দেশের উত্তর ও মধ্যাঞ্চলজুড়ে ঘন কুয়াশায় জনজীবন বিপর্যস্ত। আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, এই কুয়াশা আরও তিন দিন (৪ থেকে ৬ জানুয়ারি) চলতে পারে। রাজধানী ঢাকাসহ রংপুর, রাজশাহী, ময়মনসিংহ ও সিলেটে ভোর থেকে সকাল ১০টা পর্যন্ত visibility (দৃশ্যমানতা) ৫০ মিটারের নিচে নেমে আসায় সড়ক, নদী ও বিমান চলাচলে বিঘ্ন ঘটছে।
কুয়াশার কারণ ও প্রভাব
আবহাওয়া অধিদপ্তরের পরিচালক ড. সামিনা হক বলেন, “শীতের শুষ্ক বাতাস ও নদী-জলাশয়ের আর্দ্রতা মিলে ঘন কুয়াশা তৈরি হয়েছে। রাতের তাপমাত্রা ১২°C-এর নিচে থাকায় পরিস্থিতি আরও খারাপ হচ্ছে।”
- সড়ক দুর্ঘটনা:গত ২৪ ঘন্টায় দেশে ২০টি দুর্ঘটনায় ৭ জন নিহত।
- ফেরি বন্ধ:পদ্মা ও যমুনায় নৌযান চলাচল স্থগিত।
- ফ্লাইট বিলম্ব:শাহজালাল বিমানবন্দরে ৮টি ফ্লাইট সকাল পর্যন্ত পিছিয়েছে।
কী করতে বলছে সরকার?
জনগণের সুরক্ষায় জরুরি নির্দেশনা:
- সকালে ভ্রমণ এড়িয়ে চলুন:বিশেষ করে সূর্য উঠা পর্যন্ত অপেক্ষা করুন।
- গাড়িতে ফগ লাইট জ্বালান:হেডলাইটের বদলে লো-বিম ব্যবহার করুন।
- মাস্ক ব্যবহার করুন:শ্বাসকষ্টের রোগীরা বাইরে বের হলে N95 মাস্ক পরুন।
জনজীবনে কী প্রভাব?
- স্কুলছাত্র রিফাতের কথা:“স্কুলবাস এক ঘণ্টা দেরিতে এসেছে। মিস করেছি প্রথম ক্লাস!”
- রিকশাচালক জাহাঙ্গীরের অভিজ্ঞতা:“সকালে রাস্তা দেখতে পাইনি। ধীরে ধীরে চালাতে হয়েছে।”
- কৃষক মো. আলীর উদ্বেগ:“শীতের সবজির ক্ষেত ঠিকমতো যত্ন নিতে পারছি না।”
কুয়াশা কাটবে কবে?
আবহাওয়া অফিসের পূর্বাভাস:
- ৪ জানুয়ারি:উত্তরাঞ্চলে তীব্র কুয়াশা (দৃশ্যমানতা ২০-৫০ মিটার)।
- ৫ জানুয়ারি:মধ্যাঞ্চলে মাঝারি কুয়াশা (১০০-২০০ মিটার)।
- ৬ জানুয়ারি:দক্ষিণে হালকা কুয়াশা, উত্তরে কিছুটা উন্নতি।
- ৭ জানুয়ারি থেকে:তাপমাত্রা বাড়তে শুরু করলে কুয়াশা কমবে।
স্বাস্থ্য পরামর্শ
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ডা. ফারহানা ইয়াসমিন বলছেন, “কুয়াশায় শ্বাসনালির সমস্যা বাড়ে। শিশু ও বয়স্করা ঘরে থাকুন। গরম পানীয় খান আর গামছা ভিজিয়ে ঘরে রাখুন।”
সরকারি প্রস্তুতি
- জরুরি সেবা (১৬২৩, ৯৯৯) ২৪ ঘন্টা সক্রিয়।
- কুয়াশার সময় ট্রাফিক পুলিশের সংখ্যা বাড়ানো হয়েছে।
- গ্রামে গ্রামে লাউডস্পিকারে সতর্কবার্তা প্রচার করা হচ্ছে।
শেষ কথা:
ঘন কুয়াশার এই দাপটে সবার সতর্কতা জরুরি। আবহাওয়া অফিসের পূর্বাভাস মেনে চললে দুর্ঘটনা এড়ানো সম্ভব। এখন অপেক্ষা শুধু রোদের—যেদিন কুয়াশা কেটে আবারও মুখর হবে রাস্তাঘাট!