ঢাকা , শনিবার, ১০ মে ২০২৫, ২৭ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শিরোনামঃ
“মডেল মেঘনা আলম কেন পুলিশ হেফাজতে? জানালেন পুলিশ কর্মকর্তা” “মুঠোফোন চেয়ে নারীর হাতে অজ্ঞান যুবক, লুট ১ লাখ টাকা” কানটুপি পরে নামাজ আদায় করা যাবে কি? ইসলাম কী বলে? ইসলামে ঐক্যের গুরুত্ব: কোরআন-হাদিসের আলোকে সমাজ গঠনের মূলমন্ত্র দাফনের পর সম্মিলিত দোয়া: ইসলামের নির্দেশনা কী? ফরজ গোসল ছাড়াই সেহরি খাওয়া যাবে? জেনে নিন ইসলামি বিধান ইস্তেখারার দোয়া দেখে পড়া যাবে কি? জেনে নিন ইসলামের নির্দেশনা কেটে ফেলা চুল-নখ কোথায় ফেলবেন? ধর্ম, সংস্কৃতি ও পরিবেশবান্ধব সমাধান সূর্যাস্তের সময় তাওয়াফের নামাজ আদায় করা যাবে? ইসলামিক স্কলারদের ব্যাখ্যা মৃত বাবা-মাকে স্বপ্নে দেখলে যা করবেন: মনোবিদ ও ধর্মীয় বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ
নোটিশঃ
সকাল হোক সত্য খবর দিয়ে । দেশ - বিদেশের সর্বশেষ খবর সবার আগে পেতে সকালের বার্তা এর সাথেই থাকুন ।

আল্লাহর পথের আলোকিত রাত: পবিত্র শবে মেরাজ আজ

ইসলাম ধর্মের অন্যতম পবিত্র রাত “শবে মেরাজ” আজ (২৭ জানুয়ারি) দেশজুড়ে ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্য ও শ্রদ্ধার সাথে পালিত হচ্ছে। এই রাতে মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.) আল্লাহর সান্নিধ্যে পৌঁছানোর মাধ্যমে মানবজাতির জন্য আধ্যাত্মিক শিক্ষার দিকনির্দেশনা নিয়ে এসেছিলেন। মসজিদ, মাদ্রাসা ও ঘরে ঘরে ইবাদত-বন্দেগির মাধ্যমে মুসল্লিরা সওয়াব অর্জনে ব্রতী হয়েছেন।

কেন পালন করা হয় শবে মেরাজ?

ইসলামিক ইতিহাস অনুযায়ী, এই রাতে মহানবী (সা.) ফেরেশতা জিবরাইল (আ.)-এর সাথে বোরাক নামের বিশেষ বাহনে চড়ে মক্কা থেকে জেরুজালেমের আল-আকসা মসজিদে যান। সেখান থেকে সাত আসমান পেরিয়ে আল্লাহর কাছে পৌঁছান তিনি। এই সফরে মুসলমানদের জন্য দৈনিক পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ ফরজ হয়। ইসলামিক স্কলার মাওলানা আহমেদ হোসেন বলেন, “শবে মেরাজ শেখায়—আল্লাহর প্রতি বিশ্বাস আর ধৈর্য্য যেকোনো অসম্ভবকে সম্ভব করে। এই রাত ইবাদত ও আত্মপরিশুদ্ধির সুবর্ণ সুযোগ।”

কীভাবে পালিত হয় রাতটি?

  • নামাজ ও কুরআন তিলাওয়াত:রাতজাগরণ করে মুসল্লিরা তাহাজ্জুদ, জিকির ও কুরআন পাঠ করেন।
  • দোয়া-মুনাজাত:পরিবার, সমাজ ও দেশের শান্তির জন্য সবার নামে প্রার্থনা করা হয়।
  • দান-খয়রাত:গরিবদের মাঝে খাবার, কাপড় ও অর্থ বিতরণ করা হয়।
  • রোজা রাখা:অনেকেই পরদিন (২৮ জানুয়ারি) নফল রোজা রাখেন।

মসজিদের সাজসজ্জা আয়োজন

ঢাকার বাইতুল মোকাররম, গুলশান আজাদ মসজিদসহ দেশের প্রায় সব মসজিদই সাজানো হয়েছে ফুল, রঙিন বাতি ও নতুন কার্পেটে। বাইতুল মোকাররমের খতিব মুফতি সাইফুল ইসলাম বলেন, “রাত ৯টা থেকে শুরু হয়ে ভোর পর্যন্ত চলবে কুরআন তেলাওয়াত, ওয়াজ মাহফিল ও সম্মিলিত দোয়া। সব বয়সের মানুষকে অংশ নেওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি।”

শিশুদের জন্য সহজ ব্যাখ্যা

রাতের তাৎপর্য বোঝাতে মসজিদ ও কমিউনিটি সেন্টারে শিশুদের জন্য গল্পের আসর ও অ্যানিমেশন দেখানো হচ্ছে। ঢাকার একটি স্কুলে শিক্ষক রিফাত হোসেন বলেন, “ছোটদের বলছি—নবীজি (সা.) এই রাতে শিখিয়ে গেছেন সত্য কথা বলা, বড়দের সম্মান করা। এগুলো মেনে চললেই আমরা ভালো মানুষ হতে পারব।”

ছুটির দিন সেবার ব্যবস্থা

সরকারি ঘোষণা অনুযায়ী, আজ অফিস-আদালত ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ। তবে জরুরি সেবা (হাসপাতাল, ফায়ার সার্ভিস) এবং গণপরিবহন স্বাভাবিক রয়েছে।

সামাজিক যোগাযোগে শেয়ারিং

তরুণরা ফেসবুক, টিকটকে শেয়ার করছেন শবে মেরাজের শিক্ষামূলক কন্টেন্ট। ইসলামিক ফাউন্ডেশন প্রকাশ করেছে “মেরাজের গল্প” শীর্ষক একটি কার্টুন ভিডিও, যেখানে শিশুরা নবীজির সফরকে সহজভাবে বুঝতে পারে।

সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির বার্তা

বিভিন্ন ধর্মের নেতারা একযোগে শান্তি ও সম্প্রীতির ডাক দিয়েছেন। ঢাকার একটি গির্জার ফাদার জেমস বলেছেন, “সব ধর্মই ভালো কাজের শিক্ষা দেয়। শবে মেরাজের এই রাত আমাদের পারস্পরিক শ্রদ্ধা বাড়াক।”

শেষ কথা:
শবে মেরাজের এই পবিত্র রাত ব্যক্তিগত ইবাদতের পাশাপাশি সমাজে সহমর্মিতা ও ঐক্যের বন্ধন শক্তিশালী করে। এটি সকলকে সুন্দর জীবনযাপনের প্রেরণা দেয়।

আপলোডকারীর তথ্য

মিজানুর রহমান হৃদয়

মিজানুর রহমান হৃদয় বাংলাদেশের একজন তরুন লেখক, তিনি এখন পর্যন্ত ৪ টি বই প্রকাশ করেছেন । ২০১৭ থেকে ২০২৫ চলতি বছর সে বেশ কিছু পত্র - পত্রিকায় কাজ করে আসছেন । আর আমাদের সকালের বার্তা'র বিশেষ প্রতিনিধি হিসেবেও কাজ করছেন ।
জনপ্রিয় বার্তা

“মডেল মেঘনা আলম কেন পুলিশ হেফাজতে? জানালেন পুলিশ কর্মকর্তা”

আল্লাহর পথের আলোকিত রাত: পবিত্র শবে মেরাজ আজ

আপডেট সময় ০১:৪৩:৩৭ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৭ জানুয়ারী ২০২৫

ইসলাম ধর্মের অন্যতম পবিত্র রাত “শবে মেরাজ” আজ (২৭ জানুয়ারি) দেশজুড়ে ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্য ও শ্রদ্ধার সাথে পালিত হচ্ছে। এই রাতে মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.) আল্লাহর সান্নিধ্যে পৌঁছানোর মাধ্যমে মানবজাতির জন্য আধ্যাত্মিক শিক্ষার দিকনির্দেশনা নিয়ে এসেছিলেন। মসজিদ, মাদ্রাসা ও ঘরে ঘরে ইবাদত-বন্দেগির মাধ্যমে মুসল্লিরা সওয়াব অর্জনে ব্রতী হয়েছেন।

কেন পালন করা হয় শবে মেরাজ?

ইসলামিক ইতিহাস অনুযায়ী, এই রাতে মহানবী (সা.) ফেরেশতা জিবরাইল (আ.)-এর সাথে বোরাক নামের বিশেষ বাহনে চড়ে মক্কা থেকে জেরুজালেমের আল-আকসা মসজিদে যান। সেখান থেকে সাত আসমান পেরিয়ে আল্লাহর কাছে পৌঁছান তিনি। এই সফরে মুসলমানদের জন্য দৈনিক পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ ফরজ হয়। ইসলামিক স্কলার মাওলানা আহমেদ হোসেন বলেন, “শবে মেরাজ শেখায়—আল্লাহর প্রতি বিশ্বাস আর ধৈর্য্য যেকোনো অসম্ভবকে সম্ভব করে। এই রাত ইবাদত ও আত্মপরিশুদ্ধির সুবর্ণ সুযোগ।”

কীভাবে পালিত হয় রাতটি?

  • নামাজ ও কুরআন তিলাওয়াত:রাতজাগরণ করে মুসল্লিরা তাহাজ্জুদ, জিকির ও কুরআন পাঠ করেন।
  • দোয়া-মুনাজাত:পরিবার, সমাজ ও দেশের শান্তির জন্য সবার নামে প্রার্থনা করা হয়।
  • দান-খয়রাত:গরিবদের মাঝে খাবার, কাপড় ও অর্থ বিতরণ করা হয়।
  • রোজা রাখা:অনেকেই পরদিন (২৮ জানুয়ারি) নফল রোজা রাখেন।

মসজিদের সাজসজ্জা আয়োজন

ঢাকার বাইতুল মোকাররম, গুলশান আজাদ মসজিদসহ দেশের প্রায় সব মসজিদই সাজানো হয়েছে ফুল, রঙিন বাতি ও নতুন কার্পেটে। বাইতুল মোকাররমের খতিব মুফতি সাইফুল ইসলাম বলেন, “রাত ৯টা থেকে শুরু হয়ে ভোর পর্যন্ত চলবে কুরআন তেলাওয়াত, ওয়াজ মাহফিল ও সম্মিলিত দোয়া। সব বয়সের মানুষকে অংশ নেওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি।”

শিশুদের জন্য সহজ ব্যাখ্যা

রাতের তাৎপর্য বোঝাতে মসজিদ ও কমিউনিটি সেন্টারে শিশুদের জন্য গল্পের আসর ও অ্যানিমেশন দেখানো হচ্ছে। ঢাকার একটি স্কুলে শিক্ষক রিফাত হোসেন বলেন, “ছোটদের বলছি—নবীজি (সা.) এই রাতে শিখিয়ে গেছেন সত্য কথা বলা, বড়দের সম্মান করা। এগুলো মেনে চললেই আমরা ভালো মানুষ হতে পারব।”

ছুটির দিন সেবার ব্যবস্থা

সরকারি ঘোষণা অনুযায়ী, আজ অফিস-আদালত ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ। তবে জরুরি সেবা (হাসপাতাল, ফায়ার সার্ভিস) এবং গণপরিবহন স্বাভাবিক রয়েছে।

সামাজিক যোগাযোগে শেয়ারিং

তরুণরা ফেসবুক, টিকটকে শেয়ার করছেন শবে মেরাজের শিক্ষামূলক কন্টেন্ট। ইসলামিক ফাউন্ডেশন প্রকাশ করেছে “মেরাজের গল্প” শীর্ষক একটি কার্টুন ভিডিও, যেখানে শিশুরা নবীজির সফরকে সহজভাবে বুঝতে পারে।

সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির বার্তা

বিভিন্ন ধর্মের নেতারা একযোগে শান্তি ও সম্প্রীতির ডাক দিয়েছেন। ঢাকার একটি গির্জার ফাদার জেমস বলেছেন, “সব ধর্মই ভালো কাজের শিক্ষা দেয়। শবে মেরাজের এই রাত আমাদের পারস্পরিক শ্রদ্ধা বাড়াক।”

শেষ কথা:
শবে মেরাজের এই পবিত্র রাত ব্যক্তিগত ইবাদতের পাশাপাশি সমাজে সহমর্মিতা ও ঐক্যের বন্ধন শক্তিশালী করে। এটি সকলকে সুন্দর জীবনযাপনের প্রেরণা দেয়।