ঢাকা , শনিবার, ১০ মে ২০২৫, ২৭ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শিরোনামঃ
“মডেল মেঘনা আলম কেন পুলিশ হেফাজতে? জানালেন পুলিশ কর্মকর্তা” “মুঠোফোন চেয়ে নারীর হাতে অজ্ঞান যুবক, লুট ১ লাখ টাকা” কানটুপি পরে নামাজ আদায় করা যাবে কি? ইসলাম কী বলে? ইসলামে ঐক্যের গুরুত্ব: কোরআন-হাদিসের আলোকে সমাজ গঠনের মূলমন্ত্র দাফনের পর সম্মিলিত দোয়া: ইসলামের নির্দেশনা কী? ফরজ গোসল ছাড়াই সেহরি খাওয়া যাবে? জেনে নিন ইসলামি বিধান ইস্তেখারার দোয়া দেখে পড়া যাবে কি? জেনে নিন ইসলামের নির্দেশনা কেটে ফেলা চুল-নখ কোথায় ফেলবেন? ধর্ম, সংস্কৃতি ও পরিবেশবান্ধব সমাধান সূর্যাস্তের সময় তাওয়াফের নামাজ আদায় করা যাবে? ইসলামিক স্কলারদের ব্যাখ্যা মৃত বাবা-মাকে স্বপ্নে দেখলে যা করবেন: মনোবিদ ও ধর্মীয় বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ
নোটিশঃ
সকাল হোক সত্য খবর দিয়ে । দেশ - বিদেশের সর্বশেষ খবর সবার আগে পেতে সকালের বার্তা এর সাথেই থাকুন ।

আইসক্রিমের বাংলা অর্থ কী? জানেন কি, এই মজার শব্দের উৎস?

ঢাকা, বাংলাদেশ: গরমে ঠোঁটে জমে থাকা আইসক্রিমের স্বাদ নেওয়ার সময় কখনও ভেবেছেন কি, এই শব্দের বাংলা অর্থ কী? “আইসক্রিম” নামটি এতই জনপ্রিয় যে এর বাংলা প্রতিশব্দ খুঁজতে গিয়েও হোঁচট খান অনেকেই। আসুন জেনে নেওয়া যান এই শব্দের ভাষাগত ইতিহাস ও বাংলায় এর সম্ভাব্য রূপ।

আইসক্রিম শব্দের উৎপত্তি

“আইসক্রিম” ইংরেজি শব্দ, যা এসেছে “iced cream” (বরফযুক্ত ক্রিম) থেকে। ১৮শ শতকে ইউরোপে এই মিষ্টান্ন জনপ্রিয় হওয়ার পর ব্রিটিশদের মাধ্যমে বাংলায় শব্দটি ঢুকে পড়ে।

বাংলা একাডেমি কী বলে?

বাংলা একাডেমির “আধুনিক বাংলা অভিধান”-এ “আইসক্রিম”-কে সরাসরি বিদেশি শব্দ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। তবে কিছু বাংলা পরিভাষায় একে “হিমমিষ্টান্ন” (হিম + মিষ্টান্ন) বা “শীতল ক্ষীর” বলার চেষ্টা করা হয়েছে। কিন্তু এগুলো জনপ্রিয় হয়নি।

কেন বাংলা শব্দ চালু হয়নি?

ভাষাবিদ ড. রিয়াজুল হক বলেন, “আইসক্রিম একটি সাংস্কৃতিক আমদানি। এটি বাংলায় আসার আগে এখানে এর সমতুল্য কোনো খাবার ছিল না। তাই স্থানীয় নাম তৈরি হয়নি। ‘কুলফি’ বা ‘ফালুদা’র মতো ঐতিহ্যবাহী আইসক্রিমের রূপান্তরিত সংস্করণ থাকলেও আধুনিক আইসক্রিমের জন্য বিদেশি শব্দই রয়ে গেছে।”

প্রাচীন বাংলায় ঠাণ্ডা মিষ্টির নমুনা

  • কুলফি:ঘন দুধ ও চিনি জমিয়ে বরফে তৈরি করা হতো। মুঘল আমল থেকে বাংলায় এই পদ প্রচলিত।
  • ফালুদা:গোলাপজল, সেমাই ও বরফের মিশ্রণ। এখনও গ্রামেগঞ্জে জনপ্রিয়।

বাংলাদেশে আইসক্রিমের যাত্রা

১৯৬০-এর দশকে ঢাকার “পোলো আইসক্রিম” ও “কোয়ালিটি” ব্র্যান্ডের মাধ্যমে আইসক্রিম বাণিজ্যিকভাবে জনপ্রিয় হয়। তখন থেকেই “আইসক্রিম” শব্দটি স্থায়ী হয়ে যায়।

কৌতূহলী তথ্য

  • “ক্রিম” নয়, “ক্রীম”:বাংলায় “ক্রিম” লেখা হলেও উচ্চারণে “ক্রীম” বলা হয়।
  • রবীন্দ্রনাথের আইসক্রিম:রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ইংল্যান্ডে পড়ার সময় আইসক্রিমের স্বাদ পেয়ে চিঠিতে লিখেছিলেন, “এমন ঠাণ্ডা মিষ্টি বাংলায় আনো!”

পরিশেষে:

ভাষা জীবন্ত প্রাণীর মতো—এটি সময় ও সংস্কৃতির সাথে বদলায়। “আইসক্রিম” বাংলায় আজও বিদেশি শব্দ হলেও এটি আমাদের সংস্কৃতির অংশ হয়ে গেছে। তাই বাংলা একাডেমির পরিভাষা না মানলেও, এই শব্দের মজাদার ইতিহাস জানা থাকলে মনের ভাঁজে ঠাণ্ডা হওয়ার পালা!

আপলোডকারীর তথ্য

মিজানুর রহমান হৃদয়

মিজানুর রহমান হৃদয় বাংলাদেশের একজন তরুন লেখক, তিনি এখন পর্যন্ত ৪ টি বই প্রকাশ করেছেন । ২০১৭ থেকে ২০২৫ চলতি বছর সে বেশ কিছু পত্র - পত্রিকায় কাজ করে আসছেন । আর আমাদের সকালের বার্তা'র বিশেষ প্রতিনিধি হিসেবেও কাজ করছেন ।
জনপ্রিয় বার্তা

“মডেল মেঘনা আলম কেন পুলিশ হেফাজতে? জানালেন পুলিশ কর্মকর্তা”

আইসক্রিমের বাংলা অর্থ কী? জানেন কি, এই মজার শব্দের উৎস?

আপডেট সময় ১২:১০:১৮ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ৫ এপ্রিল ২০২৫

ঢাকা, বাংলাদেশ: গরমে ঠোঁটে জমে থাকা আইসক্রিমের স্বাদ নেওয়ার সময় কখনও ভেবেছেন কি, এই শব্দের বাংলা অর্থ কী? “আইসক্রিম” নামটি এতই জনপ্রিয় যে এর বাংলা প্রতিশব্দ খুঁজতে গিয়েও হোঁচট খান অনেকেই। আসুন জেনে নেওয়া যান এই শব্দের ভাষাগত ইতিহাস ও বাংলায় এর সম্ভাব্য রূপ।

আইসক্রিম শব্দের উৎপত্তি

“আইসক্রিম” ইংরেজি শব্দ, যা এসেছে “iced cream” (বরফযুক্ত ক্রিম) থেকে। ১৮শ শতকে ইউরোপে এই মিষ্টান্ন জনপ্রিয় হওয়ার পর ব্রিটিশদের মাধ্যমে বাংলায় শব্দটি ঢুকে পড়ে।

বাংলা একাডেমি কী বলে?

বাংলা একাডেমির “আধুনিক বাংলা অভিধান”-এ “আইসক্রিম”-কে সরাসরি বিদেশি শব্দ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। তবে কিছু বাংলা পরিভাষায় একে “হিমমিষ্টান্ন” (হিম + মিষ্টান্ন) বা “শীতল ক্ষীর” বলার চেষ্টা করা হয়েছে। কিন্তু এগুলো জনপ্রিয় হয়নি।

কেন বাংলা শব্দ চালু হয়নি?

ভাষাবিদ ড. রিয়াজুল হক বলেন, “আইসক্রিম একটি সাংস্কৃতিক আমদানি। এটি বাংলায় আসার আগে এখানে এর সমতুল্য কোনো খাবার ছিল না। তাই স্থানীয় নাম তৈরি হয়নি। ‘কুলফি’ বা ‘ফালুদা’র মতো ঐতিহ্যবাহী আইসক্রিমের রূপান্তরিত সংস্করণ থাকলেও আধুনিক আইসক্রিমের জন্য বিদেশি শব্দই রয়ে গেছে।”

প্রাচীন বাংলায় ঠাণ্ডা মিষ্টির নমুনা

  • কুলফি:ঘন দুধ ও চিনি জমিয়ে বরফে তৈরি করা হতো। মুঘল আমল থেকে বাংলায় এই পদ প্রচলিত।
  • ফালুদা:গোলাপজল, সেমাই ও বরফের মিশ্রণ। এখনও গ্রামেগঞ্জে জনপ্রিয়।

বাংলাদেশে আইসক্রিমের যাত্রা

১৯৬০-এর দশকে ঢাকার “পোলো আইসক্রিম” ও “কোয়ালিটি” ব্র্যান্ডের মাধ্যমে আইসক্রিম বাণিজ্যিকভাবে জনপ্রিয় হয়। তখন থেকেই “আইসক্রিম” শব্দটি স্থায়ী হয়ে যায়।

কৌতূহলী তথ্য

  • “ক্রিম” নয়, “ক্রীম”:বাংলায় “ক্রিম” লেখা হলেও উচ্চারণে “ক্রীম” বলা হয়।
  • রবীন্দ্রনাথের আইসক্রিম:রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ইংল্যান্ডে পড়ার সময় আইসক্রিমের স্বাদ পেয়ে চিঠিতে লিখেছিলেন, “এমন ঠাণ্ডা মিষ্টি বাংলায় আনো!”

পরিশেষে:

ভাষা জীবন্ত প্রাণীর মতো—এটি সময় ও সংস্কৃতির সাথে বদলায়। “আইসক্রিম” বাংলায় আজও বিদেশি শব্দ হলেও এটি আমাদের সংস্কৃতির অংশ হয়ে গেছে। তাই বাংলা একাডেমির পরিভাষা না মানলেও, এই শব্দের মজাদার ইতিহাস জানা থাকলে মনের ভাঁজে ঠাণ্ডা হওয়ার পালা!