পবিত্র রমজান মাসের প্রথম ১৫ দিনে প্রবাসী বাংলাদেশিরা দেশে পাঠিয়েছেন ২০ হাজার কোটি টাকা! বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, ১ থেকে ১৫ মার্চ পর্যন্ত এই রেমিট্যান্স এসেছে মূলত সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত (ইউএই), ও যুক্তরাষ্ট্র থেকে। গত বছরের একই সময়ের তুলনায় এ বছর রেমিট্যান্সের পরিমাণ ২৫% বেড়েছে।
কোথা থেকে কত টাকা এসেছে?
- সৌদি আরব:৮,২০০ কোটি টাকা (মোটের ৪১%)
- সংযুক্ত আরব আমিরাত:৫,৩০০ কোটি টাকা (২৬.৫%)
- যুক্তরাষ্ট্র:৩,১০০ কোটি টাকা (১৫.৫%)
- অন্যান্য দেশ:৩,৪০০ কোটি টাকা (১৭%)
বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আব্দুর রউফ তালুকদার বলেন,
“রমজানে প্রবাসীরা পরিবারের জন্য বেশি টাকা পাঠান। সরকারের প্রণোদনা ও ব্যাংকগুলোর বিশেষ অফারও এই সাফল্যের পেছনে কাজ করেছে।”
রেমিট্যান্স বৃদ্ধির কারণ
১. প্রবাসীদের বাড়তি আয়: রমজানে মধ্যপ্রাচ্যে ওভারটাইম কাজের সুযোগ বেড়ে যায়।
২. প্রণোদনা: রেমিট্যান্সে ২.৫% প্রণোদনা ও দ্রুত টাকা পাঠানোর সুবিধা।
৩. ডিজিটাল লেনদেন: মোবাইল ব্যাংকিং ও অনলাইন প্ল্যাটফর্মে টাকা পাঠানো সহজ হয়েছে।
টাকার ব্যবহার
- ঈদ প্রস্তুতি:নতুন জামা-কাপড়, খাবার, ও পরিবারের জন্য উপহার কেনা।
- কৃষি ও ব্যবসা:গ্রামের বাড়িতে ধান চাষ, গরু কেনা বা ছোট দোকান বাড়ানো।
- সঞ্চয়:ব্যাংকে ডলার রেট ভালো থাকায় অনেকেই টাকা জমা রাখছেন।
গ্রামের মানুষের প্রতিক্রিয়া
নোয়াখালীর বাসিন্দা জোবেদা বেগম বলেন,
“ছেলে সৌদি থেকে ২ লাখ টাকা পাঠিয়েছে। এবার ঈদে নতুন কাপড় কিনতে পারব। বাড়িও মেরামত করাব।”
রংপুরের কৃষক শরিফুল ইসলাম বলেন,
“ভাই আমেরিকা থেকে টাকা পাঠিয়েছে। সেই টাকায় নতুন লাঙ্গল কিনে জমি চাষ করব।”
সরকারি পদক্ষেপ
- ডলারের উচ্চ মূল্য:রেমিট্যান্সকারীদের জন্য প্রতি ডলারে ১০৯ টাকা দেওয়া হচ্ছে।
- দ্রুত লেনদেন:টাকা ৩০ মিনিটের মধ্যে পৌঁছানোর নিশ্চয়তা দিচ্ছে ব্যাংকগুলো।
- জরুরি হেল্পলাইন:প্রবাসীরা ১৬৪৩৭ নম্বরে ফোন করে যেকোনো সমস্যার সমাধান পাবেন।
ভবিষ্যৎ লক্ষ্য
বাংলাদেশ ব্যাংক আশা করছে, ২০২৫ সালের মার্চে মোট রেমিট্যান্স ৪০ হাজার কোটি টাকা ছাড়াবে। এ জন্য মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুর ও কানাডায় বিশেষ ক্যাম্পেইন চালানো হবে।
শেষ কথা
প্রবাসীদের এই টাকা দেশের অর্থনীতির জন্য অক্সিজেনের মতো। রমজানের পবিত্রতায় তাদের এই অবদান যেমন ধর্মীয় সওয়াব বয়ে আনে, তেমনি দেশকেও এগিয়ে নেয়।
যোগাযোগ:
- বাংলাদেশ ব্যাংক রেমিট্যান্স ডেস্ক: ১৬৪৩৭ | ওয়েবসাইট:bb.org.bd
- প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়: ০২-৫৫০০০০৪৪