ঢাকা , শনিবার, ১০ মে ২০২৫, ২৭ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শিরোনামঃ
“মডেল মেঘনা আলম কেন পুলিশ হেফাজতে? জানালেন পুলিশ কর্মকর্তা” “মুঠোফোন চেয়ে নারীর হাতে অজ্ঞান যুবক, লুট ১ লাখ টাকা” কানটুপি পরে নামাজ আদায় করা যাবে কি? ইসলাম কী বলে? ইসলামে ঐক্যের গুরুত্ব: কোরআন-হাদিসের আলোকে সমাজ গঠনের মূলমন্ত্র দাফনের পর সম্মিলিত দোয়া: ইসলামের নির্দেশনা কী? ফরজ গোসল ছাড়াই সেহরি খাওয়া যাবে? জেনে নিন ইসলামি বিধান ইস্তেখারার দোয়া দেখে পড়া যাবে কি? জেনে নিন ইসলামের নির্দেশনা কেটে ফেলা চুল-নখ কোথায় ফেলবেন? ধর্ম, সংস্কৃতি ও পরিবেশবান্ধব সমাধান সূর্যাস্তের সময় তাওয়াফের নামাজ আদায় করা যাবে? ইসলামিক স্কলারদের ব্যাখ্যা মৃত বাবা-মাকে স্বপ্নে দেখলে যা করবেন: মনোবিদ ও ধর্মীয় বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ
নোটিশঃ
সকাল হোক সত্য খবর দিয়ে । দেশ - বিদেশের সর্বশেষ খবর সবার আগে পেতে সকালের বার্তা এর সাথেই থাকুন ।

৩২ বছর ধরে গোসল ছেড়ে বিশ্বরেকর্ড ভারতীয় সাধক গঙ্গাপুরির

ভারতের হরিদ্বারে এক সন্ন্যাসীর অস্বাভাবিক সাধনা চোখ কপালে তুলেছে। ৬৫ বছরের সাধক স্বামী গঙ্গাপুরি দাবি করেছেন, গত ৩২ বছর ধরে তিনি একবারও গোসল করেননি। তাঁর এই ‘অবিশ্বাস্য’ সিদ্ধিকে আধ্যাত্মিক সাধনার অংশ বলে দাবি করলেও স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা এটিকে ঝুঁকিপূর্ণ বলে উল্লেখ করেছেন। গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসে আবেদন করা হয়েছে এই কীর্তিকে স্বীকৃতি দেওয়ার জন্য।

কেন গোসল ছাড়লেন?

গঙ্গাপুরির ভাষায়, “১৯৯৩ সালে গুরুদেবের নির্দেশে আমি শরীরের ময়লা ত্যাগ করি। মাটির স্পর্শই আমার শুদ্ধির উপায়। গঙ্গা মায়ের আশীর্বাদে কোনো রোগ হয়নি।” তিনি দাবি করেন, গোমূত্র ও গোবরের প্রলেপ দিয়ে শরীর পরিষ্কার রাখেন।

কীভাবে কাটে তাঁর দিন?

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে:

  • সকাল:গঙ্গা নদীর পাড়ে ধ্যান ও মন্ত্র জপ।
  • দুপুর:ভিক্ষা করে খাদ্য সংগ্রহ।
  • রাত:মাটির তৈরি কুটিরে ঘুমান।
  • স্বাস্থ্য রক্ষা:নিমপাতা চিবানো, সূর্যতাপে শরীর শুকানো।

স্থানীয়দের প্রতিক্রিয়া

হরিদ্বারের বাসিন্দা রমেশ শর্মা বলেন, “তাঁকে দেখে ভয় লাগে, কিন্তু শ্রদ্ধাও হয়। গঙ্গা মায়ের প্রতি এতটা ভক্তি সত্যিই বিরল।” তবে তরুণী প্রিয়া সিং বলেন, “এটা অস্বাস্থ্যকর। ধর্মের নামে অন্ধ বিশ্বাস নয়, বিজ্ঞান মানতে হবে।”

ডাক্তারদের সতর্কতা

দিল্লির চর্মরোগ বিশেষজ্ঞ ডা. রাজীব মালহোত্রা বলেন, “৩২ বছর গোসল না করলে ত্বকে ব্যাকটেরিয়া জমে সংক্রমণ, চুলকানি এমনকি ক্যান্সারের ঝুঁকি থাকে। গোবর জীবাণু ছড়াতে পারে।”

গিনেস রেকর্ডের দাবি

গঙ্গাপুরির শিষ্যরা জানান, গিনেস কর্তৃপক্ষের কাছে প্রমাণ হিসেবে পাঠানো হয়েছে:

  • স্থানীয় গণমাধ্যমের ১৯৯৩ সালের রিপোর্ট।
  • হরিদ্বার পৌরসভার স্বাস্থ্য রেকর্ড।
  • ১০০ জন প্রত্যক্ষদর্শীর সাক্ষ্য।

শিশুদের জন্য সহজ ব্যাখ্যা

গঙ্গাপুরি কাকু মনে করেন, গোসল না করলেই তিনি ঈশ্বরের কাছাকাছি থাকতে পারেন। কিন্তু ডাক্তার কাকুরা বলছেন, নিয়মিত সাবান-পানি দিয়ে গোসল করা জরুরি, নইলে শরীরে জীবাণু হয়!

সামাজিক মাধ্যমের প্রতিক্রিয়া

টিকটকে #NoBathChallenge ট্রেন্ড করছে। কেউ কেউ তাঁকে ‘সাধু’ বলছে, কেউ ‘পাগল’। এক ইউজার লিখেছেন, “রেকর্ড ভাঙুন, কিন্তু স্বাস্থ্য নষ্ট করবেন না।”

গঙ্গাপুরির বার্তা

“আমার পথ সবার জন্য নয়। কিন্তু যারা সত্যি সত্যি ধর্মের পথে হাঁটতে চান, তারা লোভ-ভোগ ত্যাগ করুন।”

শেষ কথা:
গঙ্গাপুরির এই সাধনা সমাজে বিতর্ক ও কৌতূহলের জন্ম দিয়েছে। ধর্মীয় বিশ্বাস আর বৈজ্ঞানিক বাস্তবতার দ্বন্দ্ব এখানে স্পষ্ট। তবে, তাঁর রেকর্ড স্বীকৃতি পেলে তা হবে মানবসাধ্যতার আবার চরম উদাহরণ।

আপলোডকারীর তথ্য

মিজানুর রহমান হৃদয়

মিজানুর রহমান হৃদয় বাংলাদেশের একজন তরুন লেখক, তিনি এখন পর্যন্ত ৪ টি বই প্রকাশ করেছেন । ২০১৭ থেকে ২০২৫ চলতি বছর সে বেশ কিছু পত্র - পত্রিকায় কাজ করে আসছেন । আর আমাদের সকালের বার্তা'র বিশেষ প্রতিনিধি হিসেবেও কাজ করছেন ।
জনপ্রিয় বার্তা

“মডেল মেঘনা আলম কেন পুলিশ হেফাজতে? জানালেন পুলিশ কর্মকর্তা”

৩২ বছর ধরে গোসল ছেড়ে বিশ্বরেকর্ড ভারতীয় সাধক গঙ্গাপুরির

আপডেট সময় ০৩:৪১:৩৪ অপরাহ্ন, শনিবার, ৪ জানুয়ারী ২০২৫

ভারতের হরিদ্বারে এক সন্ন্যাসীর অস্বাভাবিক সাধনা চোখ কপালে তুলেছে। ৬৫ বছরের সাধক স্বামী গঙ্গাপুরি দাবি করেছেন, গত ৩২ বছর ধরে তিনি একবারও গোসল করেননি। তাঁর এই ‘অবিশ্বাস্য’ সিদ্ধিকে আধ্যাত্মিক সাধনার অংশ বলে দাবি করলেও স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা এটিকে ঝুঁকিপূর্ণ বলে উল্লেখ করেছেন। গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসে আবেদন করা হয়েছে এই কীর্তিকে স্বীকৃতি দেওয়ার জন্য।

কেন গোসল ছাড়লেন?

গঙ্গাপুরির ভাষায়, “১৯৯৩ সালে গুরুদেবের নির্দেশে আমি শরীরের ময়লা ত্যাগ করি। মাটির স্পর্শই আমার শুদ্ধির উপায়। গঙ্গা মায়ের আশীর্বাদে কোনো রোগ হয়নি।” তিনি দাবি করেন, গোমূত্র ও গোবরের প্রলেপ দিয়ে শরীর পরিষ্কার রাখেন।

কীভাবে কাটে তাঁর দিন?

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে:

  • সকাল:গঙ্গা নদীর পাড়ে ধ্যান ও মন্ত্র জপ।
  • দুপুর:ভিক্ষা করে খাদ্য সংগ্রহ।
  • রাত:মাটির তৈরি কুটিরে ঘুমান।
  • স্বাস্থ্য রক্ষা:নিমপাতা চিবানো, সূর্যতাপে শরীর শুকানো।

স্থানীয়দের প্রতিক্রিয়া

হরিদ্বারের বাসিন্দা রমেশ শর্মা বলেন, “তাঁকে দেখে ভয় লাগে, কিন্তু শ্রদ্ধাও হয়। গঙ্গা মায়ের প্রতি এতটা ভক্তি সত্যিই বিরল।” তবে তরুণী প্রিয়া সিং বলেন, “এটা অস্বাস্থ্যকর। ধর্মের নামে অন্ধ বিশ্বাস নয়, বিজ্ঞান মানতে হবে।”

ডাক্তারদের সতর্কতা

দিল্লির চর্মরোগ বিশেষজ্ঞ ডা. রাজীব মালহোত্রা বলেন, “৩২ বছর গোসল না করলে ত্বকে ব্যাকটেরিয়া জমে সংক্রমণ, চুলকানি এমনকি ক্যান্সারের ঝুঁকি থাকে। গোবর জীবাণু ছড়াতে পারে।”

গিনেস রেকর্ডের দাবি

গঙ্গাপুরির শিষ্যরা জানান, গিনেস কর্তৃপক্ষের কাছে প্রমাণ হিসেবে পাঠানো হয়েছে:

  • স্থানীয় গণমাধ্যমের ১৯৯৩ সালের রিপোর্ট।
  • হরিদ্বার পৌরসভার স্বাস্থ্য রেকর্ড।
  • ১০০ জন প্রত্যক্ষদর্শীর সাক্ষ্য।

শিশুদের জন্য সহজ ব্যাখ্যা

গঙ্গাপুরি কাকু মনে করেন, গোসল না করলেই তিনি ঈশ্বরের কাছাকাছি থাকতে পারেন। কিন্তু ডাক্তার কাকুরা বলছেন, নিয়মিত সাবান-পানি দিয়ে গোসল করা জরুরি, নইলে শরীরে জীবাণু হয়!

সামাজিক মাধ্যমের প্রতিক্রিয়া

টিকটকে #NoBathChallenge ট্রেন্ড করছে। কেউ কেউ তাঁকে ‘সাধু’ বলছে, কেউ ‘পাগল’। এক ইউজার লিখেছেন, “রেকর্ড ভাঙুন, কিন্তু স্বাস্থ্য নষ্ট করবেন না।”

গঙ্গাপুরির বার্তা

“আমার পথ সবার জন্য নয়। কিন্তু যারা সত্যি সত্যি ধর্মের পথে হাঁটতে চান, তারা লোভ-ভোগ ত্যাগ করুন।”

শেষ কথা:
গঙ্গাপুরির এই সাধনা সমাজে বিতর্ক ও কৌতূহলের জন্ম দিয়েছে। ধর্মীয় বিশ্বাস আর বৈজ্ঞানিক বাস্তবতার দ্বন্দ্ব এখানে স্পষ্ট। তবে, তাঁর রেকর্ড স্বীকৃতি পেলে তা হবে মানবসাধ্যতার আবার চরম উদাহরণ।