ঢাকা, বাংলাদেশ: শহরের ব্যস্ত রাস্তায় ফ্লাইওভার ও ওভারব্রিজ—দুইটি শব্দই প্রায়শই শোনা যায়। দেখতে একইরকম মনে হলেও এদের নকশা, উদ্দেশ্য ও ব্যবহারে বিস্তর পার্থক্য রয়েছে। চলুন জেনে নেওয়া যাক, কোথায় কোনটি ব্যবহার করা হয় এবং কেন।
১. সংজ্ঞা ও উদ্দেশ্য
- ফ্লাইওভার (Flyover):এটি একটি উচ্চমানের সড়কপথ যা নিচের রাস্তা, রেললাইন বা যানজটের উপর দিয়ে অতিক্রম করে। মূলত ট্রাফিক যানজট কমানোর জন্য নির্মিত হয়।
উদাহরণ: ঢাকার মহাখালী ফ্লাইওভার। - ওভারব্রিজ (Overbridge):এটি সাধারণত পথচারী বা যানবাহনের জন্য সংযোগ সেতু যা রেললাইন, নদী বা খালের উপর দিয়ে যায়। এর প্রধান কাজ নিরাপদে পারাপার নিশ্চিত করা।
উদাহরণ: কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনের পথচারী ওভারব্রিজ।
২. নকশাগত পার্থক্য
বিষয় | ফ্লাইওভার | ওভারব্রিজ |
দৈর্ঘ্য | দীর্ঘ (কিলোমিটার জুড়ে) | অপেক্ষাকৃত সংক্ষিপ্ত |
উচ্চতা | বেশি উঁচু | কম উঁচু |
গঠন | কংক্রিট ও স্টিলের সমন্বয় | সাধারণত কংক্রিট বা লোহা |
ব্যবহার | যানবাহনের ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা | পথচারী/যানবাহন পারাপার |
৩. ব্যবহারের ক্ষেত্র
- ফ্লাইওভারশহরের প্রধান সড়কে যানজট কমাতে, এক্সপ্রেসওয়ে বা হাইওয়েতে ব্যবহার হয়।
- ওভারব্রিজসাধারণত রেলক্রসিং, নদী বা বিপজ্জনক এলাকায় নিরাপত্তার জন্য তৈরি করা হয়।
৪. নির্মাণ ব্যয় ও সময়
ফ্লাইওভার তৈরি করতে বেশি সময় ও খরচ লাগে (১০০-৫০০ কোটি টাকা)। ওভারব্রিজ তুলনামূলকভাবে কম খরচে (৫-৫০ কোটি টাকা) ও দ্রুত নির্মাণ করা যায়।
৫. বাংলাদেশের উদাহরণ
- ফ্লাইওভার:হাতিরঝিল ফ্লাইওভার, উত্তরা ফ্লাইওভার।
- ওভারব্রিজ:ঢাকা-ময়মনসিংহ হাইওয়ে রেলওয়ে ওভারব্রিজ, পদ্মা সেতুর সংযোগ সেতু।
কেন বিভ্রান্তি হয়?
দুইটি শব্দই ইংরেজি “Overpass” থেকে আসায় অনেকেই গুলিয়ে ফেলেন। তবে প্রকৌশলীরা নকশার ভিত্তিতে আলাদা নাম দিয়েছেন।
পরিশেষে:
ফ্লাইওভার শহরের যানজটের মহাঔষধ, আর ওভারব্রিজ নিরাপদ যাত্রার নিশ্চয়তা। নগর পরিকল্পনায় এই দুটি স্থাপনার ভূমিকা আলাদা, কিন্তু সমান গুরুত্বপূর্ণ!