হাঁটতে হাঁটতে, ঘুমানোর সময় বা খেলাধুলার মাঝে হঠাৎ পায়ের রগে বা পেশিতে টান (ক্র্যাম্প) ধরলে ব্যথায় কুঁকড়ে যেতে হয়। এই সমস্যা থেকে তাৎক্ষণিক মুক্তির উপায় ও প্রতিরোধের টিপস জানাচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা।
তৎক্ষণাৎ যা করবেন
১. ব্যথার জায়গা স্ট্রেচ করুন:
- পায়ের রগে টান ধরলে সোজা হয়ে বসুন। পা সামনের দিকে টেনে ধরে পায়ের আঙুলগুলো হাত দিয়ে উপরের দিকে টানুন (নিজের দিকে)।
- উরুর পেশিতে টান ধরলে সোজা হয়ে দাঁড়িয়ে হাত দিয়ে পায়ের গোড়ালি ধরে পিঠের দিকে টানুন।
২. হালকা মালিশ: আক্রান্ত স্থানে হাতের তালু দিয়ে গোলগালে মালিশ করুন। লবণ মিশানো সর্ষের তেল ব্যবহার করলে আরাম পাবেন।
৩. গরম বা ঠাণ্ডা সেক:
- প্রথম ১০ মিনিট বরফ বা ঠাণ্ডা পানির সেঁক দিন (ব্যথা কমবে)।
- এরপর গরম পানির বোতল বা গরম তোয়ালে সেঁক দিন (পেশি শিথিল হবে)।
৪. হাঁটুন বা নড়াচড়া করুন: আস্তে আস্তে হাঁটলে পেশিতে রক্ত চলাচল বাড়ে, ব্যথা কমে।
কেন হয় পেশিতে টান?
- ডিহাইড্রেশন:পর্যাপ্ত পানি না খাওয়া।
- মিনারেলের অভাব:ক্যালসিয়াম, পটাশিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম কম থাকলে।
- অতিরিক্ত ব্যায়াম:পেশি ক্লান্ত হয়ে গেলে।
- গর্ভাবস্থা:ওজন বেড়ে গিয়ে পায়ে চাপ পড়ে।
টান এড়াতে কী করবেন?
- পানি খান:দিনে ৮-১০ গ্লাস পানি পান করুন।
- কলা খান:পটাশিয়ামের ঘাটতি পূরণ করে।
- ব্যায়ামের আগে ওয়ার্ম আপ:পেশি প্রস্তুত না করে কঠিন ব্যায়াম করবেন না।
- নিয়মিত স্ট্রেচিং:প্রতিদিন সকালে ১০ মিনিট পা-হাত স্ট্রেচ করুন।
শিশুদের জন্য সহজ টিপস
- পায়ে টান ধরলে কান্না না করে বাবা-মাকে ডাকো।
- আস্তে আস্তে পা নড়াচড়া করো, যেমন পায়ের আঙুল দিয়ে আকাশ ছুঁতে চেষ্টা করো!
- স্কুল ব্যাগে এক টুকরো ডার্ক চকলেট রাখো—ম্যাগনেশিয়াম আছে, টান কমাবে।
কখন ডাক্তার দেখাবেন?
- ব্যথা ১ ঘণ্টার বেশি থাকলে।
- পেশি ফুলে গেলে বা লাল হয়ে গেলে।
- বারবার টান ধরলে (সপ্তাহে ৩-৪ বার)।
বিশেষজ্ঞের পরামর্শ:
ফিজিওথেরাপিস্ট ডা. সুমাইয়া আহমেদ বলেন, “পেশিতে টান মানেই শরীর সংকেত দিচ্ছে—আমাকে যত্ন নিন! পানি, পুষ্টিকর খাবার আর ব্যায়ামের ভারসাম্য রাখুন।”
শেষ কথা:
পেশিতে টান ধরা স্বাভাবিক, কিন্তু উপেক্ষা করলে জটিলতা বাড়ে। এই সহজ টিপস মেনে চললে ব্যথামুক্ত থাকবেন আপনি!