মুড়ি—বাংলার জনপ্রিয় এই স্ন্যাকসটি ছাড়া চায়ের মজাই যেন অর্ধেক! কিন্তু এই সহজ শব্দটির ইংরেজি কী? রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় পরিচালিত একটি জরিপে দেখা গেছে, ৮০% মানুষ মুড়ির সঠিক ইংরেজি নাম জানেন না। অনেকে বলেন “Fried Rice” বা “Crunchy Rice”, যা সম্পূর্ণ ভুল। চলুন জেনে নিই মুড়ির ইংরেজি নাম, এর উৎপত্তি এবং বিশ্বজুড়ে এর পরিচয়।
মুড়ির ইংরেজি নাম কী?
মুড়ির সঠিক ইংরেজি হলো “Puffed Rice”। চালকে উচ্চ তাপমাত্রায় ভেজে ফুলিয়ে তৈরি করা হয় বলে এই নাম। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে একে “Rice Krispies” বা “Muri” (ভারত, বাংলাদেশে প্রচলিত নাম) বলেও ডাকা হয়।
মুড়ি vs পপকর্ন: পার্থক্য কোথায়?
- মুড়ি:চাল ভেজে বানানো হয়।
- পপকর্ন:ভুট্টার দানা তাপে ফাটিয়ে তৈরি হয়।
উভয়ই স্ন্যাকস, কিন্তু উপাদান ও প্রস্তুত প্রণালী ভিন্ন!
মুড়ির ইতিহাস: বাংলার ঐতিহ্যের অংশ
মুড়ির জন্ম বাংলাদেশ ও পশ্চিমবঙ্গে। কৃষকরা চাল সংরক্ষণের জন্য শুকিয়ে ভেজে মুড়ি বানাতেন। এর সুবিধা হলো—দীর্ঘদিন সংরক্ষণ করা যায়, পুষ্টিগুণ অটুট থাকে। এখনও গ্রামাঞ্চলে সকালের নাশতা বা বাড়তি খাবারে মুড়ি পরিবেশন করা হয়।
পুষ্টিগুণ: স্বাস্থ্যের জন্য ভালো?
- ক্যালোরি কম:এক বাটি মুড়িতে মাত্র ৫০-৬০ ক্যালোরি।
- ফাইবার সমৃদ্ধ:হজমশক্তি বাড়ায়।
- ভিটামিন বি১ ও আয়রন:রক্তস্বল্পতা রোধে সাহায্য করে।
তবে চিনি বা তেল দিয়ে ভাজা মুড়ি বেশি খাওয়া স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর।
বিশ্বজুড়ে মুড়ির কদর
- ভারত:“মুড়ি” নামেই পরিচিত। মুড়ির সঙ্গে নারকেল, পেঁয়াজ মিশিয়ে জ্বাল দেওয়া হয়।
- নেপাল:“চিওরা” নামে খাওয়া হয়, যা টক দই ও মসলার সঙ্গে মেশানো হয়।
- মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র:“Puffed Rice” সিরিয়াল বা এনার্জি বার হিসেবে বিক্রি হয়।
বিশেষজ্ঞদের মতামত
খাদ্য ও পুষ্টিবিদ ড. তানিয়া হক বলেন, “মুড়ি প্রাকৃতিকভাবে ফ্যাট-ফ্রি। তবে বাজারের প্রিজারভেটিভ যুক্ত মুড়ি এড়িয়ে ঘরে বানানো বা নির্ভরযোগ্য ব্র্যান্ড কিনুন। শিশুদের জন্য এটি একটি স্বাস্থ্যকর স্ন্যাকস।”
মজার তথ্য
- বাংলাদেশে বছরে প্রায় ২ লাখ টন মুড়ি উৎপাদন হয়!
- মুড়ি দিয়ে তৈরি হয় মুড়ির মোয়া, মুড়ির কাটলেট, এমনকি আইসক্রিমও।
- ১৯৯০-এর দশকে মুড়ি প্রথম প্যাকেটজাত করে বাজারজাত করে ঢাকার একটি কোম্পানি।
শিশুদের জন্য রেসিপি: মুড়ির চকলেট বল
১. মুড়ি গুঁড়ো করুন।
২. গলানো চকলেট ও মুড়ি মিশিয়ে ছোট বল বানান।
৩. ফ্রিজে ৩০ মিনিট রেখে ঠাণ্ডা করে খান!
উপসংহার
মুড়ি শুধু একটি স্ন্যাকস নয়, বাংলার সংস্কৃতির অংশ। এর ইংরেজি নাম জানার পাশাপাশি এর গুণাগুণ সম্পর্কে সচেতন হোন। পরেরবার চায়ের কাপে মুড়ি ভাজা ধরার সময় মনে করুন—এই ছোট্ট খাবারটিই বিশ্বজুড়ে বাংলার স্বাদ ছড়াচ্ছে!