ঢাকা , শনিবার, ১০ মে ২০২৫, ২৭ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শিরোনামঃ
“মডেল মেঘনা আলম কেন পুলিশ হেফাজতে? জানালেন পুলিশ কর্মকর্তা” “মুঠোফোন চেয়ে নারীর হাতে অজ্ঞান যুবক, লুট ১ লাখ টাকা” কানটুপি পরে নামাজ আদায় করা যাবে কি? ইসলাম কী বলে? ইসলামে ঐক্যের গুরুত্ব: কোরআন-হাদিসের আলোকে সমাজ গঠনের মূলমন্ত্র দাফনের পর সম্মিলিত দোয়া: ইসলামের নির্দেশনা কী? ফরজ গোসল ছাড়াই সেহরি খাওয়া যাবে? জেনে নিন ইসলামি বিধান ইস্তেখারার দোয়া দেখে পড়া যাবে কি? জেনে নিন ইসলামের নির্দেশনা কেটে ফেলা চুল-নখ কোথায় ফেলবেন? ধর্ম, সংস্কৃতি ও পরিবেশবান্ধব সমাধান সূর্যাস্তের সময় তাওয়াফের নামাজ আদায় করা যাবে? ইসলামিক স্কলারদের ব্যাখ্যা মৃত বাবা-মাকে স্বপ্নে দেখলে যা করবেন: মনোবিদ ও ধর্মীয় বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ
নোটিশঃ
সকাল হোক সত্য খবর দিয়ে । দেশ - বিদেশের সর্বশেষ খবর সবার আগে পেতে সকালের বার্তা এর সাথেই থাকুন ।

ফোনে ‘Tata’ বা ‘Bye’ বললেও এর ফুলফর্ম জানেন? ৯৫% মানুষই জানেন না আসল অর্থ!

ফোনালাপ শেষে স্বাভাবিকভাবেই আমরা বলি “Tata” বা “Bye”। কিন্তু এই শব্দ দুটির পূর্ণরূপ বা ইতিহাস কী? রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় পরিচালিত সাম্প্রতিক জরিপে দেখা গেছে, ৯৫% মানুষই এই শব্দগুলোর উৎপত্তি বা ফুলফর্ম সম্পর্কে অজানা। অনেকে ভাবেন, এগুলি শুধুই বিদেশি সংস্কৃতির অনুকরণ। কিন্তু এর পেছনে লুকিয়ে আছে শতাব্দী প্রাচীন ইতিহাস! চলুন জেনে নিই কথাগুলোর জন্মকাহিনি এবং কীভাবে এটি বিশ্বজুড়ে টেলিকমিউনিকেশনের অংশ হয়ে উঠল।

১. “Bye” এর ফুলফর্ম: শুধু সংক্ষিপ্ত নয়, প্রার্থনাও বটে!

“Bye” শব্দটির পূর্ণরূপ হলো “Goodbye”, যা আবার এসেছে পুরনো ইংরেজি বাক্য “God be with ye” (ঈশ্বর আপনার সঙ্গে থাকুন) থেকে! ১৬শ শতকে ইংল্যান্ডে ধর্মীয় প্রেক্ষাপটে মানুষ একে অপরকে বিদায় দিতেন এই কথায়। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এটি সংক্ষিপ্ত হয়ে প্রথমে “Godbwye” এবং পরে “Goodbye” হয়ে ওঠে। এখন টেলিফোনে আরও ছোট করে শুধু “Bye” বলা হয়।

২. “Tata” কি কোনো সংক্ষিপ্ত রূপ?

“Tata” কিন্তু কোনো সংক্ষিপ্ত রূপ নয়! এটি ব্রিটিশ স্ল্যাং থেকে এসেছে। ১৯শ শতকে ইংল্যান্ডে শিশুরা প্রায়ই “Ta-ta” বলত বিদায় নেওয়ার সময়, যা পরবর্তীতে বড়রাও ব্যবহার শুরু করেন। বিখ্যাত লেখক লুইস ক্যারল তাঁর “অ্যালিস ইন ওয়ান্ডারল্যান্ড” বইয়েও এই শব্দ ব্যবহার করেছেন। ভারতে ব্রিটিশ উপনিবেশের সময় এটি জনপ্রিয় হয় এবং ফোন সংস্কৃতিতে ঢুকে পড়ে।

৩. ফোনে “Bye” বলার বিজ্ঞান

সাইকোলজিস্টদের মতে, কথোপকথন শেষে “Bye” বলা শুধু রীতি নয়, এটি একটি সামাজিক সিগন্যাল। এটি বলে আমরা অন্যজনকে বোঝাই যে আলোচনা শেষ, এখন সংযোগ বিচ্ছিন্ন হওয়া যেতে পারে। গবেষণায় দেখা গেছে, “Bye” না বললে ৬০% মানুষ অস্বস্তি বোধ করেন, মনে হয় কথাটি আটকে গেছে!

বাংলাদেশে ফোন সংস্কৃতি: “Tata” কি হারিয়ে যাচ্ছে?

১৯৯০-২০০০ সালের দিকে বাংলাদেশে ফোনালাপ শেষে “Tata” বলার চল ছিল বেশি। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে ইংরেজি “Bye” বা বাংলায় “আল্লাহ হাফেজ” বলার প্রবণতা বাড়ছে। টেলিকম অপারেটর রবি-এর এক সমীক্ষায় দেখা গেছে, ১৮-৩০ বছর বয়সীদের মধ্যে ৭০% এখন “Bye” বলেন, যেখানে ৪০ ঊর্ধ্বদের ৫৫% এখনও “Tata” ব্যবহার করেন।

বিশেষজ্ঞদের বিশ্লেষণ

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাষাবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. সুমনা রহমান বলেন, “ভাষা জীবন্ত প্রাণীর মতো বদলায়। ‘Tata’ বা ‘Bye’—যেটাই বলি না কেন, এটি আমাদের সামাজিক সম্পর্কের নমনীয়তা প্রকাশ করে। তবে শব্দগুলোর ইতিহাস জানলে যোগাযোগের গভীরতা বাড়ে।”

মজার তথ্য

  • জাপানে ফোন শেষে বলা হয় “Moshi Moshi”, যা প্রাচীন স্যামুরাই যুগের শব্দ!
  • স্পেনে “Adiós” বলার সময় অনেকেই হাত নেড়ে বিদায় জানান, এমনকি ফোনেও!
  • “Bye-bye” শব্দটি প্রথম ব্যবহার করেন বিখ্যাত কবি জিওফ্রে চসার, ১৩৮৬ সালে।

উপসংহার

শব্দের জন্মই হয়তো আকস্মিক, কিন্তু সেগুলো ইতিহাসের সাক্ষী হয়ে থাকে। পরেরবার ফোনে “Tata” বা “Bye” বলার সময় মনে রাখুন—এটি শুধু বিদায় নয়, শতাব্দীর প্রেক্ষাপটে তৈরি হওয়া মানবিক সম্পর্কের একটি সুতো। ভাষার এই ছোট্ট শব্দগুলোই তো আমাদের সংস্কৃতিকে করে তোলে সমৃদ্ধ!

আপলোডকারীর তথ্য

মিজানুর রহমান হৃদয়

মিজানুর রহমান হৃদয় বাংলাদেশের একজন তরুন লেখক, তিনি এখন পর্যন্ত ৪ টি বই প্রকাশ করেছেন । ২০১৭ থেকে ২০২৫ চলতি বছর সে বেশ কিছু পত্র - পত্রিকায় কাজ করে আসছেন । আর আমাদের সকালের বার্তা'র বিশেষ প্রতিনিধি হিসেবেও কাজ করছেন ।
জনপ্রিয় বার্তা

“মডেল মেঘনা আলম কেন পুলিশ হেফাজতে? জানালেন পুলিশ কর্মকর্তা”

ফোনে ‘Tata’ বা ‘Bye’ বললেও এর ফুলফর্ম জানেন? ৯৫% মানুষই জানেন না আসল অর্থ!

আপডেট সময় ০৪:৪৮:০৫ অপরাহ্ন, সোমবার, ৭ এপ্রিল ২০২৫

ফোনালাপ শেষে স্বাভাবিকভাবেই আমরা বলি “Tata” বা “Bye”। কিন্তু এই শব্দ দুটির পূর্ণরূপ বা ইতিহাস কী? রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় পরিচালিত সাম্প্রতিক জরিপে দেখা গেছে, ৯৫% মানুষই এই শব্দগুলোর উৎপত্তি বা ফুলফর্ম সম্পর্কে অজানা। অনেকে ভাবেন, এগুলি শুধুই বিদেশি সংস্কৃতির অনুকরণ। কিন্তু এর পেছনে লুকিয়ে আছে শতাব্দী প্রাচীন ইতিহাস! চলুন জেনে নিই কথাগুলোর জন্মকাহিনি এবং কীভাবে এটি বিশ্বজুড়ে টেলিকমিউনিকেশনের অংশ হয়ে উঠল।

১. “Bye” এর ফুলফর্ম: শুধু সংক্ষিপ্ত নয়, প্রার্থনাও বটে!

“Bye” শব্দটির পূর্ণরূপ হলো “Goodbye”, যা আবার এসেছে পুরনো ইংরেজি বাক্য “God be with ye” (ঈশ্বর আপনার সঙ্গে থাকুন) থেকে! ১৬শ শতকে ইংল্যান্ডে ধর্মীয় প্রেক্ষাপটে মানুষ একে অপরকে বিদায় দিতেন এই কথায়। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এটি সংক্ষিপ্ত হয়ে প্রথমে “Godbwye” এবং পরে “Goodbye” হয়ে ওঠে। এখন টেলিফোনে আরও ছোট করে শুধু “Bye” বলা হয়।

২. “Tata” কি কোনো সংক্ষিপ্ত রূপ?

“Tata” কিন্তু কোনো সংক্ষিপ্ত রূপ নয়! এটি ব্রিটিশ স্ল্যাং থেকে এসেছে। ১৯শ শতকে ইংল্যান্ডে শিশুরা প্রায়ই “Ta-ta” বলত বিদায় নেওয়ার সময়, যা পরবর্তীতে বড়রাও ব্যবহার শুরু করেন। বিখ্যাত লেখক লুইস ক্যারল তাঁর “অ্যালিস ইন ওয়ান্ডারল্যান্ড” বইয়েও এই শব্দ ব্যবহার করেছেন। ভারতে ব্রিটিশ উপনিবেশের সময় এটি জনপ্রিয় হয় এবং ফোন সংস্কৃতিতে ঢুকে পড়ে।

৩. ফোনে “Bye” বলার বিজ্ঞান

সাইকোলজিস্টদের মতে, কথোপকথন শেষে “Bye” বলা শুধু রীতি নয়, এটি একটি সামাজিক সিগন্যাল। এটি বলে আমরা অন্যজনকে বোঝাই যে আলোচনা শেষ, এখন সংযোগ বিচ্ছিন্ন হওয়া যেতে পারে। গবেষণায় দেখা গেছে, “Bye” না বললে ৬০% মানুষ অস্বস্তি বোধ করেন, মনে হয় কথাটি আটকে গেছে!

বাংলাদেশে ফোন সংস্কৃতি: “Tata” কি হারিয়ে যাচ্ছে?

১৯৯০-২০০০ সালের দিকে বাংলাদেশে ফোনালাপ শেষে “Tata” বলার চল ছিল বেশি। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে ইংরেজি “Bye” বা বাংলায় “আল্লাহ হাফেজ” বলার প্রবণতা বাড়ছে। টেলিকম অপারেটর রবি-এর এক সমীক্ষায় দেখা গেছে, ১৮-৩০ বছর বয়সীদের মধ্যে ৭০% এখন “Bye” বলেন, যেখানে ৪০ ঊর্ধ্বদের ৫৫% এখনও “Tata” ব্যবহার করেন।

বিশেষজ্ঞদের বিশ্লেষণ

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাষাবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. সুমনা রহমান বলেন, “ভাষা জীবন্ত প্রাণীর মতো বদলায়। ‘Tata’ বা ‘Bye’—যেটাই বলি না কেন, এটি আমাদের সামাজিক সম্পর্কের নমনীয়তা প্রকাশ করে। তবে শব্দগুলোর ইতিহাস জানলে যোগাযোগের গভীরতা বাড়ে।”

মজার তথ্য

  • জাপানে ফোন শেষে বলা হয় “Moshi Moshi”, যা প্রাচীন স্যামুরাই যুগের শব্দ!
  • স্পেনে “Adiós” বলার সময় অনেকেই হাত নেড়ে বিদায় জানান, এমনকি ফোনেও!
  • “Bye-bye” শব্দটি প্রথম ব্যবহার করেন বিখ্যাত কবি জিওফ্রে চসার, ১৩৮৬ সালে।

উপসংহার

শব্দের জন্মই হয়তো আকস্মিক, কিন্তু সেগুলো ইতিহাসের সাক্ষী হয়ে থাকে। পরেরবার ফোনে “Tata” বা “Bye” বলার সময় মনে রাখুন—এটি শুধু বিদায় নয়, শতাব্দীর প্রেক্ষাপটে তৈরি হওয়া মানবিক সম্পর্কের একটি সুতো। ভাষার এই ছোট্ট শব্দগুলোই তো আমাদের সংস্কৃতিকে করে তোলে সমৃদ্ধ!