সরকারের নতুন ঘোষণা অনুযায়ী, চলতি জানুয়ারি মাসে তরল পেট্রোলিয়াম গ্যাস (এলপিজি) সিলিন্ডারের দাম অপরিবর্তিত রাখা হয়েছে। এই সিদ্ধান্তের ফলে বাড়িঘরে রান্না থেকে শুরু করে ছোট ব্যবসায়ীরা স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেছেন। বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি) আজ এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানির দাম স্থিতিশীল থাকায় এবং সরকারের ভর্তুকি অব্যাহত রাখার কারণে এলপিজির মূল্য বাড়ানো হচ্ছে না।
কী আছে ঘোষণায়?
বিইআরসির চেয়ারম্যান ড. নুরুল আমিন বলেন, “বর্তমানে ১২ কেজির সিলিন্ডারের দাম ১,৩০০ টাকা এবং ৫ কেজির মিনি সিলিন্ডার ৫৫০ টাকায় বিক্রি হবে। আগামী মাসেও এই দাম কার্যকর থাকবে।” তিনি আরও যোগ করেন, আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানির দাম বাড়লেও সরকার ভোক্তাদের স্বার্থে ভর্তুকি দিচ্ছে।
দাম স্থিতিশীল রাখার কারণ
জ্বালানি বিশেষজ্ঞরা বলছেন, তিনটি প্রধান কারণে দাম বাড়ানো হয়নি:
১. আন্তর্জাতিক বাজার স্থিতিশীল: গত তিন মাসে বিশ্ববাজারে এলপিজির দাম উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন হয়নি।
২. সরকারি ভর্তুকি: নিম্ন ও মধ্য আয়ের মানুষের চাপ কমাতে প্রতি সিলিন্ডারে ২০০ টাকা ভর্তুকি দেওয়া হচ্ছে।
৩. পরিবহন খরচ কমানো: সমুদ্রপথে জ্বালানি আমদানির ক্ষেত্রে শুল্ক হ্রাস করা হয়েছে।
সাধারণ মানুষের প্রতিক্রিয়া
ঢাকার মোহাম্মদপুরের বাসিন্দা গৃহিণী সেলিনা আক্তার বলেন, “গ্যাসের দাম বাড়লে সংসার চালানো কঠিন হয়ে যেত। স্কুলে পড়া দুই মেয়ের টিফিনের খরচ বাঁচল।”
রিকশাচালক মো. জাহাঙ্গীর বলেন, “মিনি সিলিন্ডার দাম না বাড়ায় রাতের হোটেলে সস্তায় খেতে পারব।”
এলপিজি সিলিন্ডারের বর্তমান দাম
- ১২ কেজি সিলিন্ডার:১,৩০০ টাকা (প্রতিটি)
- ৫ কেজি মিনি সিলিন্ডার:৫৫০ টাকা
- ৩৫ কেজি কমার্শিয়াল সিলিন্ডার:৩,২০০ টাকা
সতর্কবার্তা: নকল সিলিন্ডার সচেতনতা
বিইআরসি ভোক্তাদের সতর্ক করে দিয়ে বলেছে, কোনো বিক্রেতা যদি বেশি দাম চান, তাহলে হটলাইন নম্বর ১৬১০০-এ অভিযোগ জানাতে হবে। এছাড়া, ওজন কম দেওয়া বা নিম্নমানের গ্যাস বিক্রির বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা
জ্বালানি মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, আগামী তিন মাসের মধ্যে দেশের প্রতিটি উপজেলায় “এলপিজি ডিস্ট্রিবিউশন সেন্টার” চালু করা হবে। এর ফলে গ্রামাঞ্চলের মানুষও সহজে সিলিন্ডার পাবেন।
শেষ কথা:
এলপিজির দাম স্থিতিশীল রাখার এই সিদ্ধান্ত সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রার চাপ কমাতে সাহায্য করবে। তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, জ্বালানির দীর্ঘমেয়াদি নিরাপত্তার জন্য নবায়নযোগ্য শক্তির উৎসের দিকেও নজর দেওয়া জরুরি।