স্ট্রোক যে কারও হতে পারে, যে কোনো সময়। তবে এটি একদম হঠাৎ করে আসে না—শরীর আগে থেকেই কিছু সংকেত দেয়। চিকিৎসকদের মতে, নিচের ৬টি লক্ষণ দেখা গেলে সতর্ক হওয়া জরুরি। জেনে নিন, কীভাবে বুঝবেন বিপদ ঘনিয়ে আসছে।
১. মুখ বা হাত-পা অবশ হয়ে যাওয়া
- লক্ষণ:মুখের একপাশ ঝুলে যাওয়া, হাত বা পায়ে অসাড়তা।
- পরীক্ষা:হাসতে বলুন—যদি মুখের একপাশ নড়তে না পারে, তাৎক্ষণিক চিকিৎসা নিন।
২. ঝাপসা বা দৃষ্টিশক্তি হারানো
- লক্ষণ:এক বা দুচোখে অন্ধকার দেখা, দৃষ্টি ঘোলাটে হয়ে যাওয়া।
- উদাহরণ:টিভির পর্দা হঠাৎ দ্বিগুণ বা কাঁটাচামচ ধরতে গিয়ে মিস করতে থাকেন।
৩. কথা জড়িয়ে যাওয়া বা বোঝা যাচ্ছে না
- লক্ষণ:জিহ্বা জড়িয়ে কথা বলা, শব্দ গুলিয়ে ফেলা।
- পরীক্ষা:একটি সহজ বাক্য বলুন, যেমন “আজ আকাশ পরিষ্কার”—যদি বলতে বা বুঝতে সমস্যা হয়, সতর্ক হোন।
৪. মাথা ঘোরা বা ভারসাম্য হারানো
- লক্ষণ:হঠাৎ করে মাথা ঘুরে পড়ে যাওয়া, হাঁটতে গিয়ে ডগমগ করা।
- উদাহরণ:সিঁড়ি ভাঙতে গিয়ে ধরে রাখতে হয়, নইলে পড়ে যাওয়ার ভয়।
৫. তীব্র মাথাব্যথা (আকস্মিক ও অস্বাভাবিক)
- লক্ষণ:জীবনের সবচেয়ে ভয়ানক মাথাব্যথা, যেন কেউ মাথায় ঘুষি মারছে।
- সতর্কতা:মাইগ্রেনের ব্যথার সাথে গুলিয়ে ফেলবেন না। এই ব্যথায় বমিও হতে পারে।
৬. একপাশে দুর্বলতা বা শক্তি কমে যাওয়া
- লক্ষণ:ডান বা বাম হাত-পা তুলতে না পারা, জিনিস বারবার পড়ে যাওয়া।
- পরীক্ষা:দুহাত সামনে তুলে ১০ সেকেন্ড রাখুন—যদি একহাত নিচে নেমে আসে।
কী করবেন এই লক্ষণ দেখা গেলে?
- দ্রুত ডাকুন অ্যাম্বুলেন্স:স্ট্রোকের চিকিৎসা সময়ের সঙ্গে প্রতিযোগিতা।
- ওষুধ খাবেন না:নিজে থেকে এসপিরিন বা রক্ত পাতলা করার ওষুধ এড়িয়ে চলুন।
- শুয়ে রাখুন:রোগীকে একপাশ কাত করে শুইয়ে দিন, জোর করে খাওয়াবেন না।
শিশুদের জন্য সহজ ব্যাখ্যা
মস্তিষ্কের ভেতরে রক্ত চলাচল বন্ধ হয়ে গেলেই স্ট্রোক হয়। যেমন—নদীর পানি বন্ধ হলে মাছ মারা যায়, তেমনি রক্ত না পেলে মস্তিষ্কের কোষ নষ্ট হয়। তাই উপরের লক্ষণ দেখলেই বড়দের ডাকো!
স্ট্রোক এড়াতে প্রতিদিন যা করবেন
- রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ:সপ্তাহে একবার প্রেসার মাপুন।
- ধূমপান ছাড়ুন:সিগারেট রক্তনালী সরু করে দেয়।
- হাঁটুন দিনে ৩০ মিনিট:সপ্তাহে ৫ দিন ব্যায়াম করুন।
সতর্কবার্তা:
এই লক্ষণগুলো দেখা মানেই স্ট্রোক হবেই তা নয়, কিন্তু এগুলো উপেক্ষা করা যাবে না। দ্রুত হাসপাতালে যান—প্রতিটি মিনিট মূল্যবান!