সমাজের চ্যালেঞ্জ

বাংলাদেশে বিবাহবহির্ভূত সম্পর্ক আইনত শাস্তিযোগ্য। পেনাল কোডের ৪৯৭ ধারা অনুযায়ী, বিবাহিত নারীর সঙ্গে অবৈধ সম্পর্কে জড়িত পুরুষের ৫ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড হতে পারে। তবুও সামাজিক মাধ্যম ও শহুরে জীবনের প্রভাবে এমন ঘটনা বাড়ছে। ঢাকার একটি পরিবার পরামর্শক সংস্থার তথ্য মতে, গত ৫ বছরে বিবাহবিচ্ছেদের ১২% কেসের পেছনে তৃতীয় পক্ষের উপস্থিতি ছিল।

মনোবিদদের পরামর্শ

  • সম্পর্কের আগে নিজের মানসিক প্রেরণা বুঝতে হবে।
  • সাময়িক আবেগে সিদ্ধান্ত নিলে তা দীর্ঘমেয়াদে ক্ষতির কারণ হয়।
  • পারিবারিক বা কাউন্সেলিং সাহায্য নেওয়া উচিত।

উপসংহার

মানুষের সম্পর্কের পছন্দ জটিল ও বহুমুখী। তবে যে কারণেই হোক না কেন, কোনো সম্পর্কই সম্মতি, সততা এবং আইনের গণ্ডির বাইরে যাওয়া উচিত নয়। সমাজের রক্ষণশীলতা বা ব্যক্তিগত আকাঙ্ক্ষা—যেটাই থাকুক, সচেতনতা আর দায়িত্ববোধই পারে সুস্থ সম্পর্ক গড়ে তুলতে।

আপলোডকারীর তথ্য

মিজানুর রহমান হৃদয়

মিজানুর রহমান হৃদয় বাংলাদেশের একজন তরুন লেখক, তিনি এখন পর্যন্ত ৪ টি বই প্রকাশ করেছেন । ২০১৭ থেকে ২০২৫ চলতি বছর সে বেশ কিছু পত্র - পত্রিকায় কাজ করে আসছেন । আর আমাদের সকালের বার্তা'র বিশেষ প্রতিনিধি হিসেবেও কাজ করছেন ।
জনপ্রিয় বার্তা

“মডেল মেঘনা আলম কেন পুলিশ হেফাজতে? জানালেন পুলিশ কর্মকর্তা”

অল্পবয়সী ছেলেদের বিবাহিত নারী পছন্দের কারণ! মনোবিজ্ঞানীরা যা বলছেন

আপডেট সময় ০৪:৫৯:২৩ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৮ এপ্রিল ২০২৫

সামাজিক ট্যাবু আর রীতিনীতির বাইরে গিয়ে কিছু যুবকের মধ্যে বিবাহিত নারীদের প্রতি আকর্ষণের ঘটনা নতুন নয়। কিন্তু কেন এমন হয়? সম্প্রতি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের একটি গবেষণায় উঠে এসেছে চমকপ্রদ কিছু তথ্য। গবেষণায় অংশগ্রহণকারী ২০-৩০ বছর বয়সী ৫০০ জন যুবকের মধ্যে ১৮% স্বীকার করেছেন যে তারা জীবনে কোনো না কোনো সময় বিবাহিত নারীর প্রতি আকর্ষণ বোধ করেছেন। মনোবিদ, সমাজবিজ্ঞানী এবং সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের সাক্ষাৎকার নিয়ে জানা গেছে এই আকর্ষণের পেছনে কাজ করে সমাজ, মনস্তত্ত্ব ও ব্যক্তিগত কিছু কারণ। চলুন জেনে নিই বিস্তারিত।

১. “ম্যাচিউরিটি” বা পরিপক্বতার আকর্ষণ

অনেক যুবকই মনে করেন, বিবাহিত নারীরা সম্পর্কের ক্ষেত্রে বেশি পরিপক্ব এবং অভিজ্ঞ। তারা জীবনের জটিলতাগুলো বুঝতে পারেন এবং আবেগের ভারসাম্য রাখতে জানেন। গবেষণায় অংশ নেওয়া ২২ বছর বয়সী রিয়াদ (ছদ্মনাম) বলেন, বিবাহিত নারীরা প্রেমের গ্যাম্বল থেকে বেরিয়ে বাস্তবতা বোঝেনতাদের সঙ্গে আলোচনা বা সময় কাটানো সহজ মনে হয়।”

২. সামাজিক নিষেধাজ্ঞার প্রতি বিদ্রোহ?

মনোবিজ্ঞানী ড. ফারহানা আক্তারের মতে, “কিছু যুবকের মধ্যে ‘ট্যাবু’ ভাঙার একটি মনস্তাত্ত্বিক ইচ্ছা কাজ করে। সমাজ যা মানতে নিষেধ করে, তা তাদের কাছে রোমাঞ্চকর মনে হয়। এই বিদ্রোহী মনোভাবই তাদের এমন সম্পর্কের দিকে ঠেলে দিতে পারে।” তবে তিনি সতর্ক করেন, এ ধরনের সম্পর্ক ব্যক্তিগত ও পারিবারিক জীবনে ধ্বংসাত্মক প্রভাব ফেলতে পারে।

৩. নিরাপত্তার অনুভূতি

গবেষণায় দেখা গেছে, কিছু যুবক বিবাহিত নারীদের মধ্যে “মাতৃসুলভ” স্নেহ বা নিরাপত্তা খুঁজে পান। বিশেষ করে যারা শৈশবে মায়ের সঙ্গ কম পেয়েছেন, তাদের মধ্যে এই প্রবণতা বেশি। সমাজবিজ্ঞানী ড. তানভীর হাসান ব্যাখ্যা করেন, এটি কোনো যৌন আকর্ষণ নয়, বরং মানসিক অভাব পূরণের চেষ্টা।”

৪. সাময়িক সম্পর্কের চাপমুক্তি

কিছু ক্ষেত্রে অল্পবয়সী যুবকরা চান না দীর্ঘমেয়াদি সম্পর্কের দায়িত্ব নিতে। তাদের ধারণা, বিবাহিত নারীরা সামাজিক ভয়ে এই সম্পর্ক গোপন রাখবেন এবং ভবিষ্যতের দাবিদাওয়া করবেন না। তবে বাস্তবে এ ধারণা প্রায়ই ভুল প্রমাণিত হয়।

বাংলাদেশের প্রেক্ষাপট: আইন ও সমাজের চ্যালেঞ্জ

বাংলাদেশে বিবাহবহির্ভূত সম্পর্ক আইনত শাস্তিযোগ্য। পেনাল কোডের ৪৯৭ ধারা অনুযায়ী, বিবাহিত নারীর সঙ্গে অবৈধ সম্পর্কে জড়িত পুরুষের ৫ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড হতে পারে। তবুও সামাজিক মাধ্যম ও শহুরে জীবনের প্রভাবে এমন ঘটনা বাড়ছে। ঢাকার একটি পরিবার পরামর্শক সংস্থার তথ্য মতে, গত ৫ বছরে বিবাহবিচ্ছেদের ১২% কেসের পেছনে তৃতীয় পক্ষের উপস্থিতি ছিল।

মনোবিদদের পরামর্শ

  • সম্পর্কের আগে নিজের মানসিক প্রেরণা বুঝতে হবে।
  • সাময়িক আবেগে সিদ্ধান্ত নিলে তা দীর্ঘমেয়াদে ক্ষতির কারণ হয়।
  • পারিবারিক বা কাউন্সেলিং সাহায্য নেওয়া উচিত।

উপসংহার

মানুষের সম্পর্কের পছন্দ জটিল ও বহুমুখী। তবে যে কারণেই হোক না কেন, কোনো সম্পর্কই সম্মতি, সততা এবং আইনের গণ্ডির বাইরে যাওয়া উচিত নয়। সমাজের রক্ষণশীলতা বা ব্যক্তিগত আকাঙ্ক্ষা—যেটাই থাকুক, সচেতনতা আর দায়িত্ববোধই পারে সুস্থ সম্পর্ক গড়ে তুলতে।