কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো আগামী কয়েক সপ্তাহের মধ্যে পদত্যাগ করতে যাচ্ছেন বলে দেশটির শীর্ষ গণমাধ্যম সিবিসি ও গ্লোবাল নিউজ–এর প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে। ট্রুডো ২০১৫ সাল থেকে দায়িত্বে থাকায় এই ঘোষণা রাজনৈতিক মহলে বড় আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। যদিও এখনও আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো বিবৃতি দেননি তিনি, তবে গত কয়েক মাস ধরেই তাঁর পদত্যাগের গুঞ্জন শোনা যাচ্ছিল।
কেন এই সিদ্ধান্ত?
সূত্রমতে, ট্রুডোর এই সিদ্ধান্তের পেছনে মূল কারণগুলো হলো:
১. রাজনৈতিক চাপ: গত নির্বাচনে লিবারেল পার্টির আসন কমে যাওয়া এবং জনমত সমর্থনে ধস।
২. ব্যক্তিগত কারণ: পরিবারের সাথে সময় কাটানো ও স্বাস্থ্য বিবেচনা।
৩. দলের অভ্যন্তরীণ অসন্তোষ: কিছু নেতা ট্রুডোর নীতিকে “অতিমাত্রায় উদার” বলে সমালোচনা করছেন।
এক অনামা সূত্র জানায়, “ট্রুডো মনে করেন, দল ও দেশের জন্য নতুন নেতৃত্ব প্রয়োজন। তিনি চান তাঁর উত্তরসূরি পরবর্তী নির্বাচনের প্রস্তুতি নিক।”
কী বলছে লিবারেল পার্টি?
দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপার্সন অ্যানি ফিল্ডিং বলেন, “জাস্টিন কানাডাকে অগ্রগতির পথে নিয়ে এসেছেন। তাঁর সিদ্ধান্ত আমরা সম্মান করি। শীঘ্রই নতুন নেতা নির্বাচনের প্রক্রিয়া শুরু হবে।”
কে হতে পারেন পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী?
লিবারেল পার্টির সম্ভাব্য প্রার্থীদের তালিকায় শীর্ষে রয়েছেন:
- চ্যrystia ফ্রিল্যান্ড (বর্তমান অর্থমন্ত্রী):জনপ্রিয় নেত্রী, অর্থনৈতিক সংকট মোকাবিলায় সফল।
- মার্ক মিলার (স্বাস্থ্যমন্ত্রী):আদিবাসী সম্প্রদায়ের প্রতি তাঁর কাজ প্রশংসিত।
- ওমর আলঘাবরা (পরিবহনমন্ত্রী):যুবসমাজের পছন্দ, প্রযুক্তি খাতে বিনিয়োগের পক্ষে।
ট্রুডোর উত্তরাধিকার
৯ বছর ধরে ক্ষমতায় থাকা ট্রুডোর বিতর্ক ও সাফল্য দুটোই আছে:
- সাফল্য:সমলিঙ্গের বিয়ে বৈধকরণ, কার্বন নিঃসরণ কমানো, কোভিড মহামারি ব্যবস্থাপনা।
- সমালোচনা:চীন ও ভারতের সাথে কূটনৈতিক তিক্ততা, মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থতা।
কানাডিয়ানদের প্রতিক্রিয়া
মন্ট্রিয়ালের বাসিন্দা পিয়েরে ল্যকروا বলেন, “ট্রুডো যুগের শেষ দেখে খুশি নই। তিনি আমাদের গর্ব ছিলেন।”
অন্যদিকে, ক্যালগারির ব্যবসায়ী সারাহ জনসন বলেন, “নতুন নেতা আসুক, অর্থনীতি ঠিক করতে হবে।”
শিশুদের জন্য সহজ ব্যাখ্যা
প্রধানমন্ত্রী মানে দেশের বড় নেতা। জাস্টিন ট্রুডো কাকা অনেক দিন এই কাজ করেছেন। এখন তিনি ছুটি নিতে চান। নতুন একজন কাকা বা আপু আসবেন দেশ চালাতে।
পরবর্তী নির্বাচন কবে?
লিবারেল পার্টি জানিয়েছে, ট্রুডোর পদত্যাগের ৬ মাসের মধ্যে দলীয় নেতা নির্বাচন করা হবে। এরপর সংসদে ভোটের মাধ্যমে নতুন প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হবেন।
আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া
মার্কিন প্রেসিডেন্ট কামালা হ্যারিস বলেন, “জাস্টিন একজন মহান মিত্র ছিলেন। তাঁর সাথে কাজ করে ভালো লেগেছে।”
শেষ কথা:
ট্রুডোর সম্ভাব্য বিদায় কানাডার রাজনীতিতে নতুন অধ্যায়ের সূচনা করবে। তাঁর উত্তরসূরির সামনে চ্যালেঞ্জ হবে অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা ফেরানো এবং বৈশ্বিক সম্পর্ক মেরামত করা।