ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের স্ত্রী জিল বাইডেনকে একটি বিরল ও বিলাসবহুল উপহার দিয়ে সবাইকে চমকে দিয়েছেন। এই উপহারটি হলো ২৪ ক্যারাট সোনা ও হীরায় খচিত একটি ঐতিহ্যবাহী ময়ূর আকৃতির প্যাগোডা (মন্দিরের মডেল), যা তৈরি করতে সময় লেগেছে ৯ মাস এবং এর মূল্য প্রায় ১৫ কোটি টাকা (১.৮ মিলিয়ন ডলার)। ভারত-মার্কিন কূটনৈতিক সম্পর্কের ৭৫ বছর পূর্তি উপলক্ষে এই সফরে জিল বাইডেনকে স্বাগত জানাতেই এই উপহার দেওয়া হয়।
উপহারটির বিশেষত্ব
- নকশা:রাজস্থানের কারিগরদের হাতে তৈরি, ১০০ কেজি ওজনের সোনার পাতায় মোড়ানো।
- প্রতীকী অর্থ:ময়ূর ভারতের গরিমা ও সৌন্দর্যের প্রতীক, প্যাগোডা শান্তির বার্তাবাহক।
- ইতিহাস:মুঘল সম্রাট শাহজাহানও এরকম ময়ূর সিংহাসন ব্যবহার করতেন।
কেন এই উপহার?
মোদি বলেন, “ভারত ও আমেরিকার বন্ধুত্ব অমূল্য। জিল বাইডেন শিক্ষা ও নারী ক্ষমতায়নে কাজ করেন। এই উপহার আমাদের সংস্কৃতি আর তাঁর কাজের প্রতি শ্রদ্ধার প্রতীক।”
সূত্র মতে, জিল বাইডেনের শখ পুরনো স্থাপত্য সংগ্রহ করা। তাঁর ব্যক্তিগত সংগ্রহে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের শিল্পকর্ম রয়েছে।
জিল বাইডেনের প্রতিক্রিয়া
উপহার পেয়ে আবেগপ্রবণ জিল বলেন, “এটা আমার জীবনের সবচেয়ে সুন্দর উপহার। ভারতের শিল্পীদের প্রতি আমার শ্রদ্ধা।” তিনি টুইটারে মোদির হাতের লেখা একটি চিঠিও শেয়ার করেছেন, যাতে লেখা ছিল: “শান্তি ও প্রজ্ঞার পথে হাঁটুন।”
বিশেষজ্ঞদের বিশ্লেষণ
কূটনৈতিক সম্পর্ক বিশেষজ্ঞ ড. অর্ণব সেনগুপ্ত বলেন, “এই উপহার শুধু ব্যক্তিগত নয়, বরং দুই দেশের সম্পর্ককে আরও গভীর করার চেষ্টা। বাইডেন প্রশাসনের সাথে ভারতের বাণিজ্য ও প্রতিরক্ষা চুক্তি বাড়বে বলে ইঙ্গিত।”
উপহারের দাম নিয়ে বিতর্ক?
কিছু সমালোচক বলছেন, এত দামি উপহার দেওয়া ঠিক নয়, যখন ভারতের অনেক মানুষ দারিদ্র্যে ভুগছে। তবে সরকারি মুখপাত্র রঞ্জিৎ কুমার জবাব দেন, “এটি সাংস্কৃতিক বিনিময়ের অংশ। কারিগরদের কাজকে বিশ্বে তুলে ধরাই লক্ষ্য।”
শিশুদের জন্য সহজ ব্যাখ্যা
মোদি কাকা জিল কাকিমাকে একটি সোনার ময়ূর দিয়েছেন, যা দেখতে খুব সুন্দর। এই ময়ূরটি ভারতের শিল্পীদের হাতে তৈরি। এটা দিয়ে বোঝানো হয়েছে, দুটি দেশের বন্ধুত্ব যেন ময়ূরের মতো রঙিন হয়!
সামাজিক মাধ্যমের প্রতিক্রিয়া
টুইটারে #GoldenPeacock ট্রেন্ড করছে। একজন ইউজার লিখেছেন, “উপহারটা দারুণ, কিন্তু গরিব মানুষের জন্য কিছু করলে ভালো হতো।” অন্যজন মজা করে লিখেছেন, “মোদির গিফ্ট গেম এত স্ট্রং কেন?”
আগামী পদক্ষেপ
এই সফরের পর জিল বাইডেন ভারতের দুটি স্কুল ও নারী উদ্যোক্তা প্রকল্প পরিদর্শন করবেন। উভয় দেশের মধ্যে শিক্ষা ও স্বাস্থ্য খাতে নতুন চুক্তি সই হতে পারে।
শেষ কথা:
মোদির এই উপহার ভারতের ঐতিহ্যবাহী শিল্পকে বিশ্বে পরিচিত করলেও সমাজে বিতর্কের জন্ম দিয়েছে। এখন দেখার বিষয়, এই ধরনের কূটনৈতিক Gesture (ইশারা) ভবিষ্যতে সম্পর্ককে কতটা মজবুত করে।