রাস্তায় সাদা-কালো ডোরা কাটা মার্কিং দেখে চিনতে পারলেও “জেব্রা ক্রসিং” শব্দটির বাংলা অর্থ অনেকেরই অজানা। সম্প্রতি রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় পরিচালিত একটি সমীক্ষায় দেখা গেছে, ৬৫% পথচারী এবং ড্রাইভার জানেন না যে “জেব্রা ক্রসিং” এর স্থানীয় নাম কী বা এর সঠিক ব্যবহারবিধি। চলুন জেনে নিই এই শব্দের বাংলা অর্থ, ইতিহাস এবং নিরাপদ সড়ক ব্যবহারের নিয়ম।
জেব্রা ক্রসিংয়ের বাংলা অর্থ কী?
“জেব্রা ক্রসিং” শব্দটির সরাসরি বাংলা অর্থ হলো “জেব্রা লাইন” বা “পথচারী ক্রসিং”। রাস্তায় সাদা-কালো ডোরা কাটা দাগের সঙ্গে জেব্রার গায়ের ডোরার মিল থাকায় এই নামকরণ। এটি মূলত পথচারীদের নিরাপদে রাস্তা পারাপারের জন্য বরাদ্দকৃত স্থান। তবে বাংলাদেশে অনেকেই একে “হাঁটা পথ” বা “ক্রসিং” বলেও ডাকেন।
নামকরণের ইতিহাস
জেব্রা ক্রসিংয়ের ধারণা এসেছে ব্রিটেন থেকে। ১৯৫০-এর দশকে প্রথম বিশ্বব্যাপী এর ব্যবহার শুরু হয়। বাংলাদেশে এটি প্রচলিত হয় ১৯৯০-এর পর থেকে, বিশেষ করে শহরাঞ্চলে ট্রাফিক ব্যবস্থাপনায়। নামটি যতই বিদেশি হোক, এর উদ্দেশ্য একটাই—পথচারী ও যানবাহনের মধ্যে সামঞ্জস্য রেখে দুর্ঘটনা রোধ করা।
বাংলাদেশে জেব্রা ক্রসিং: বাস্তবতা vs চিত্র
ঢাকা, চট্টগ্রাম বা বড় শহরগুলোতে জেব্রা ক্রসিং থাকলেও এর ব্যবহারে সচেতনতা কম। বেশিরভাগ ড্রাইভার ক্রসিং এলাকায় গাড়ির গতি কমান না, আবার পথচারীরা দৌড়ে রাস্তা পার হন। বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআরটিএ) তথ্যমতে, রাজধানীতে ৬০% ট্রাফিক সিগন্যালে জেব্রা ক্রসিং থাকলেও মাত্র ৩০% মানুষ এতে চলাচল করেন।
নিরাপদে রাস্তা পার হতে করণীয়
১. ক্রসিংয়ের দুই প্রান্তে সাদা-কালো দাগ দেখলে সেখানে পার হওয়ার চেষ্টা করুন।
২. ড্রাইভারদের আইনত বাধ্যতামূলক জেব্রা ক্রসিংয়ে গাড়ি থামানোর।
৩. শিশু, বয়স্ক বা প্রতিবন্ধীদের আগে পার হতে সাহায্য করুন।
বিশেষজ্ঞদের মতামত
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) ট্রাফিক বিভাগের উপ-কমিশনার মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, “জেব্রা ক্রসিং সম্পর্কে গণসচেতনতা তৈরি করতে স্কুল-কলেজে কর্মশালার আয়োজন করা হচ্ছে। পাশাপাশি, ড্রাইভারদের লাইসেন্স নবায়নের সময় এই বিষয়ে প্রশিক্ষণ বাধ্যতামূলক করা হবে।”
উপসংহার
জেব্রা ক্রসিং শুধু একটি নাম নয়, এটি নিরাপদ জীবনের চাবিকাঠি। এই শব্দের বাংলা অর্থ জানার পাশাপাশি এর ব্যবহার মেনে চললেই রাস্তায় কমবে দুর্ঘটনা। আসুন, সচেতন হয়ে নিজের এবং অন্যের জীবন বাঁচাই।