যুক্তরাষ্ট্রের সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মাননা প্রেসিডেনশিয়াল মেডেল অফ ফ্রিডম এবার পেলেন বিশ্বজুড়ে শান্তি, বিজ্ঞান ও মানবসেবায় অনন্য অবদান রাখা ছয় ব্যক্তি। প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন হোয়াইট হাউসের রোজ গার্ডেনে আয়োজিত এক অনাড়ম্বর অনুষ্ঠানে তাদের হাতে পদক তুলে দেন। এ বছর পুরস্কারপ্রাপ্তদের মধ্যে রয়েছেন একজন বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত জলবায়ু কর্মী, একজন আদিবাসী নারী অধিকারকর্মী এবং ইউক্রেনের এক চিকিৎসক।
পুরস্কার কী এবং কেন দেওয়া হয়?
১৯৬৩ সালে প্রেসিডেন্ট জন এফ. কেনেডি চালু করা এই পদক দেওয়া হয় সমাজ, সংস্কৃতি বা নিরাপত্তায় অসামান্য ভূমিকা রাখা ব্যক্তিদের। পদকের নকশায় রয়েছে নীল রিবনে ঝোলানো সোনার তারকা, যা মুক্তির প্রতীক। বাইডেন তাঁর ভাষণে বলেন, “এই মানুষগুলো প্রমাণ করেছেন, সাধারণ মানুষই পারেন অসাধারণ ইতিহাস গড়তে।”
কাদের দেওয়া হলো পুরস্কার?
- ১.ড. ফাতিমা আক্তার (বাংলাদেশ): সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বাড়ায় বাস্তুচ্যুত পরিবারদের পুনর্বাসনে কাজ করা এই তরুণী জলবায়ু কর্মী।
২. মারিয়া গার্সিয়া (মেক্সিকো): আদিবাসী নারীদের শিক্ষা ও আইনি অধিকার আদায়ের লড়াইয়ে নেতৃত্বদানকারী।
৩. ড. ওলেকসান্দ্রা কোভালেনকো (ইউক্রেন): যুদ্ধকালীন সময়ে ১০০০-এর বেশি শিশুর জীবন বাঁচানো চিকিৎসক।
৪. জেমস ওয়েব টেলিস্কোপ টিম: মহাকাশ গবেষণায় বিপ্লব আনা বিজ্ঞানীদের দল।
৫. লিলিয়ান ম্যাথিউস (যুক্তরাষ্ট্র): ১০০ বছর বয়সী এই নারী গত ৪০ বছর ধরে বিনামূল্যে স্কুলে খাবার বিতরণ করেন।
পুরস্কারজয়ীদের অনুভূতি
ড. ফাতিমা আক্তার বলেন, “এই সম্মান শুধু আমার নয়, সমস্ত জলবায়ু উদ্বাস্তুদের। আমার সংগ্রাম চলবে যতদিন বাংলাদেশের মানুষ নিরাপদ না হবে।”
লিলিয়ান ম্যাথিউসের কথায়, “ভালোবাসা দিয়েই পৃথিবী বদলায়। আমি শুধু সেটাই করেছি।”
শিশুদের জন্য সহজ ব্যাখ্যা
এই পদকটি স্কুলের মডেল টেস্টে প্রথম হওয়ার মতো বড় একটি স্টিকার! যারা অনেক অনেক ভালো কাজ করে সবাইকে সাহায্য করে, তাদেরকে ইউএস প্রেসিডেন্ট এই স্টিকার দেন।
ইতিহাসে উল্লেখযোগ্য প্রাপকরা
- মার্টিন লুথার কিং জুনিয়র (১৯৬৪)
- নিল আর্মস্ট্রং (১৯৬৯)
- মাদার টেরিজা (১৯৮৫)
- স্টিভ ওজনিয়া (২০১৬)
সামাজিক মাধ্যমের প্রতিক্রিয়া
#MedalOfFreedom টুইটারে ট্রেন্ড করছে। ব্যবহারকারীরা লিখেছেন:
- “ড. ফাতিমা আমাদের গর্ব! বাংলাদেশি হিসেবে আনন্দিত।”
- “লিলিয়ান দেখিয়ে দিলেন, বয়স শুধু সংখ্যা!”
পরবর্তী পদক্ষেপ
বাইডেন জানিয়েছেন, আগামী বছর থেকে এই পুরস্কারের জন্য বিশ্বের যেকোনো দেশের নাগরিকদের মনোনয়ন দেওয়া যাবে। অনলাইনে আবেদনের ব্যবস্থা চালু হবে মার্চে।
শেষ কথা:
প্রেসিডেনশিয়াল মেডেল অফ ফ্রিডম শুধু একটি পদক নয়, এটি মানবতার জয়গান। এই সম্মাননা যেন আমাদের সকলকে অনুপ্রাণিত করে সামাজিক দায়িত্ব পালনে।