গতকাল ১১ এপ্রিল ২০২৫ তারিখে জনপ্রিয় মডেল ও অভিনেত্রী মেঘনা আলমকে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। একটি মামলার প্রেক্ষিতে তাকে আটকের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন পুলিশের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা। তবে, কেন তাকে হেফাজতে নেওয়া হলো—এ প্রশ্নের জবাবে পুলিশ বলছে, “তদন্ত চলাকালে বিস্তারিত জানানো সম্ভব নয়।”
ঘটনার পটভূমি:
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, সম্প্রতি রাজধানীর গুলশানে এক বিলাসবহুল হোটেলে আয়োজিত একটি পার্টিতে মাদকসহ নিষিদ্ধ উপকরণ ব্যবহারের অভিযোগ উঠেছে। ওই পার্টিতে মেঘনা আলমসহ কয়েকজন তারকা উপস্থিত ছিলেন বলে দাবি করা হচ্ছে। এরই ধারাবাহিকতায় গতকাল সকালে মেঘনার বাসা থেকে তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডিএমপির গোয়েন্দা শাখা নিয়ে যায়। পরে তাকে হেফাজতে রাখা হয়।
পুলিশের আনুষ্ঠানিক বিবৃতি:
ডিএমপির উপ-পুলিশ কমিশনার (মিডিয়া) ফারুক হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, “মাদক নিয়ন্ত্রণ আইন ও বিশেষ ক্ষমতা আইনের ধারায় মামলাটির তদন্ত চলছে। মেঘনা আলমকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আনা হয়েছে। প্রয়োজনীয় প্রমাণ পাওয়া গেলে আদালতে চার্জশিট দেওয়া হবে।” তিনি আরও যোগ করেন, “আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থেকে আমরা কাজ করছি।”
মেঘনার পরিবার ও আইনজীবীর প্রতিক্রিয়া:
মেঘনা আলমের পরিবারের পক্ষ থেকে আইনজীবী অ্যাডভোকেট সাইফুল ইসলাম বলেন, “এটি একটি ষড়যন্ত্রমূলক মামলা। মেঘনাকে হয়রানি করার উদ্দেশ্যে এই অভিযোগ আনা হয়েছে। আমরা দ্রুত জামিনের আবেদন করব।” পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, গত কয়েক মাসে মেঘনা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিতর্কিত কিছু পোস্ট শেয়ার করায় তাকে লক্ষ্য করে হুমকি আসছিল।
সামাজিক মাধ্যমের প্রতিক্রিয়া:
মেঘনার আটকের খবরটি সামাজিক মাধ্যম তোলপাড় তৈরি করেছে। একদল ব্যবহারকারী পুলিশের সিদ্ধান্তকে সমর্থন জানালে, অন্যরা প্রশ্ন তুলেছেন—”প্রমাণ ছাড়া একজন নারী মডেলকে হেফাজতে নেওয়া কি ন্যায্য?” টুইটারে #JusticeForMeghna ট্রেন্ড করছে। তার এক ভক্ত লিখেছেন, “মেঘনা আপু নির্দোষ, তাকে মুক্ত করুন!”
বিশেষজ্ঞদের পর্যবেক্ষণ:
আইন বিশেষজ্ঞ ড. তাসনিম আহমেদ বলেন, “পুলিশের হেফাজতে রাখার নিয়ম আছে। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে আদালতে প্রেরণ বা জামিনের আবেদন করতে হবে। তদন্তে স্বচ্ছতা জরুরি, যাতে কোনো পক্ষই হয়রানির শিকার না হয়।”
আগামী পদক্ষেপ:
পুলিশ সূত্র জানায়, মেঘনাকে আজ (১২ এপ্রিল) আদালতে উপস্থাপন করা হতে পারে। এদিকে, তার আইনজীবী দল জামিনের প্রস্তুতি নিচ্ছেন।
শেষ কথা:
এই ঘটনায় পুলিশ, মিডিয়া ও সাধারণ মানুষের মধ্যে নানা প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। তদন্ত যত দ্রুত শেষ হবে, ততই জনগণের আস্থা বাড়বে।