ঢাকা , শনিবার, ১০ মে ২০২৫, ২৬ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শিরোনামঃ
“মডেল মেঘনা আলম কেন পুলিশ হেফাজতে? জানালেন পুলিশ কর্মকর্তা” “মুঠোফোন চেয়ে নারীর হাতে অজ্ঞান যুবক, লুট ১ লাখ টাকা” কানটুপি পরে নামাজ আদায় করা যাবে কি? ইসলাম কী বলে? ইসলামে ঐক্যের গুরুত্ব: কোরআন-হাদিসের আলোকে সমাজ গঠনের মূলমন্ত্র দাফনের পর সম্মিলিত দোয়া: ইসলামের নির্দেশনা কী? ফরজ গোসল ছাড়াই সেহরি খাওয়া যাবে? জেনে নিন ইসলামি বিধান ইস্তেখারার দোয়া দেখে পড়া যাবে কি? জেনে নিন ইসলামের নির্দেশনা কেটে ফেলা চুল-নখ কোথায় ফেলবেন? ধর্ম, সংস্কৃতি ও পরিবেশবান্ধব সমাধান সূর্যাস্তের সময় তাওয়াফের নামাজ আদায় করা যাবে? ইসলামিক স্কলারদের ব্যাখ্যা মৃত বাবা-মাকে স্বপ্নে দেখলে যা করবেন: মনোবিদ ও ধর্মীয় বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ
নোটিশঃ
সকাল হোক সত্য খবর দিয়ে । দেশ - বিদেশের সর্বশেষ খবর সবার আগে পেতে সকালের বার্তা এর সাথেই থাকুন ।

গামছার ইংরেজি কী? ৮৫% মানুষেরই অজানা!

গ্রামের মাঠ থেকে শহরের জিম—গামছা বাঙালির জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ। কিন্তু এই সহজ শব্দটির ইংরেজি কী? রাজধানীর বিভিন্ন বাজারে পরিচালিত জরিপে দেখা গেছে, ৮৫% ক্রেতা-বিক্রেতা গামছার সঠিক ইংরেজি নাম জানেন না। অনেকে বলেন “Towel” বা “Cloth”, যা পুরোপুরি ভুল নয়, তবে সম্পূর্ণ সঠিকও নয়। চলুন জেনে নিই গামছার আন্তর্জাতিক পরিচয়, এর ঐতিহাসিক গুরুত্ব এবং বৈশ্বিক ফ্যাশনে এর প্রভাব।

গামছার ইংরেজি নাম

গামছার সঠিক ইংরেজি হলো “Checked Cotton Towel” বা “Traditional Woven Towel”। গামছার বৈশিষ্ট্য হলো এটি হাতে বোনা সুতি কাপড়ের তৈরি এবং সাধারণত লাল-সাদা বা নীল-সাদা চেকার ডিজাইনের হয়। তবে বিশ্বের অনেক দেশেই একে স্থানীয় নামে ডাকা হয়, যেমন ভারতে “Gamcha”, জাপানে “Tenugui”।

গামছার ইতিহাস: বাংলার গ্রামীণ ঐতিহ্য

গামছার জন্ম বাংলাদেশ ও পশ্চিমবঙ্গের গ্রামাঞ্চলে। মোটা সুতি কাপড় দিয়ে হস্তচালিত তাঁতে বোনা হতো গামছা। কৃষকরা মাঠে কাজের সময় ঘাম মুছতে, গোসলের পর শরীর শুকাতে বা মাথায় পাগড়ি বাঁধতে এটি ব্যবহার করতেন। এখনও গ্রামীণ মেলায় গামছা কেনা-বেচা হয় সমাজের বিভিন্ন স্তরের মানুষের মধ্যে।

গামছার ব্যবহার: শুধু ঘাম মুছাই নয়!

  • পরিচ্ছন্নতা:গামছার মোটা কাপড় সহজে ধুলে পরিষ্কার হয়।
  • ফ্যাশন:শহুরে যুবক-যুবতীরা গামছা কোমরে বেঁধে বা স্কার্ফ হিসেবে ব্যবহার করেন।
  • প্রতিবাদের প্রতীক:২০১৩ সালের শাহবাগ আন্দোলনে গামছা হয়ে উঠেছিল যুবসমাজের ঐক্যের প্রতীক।

বিশ্বজুড়ে গামছার কদর

  • ভারত:অসমে গামছাকে বলা হয় “Gamosa”, যা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে সম্মানের প্রতীক।
  • জাপান:“Tenugui” নামের গামছা শিল্পকর্ম ও উপহার হিসেবে জনপ্রিয়।
  • মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র:হস্তশিল্পের দোকানে বাংলাদেশি গামছা বিক্রি হয় “Ethnic Woven Towel” নামে।

বিশেষজ্ঞদের মতামত

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. সাদিয়া আফরিন বলেন, “গামছা কাপড়ের টুকরো নয়, এটি বাঙালির সাংস্কৃতিক ডিএনএ। এর নকশা, ব্যবহার এবং স্থানীয় অর্থনীতিতে ভূমিকা গবেষণার বিষয়।”

গামছার অর্থনীতি

বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প কর্পোরেশনের তথ্য অনুযায়ী, দেশে বছরে ১০ লক্ষের বেশি গামছা উৎপাদিত হয়। নরসিংদী, টাঙ্গাইল ও সিরাজগঞ্জের তাঁতিরা এই শিল্পের সঙ্গে যুক্ত। একটি গামছার দাম পড়ে ১০০ থেকে ৫০০ টাকা।

শিশুদের জন্য মজার তথ্য

  • গামছা দিয়ে তৈরি হয় পুতুল, ব্যাগ এমনকি পেঁচিয়ে খেলার বলও!
  • গামছায় জড়িয়ে ঠাণ্ডা পানির বোতল রাখলে তা ঘণ্টাখানেক ঠাণ্ডা থাকে।
  • বিখ্যাত চিত্রশিল্পী এসএম সুলতান গামছা পরেই ছবি আঁকতেন!

উপসংহার

গামছা শুধু একটি কাপড় নয়, এটি বাংলার শেকড়ের গল্প। এর ইংরেজি নাম জানার পাশাপাশি এই ঐতিহ্য রক্ষায় সচেতন হোন। পরেরবার গামছা কিনতে গিয়ে মনে করুন—এই সাদাসিধে কাপড়টিই বিশ্বে ছড়িয়ে দিচ্ছে বাংলাদেশের পরিচয়!

আপলোডকারীর তথ্য

মিজানুর রহমান হৃদয়

মিজানুর রহমান হৃদয় বাংলাদেশের একজন তরুন লেখক, তিনি এখন পর্যন্ত ৪ টি বই প্রকাশ করেছেন । ২০১৭ থেকে ২০২৫ চলতি বছর সে বেশ কিছু পত্র - পত্রিকায় কাজ করে আসছেন । আর আমাদের সকালের বার্তা'র বিশেষ প্রতিনিধি হিসেবেও কাজ করছেন ।
জনপ্রিয় বার্তা

“মডেল মেঘনা আলম কেন পুলিশ হেফাজতে? জানালেন পুলিশ কর্মকর্তা”

গামছার ইংরেজি কী? ৮৫% মানুষেরই অজানা!

আপডেট সময় ১২:১০:৪০ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১০ এপ্রিল ২০২৫

গ্রামের মাঠ থেকে শহরের জিম—গামছা বাঙালির জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ। কিন্তু এই সহজ শব্দটির ইংরেজি কী? রাজধানীর বিভিন্ন বাজারে পরিচালিত জরিপে দেখা গেছে, ৮৫% ক্রেতা-বিক্রেতা গামছার সঠিক ইংরেজি নাম জানেন না। অনেকে বলেন “Towel” বা “Cloth”, যা পুরোপুরি ভুল নয়, তবে সম্পূর্ণ সঠিকও নয়। চলুন জেনে নিই গামছার আন্তর্জাতিক পরিচয়, এর ঐতিহাসিক গুরুত্ব এবং বৈশ্বিক ফ্যাশনে এর প্রভাব।

গামছার ইংরেজি নাম

গামছার সঠিক ইংরেজি হলো “Checked Cotton Towel” বা “Traditional Woven Towel”। গামছার বৈশিষ্ট্য হলো এটি হাতে বোনা সুতি কাপড়ের তৈরি এবং সাধারণত লাল-সাদা বা নীল-সাদা চেকার ডিজাইনের হয়। তবে বিশ্বের অনেক দেশেই একে স্থানীয় নামে ডাকা হয়, যেমন ভারতে “Gamcha”, জাপানে “Tenugui”।

গামছার ইতিহাস: বাংলার গ্রামীণ ঐতিহ্য

গামছার জন্ম বাংলাদেশ ও পশ্চিমবঙ্গের গ্রামাঞ্চলে। মোটা সুতি কাপড় দিয়ে হস্তচালিত তাঁতে বোনা হতো গামছা। কৃষকরা মাঠে কাজের সময় ঘাম মুছতে, গোসলের পর শরীর শুকাতে বা মাথায় পাগড়ি বাঁধতে এটি ব্যবহার করতেন। এখনও গ্রামীণ মেলায় গামছা কেনা-বেচা হয় সমাজের বিভিন্ন স্তরের মানুষের মধ্যে।

গামছার ব্যবহার: শুধু ঘাম মুছাই নয়!

  • পরিচ্ছন্নতা:গামছার মোটা কাপড় সহজে ধুলে পরিষ্কার হয়।
  • ফ্যাশন:শহুরে যুবক-যুবতীরা গামছা কোমরে বেঁধে বা স্কার্ফ হিসেবে ব্যবহার করেন।
  • প্রতিবাদের প্রতীক:২০১৩ সালের শাহবাগ আন্দোলনে গামছা হয়ে উঠেছিল যুবসমাজের ঐক্যের প্রতীক।

বিশ্বজুড়ে গামছার কদর

  • ভারত:অসমে গামছাকে বলা হয় “Gamosa”, যা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে সম্মানের প্রতীক।
  • জাপান:“Tenugui” নামের গামছা শিল্পকর্ম ও উপহার হিসেবে জনপ্রিয়।
  • মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র:হস্তশিল্পের দোকানে বাংলাদেশি গামছা বিক্রি হয় “Ethnic Woven Towel” নামে।

বিশেষজ্ঞদের মতামত

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. সাদিয়া আফরিন বলেন, “গামছা কাপড়ের টুকরো নয়, এটি বাঙালির সাংস্কৃতিক ডিএনএ। এর নকশা, ব্যবহার এবং স্থানীয় অর্থনীতিতে ভূমিকা গবেষণার বিষয়।”

গামছার অর্থনীতি

বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প কর্পোরেশনের তথ্য অনুযায়ী, দেশে বছরে ১০ লক্ষের বেশি গামছা উৎপাদিত হয়। নরসিংদী, টাঙ্গাইল ও সিরাজগঞ্জের তাঁতিরা এই শিল্পের সঙ্গে যুক্ত। একটি গামছার দাম পড়ে ১০০ থেকে ৫০০ টাকা।

শিশুদের জন্য মজার তথ্য

  • গামছা দিয়ে তৈরি হয় পুতুল, ব্যাগ এমনকি পেঁচিয়ে খেলার বলও!
  • গামছায় জড়িয়ে ঠাণ্ডা পানির বোতল রাখলে তা ঘণ্টাখানেক ঠাণ্ডা থাকে।
  • বিখ্যাত চিত্রশিল্পী এসএম সুলতান গামছা পরেই ছবি আঁকতেন!

উপসংহার

গামছা শুধু একটি কাপড় নয়, এটি বাংলার শেকড়ের গল্প। এর ইংরেজি নাম জানার পাশাপাশি এই ঐতিহ্য রক্ষায় সচেতন হোন। পরেরবার গামছা কিনতে গিয়ে মনে করুন—এই সাদাসিধে কাপড়টিই বিশ্বে ছড়িয়ে দিচ্ছে বাংলাদেশের পরিচয়!