নতুন বছরের প্রথম দিনে দেশের তরুণ উদ্যোক্তাদের স্বপ্নকে পাখা দেওয়ার লক্ষ্যে আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলা “ইনোভেশন এক্সপো ২০২৫”-এর উদ্বোধন করেছেন নোবেল বিজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূস। মেলা প্রাঙ্গণে হাজারো দর্শক ও উদ্যোক্তাদের উপস্থিতিতে তিনি বলেন, “তরুণরাই আমাদের ভবিষ্যৎ। তাদের আইডিয়াকে বাস্তব করতে বিনিয়োগকারী ও প্রতিষ্ঠানদের এগিয়ে আসতে হবে।“
মেলার বৈশিষ্ট্য: কী আছে স্টলে?
এই বছরের মেলার থিম হলো “তরুণ মেধা, ডিজিটাল বাংলাদেশ”। ৫০টির বেশি দেশের ৫০০টি স্টলে প্রদর্শিত হচ্ছে:
- তরুণদের তৈরি রোবটিক্স, সোলার এনার্জি প্রজেক্ট ও ই-কমার্স প্ল্যাটফর্ম।
- গ্রামীণ নারী উদ্যোক্তাদের হস্তশিল্প ও অর্গানিক খাদ্যপণ্য।
- স্টার্টআপদের জন্য বিনামূল্যে মেন্টরশিপ ও ফান্ডিং ওয়ার্কশপ।
ড. ইউনূস মেলা ঘুরে দেখেন এবং কয়েকটি তরুণের প্রজেক্টে সরাসরি বিনিয়োগের ঘোষণা দেন। তাঁর ভাষায়, “একজন তরুণ যখন বলল, সে গ্রামে সৌরবিদ্যুৎ নিয়ে কাজ করছে, তখনই বুঝলাম—এদের জন্যই আমাদের অর্থ বিনিয়োগ করা উচিত।“
তরুণদের জন্য বিশেষ ঘোষণা
উদ্বোধনী ভাষণে ড. ইউনূস তরুণদের উদ্দেশে তিনটি পরিকল্পনা জানান:
১. ইউনূস সোশ্যাল বিজনেস ফান্ড: প্রতিমাসে সেরা ১০টি স্টার্টআপ পাবে ১ কোটি টাকা অনুদান।
২. ডিজিটাল স্কিল ট্রেনিং: অনলাইনে বিনামূল্যে কোডিং, ডিজিটাল মার্কেটিং শেখার সুযোগ।
৩. গ্রামীণ উদ্যোক্তাদের সহায়তা: প্রতিটি উপজেলায় “ইনোভেশন হাব” তৈরি করা হবে।
উদ্যোক্তা ও দর্শকদের প্রতিক্রিয়া
রংপুরের তরুণ উদ্যোক্তা সাকিব আলম বলেন, “মেলায় এসে আমার সোলার প্রজেক্টের জন্য দুটি বিনিয়োগ পেয়েছি! ড. ইউনূসের পরামর্শ আমার জন্য স্বপ্নপূরণের মতো।“ ঢাকার স্কুলছাত্রী আয়েশা সিদ্দিকা বলে, “এখানে রোবট দেখে মনে হলো, আমিও একদিন এমন কিছু বানাব!”
মেলার সময়সূচি ও প্রবেশাধিকার
মেলা চলবে ১৫ জানুয়ারি পর্যন্ত, প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত খোলা থাকবে। প্রবেশ টিকিটের মূল্য রাখা হয়েছে শিশুদের জন্য ২০ টাকা এবং বড়দের ৫০ টাকা। স্টল ভিজিট ও ওয়ার্কশপে অংশ নেওয়া সম্পূর্ণ বিনামূল্যে।
পরবর্তী পদক্ষেপ
ড. ইউনূসের অফিস সূত্রে জানা গেছে, এপ্রিল মাসে “তরুণ বিনিয়োগ সম্মেলন” আয়োজনের পরিকল্পনা চলছে। সেখানে দেশি-বিদেশি বিনিয়োগকারীরা সরাসরি স্টার্টআপগুলোর সাথে চুক্তি করতে পারবেন।
শেষ কথা:
এই বাণিজ্য মেলা কেবল পণ্যের প্রদর্শনী নয়, বরং তরুণদের মেধাকে বিশ্বদরবারে পৌঁছে দেওয়ার একটি মঞ্চ। ড. ইউনূসের এই উদ্যোগ নতুন প্রজন্মকে স্বাবলম্বী হওয়ার প্রেরণা জোগাবে বলেই প্রত্যাশা সবার।