৪৩তম বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস (বিসিএস) পরীক্ষায় বিভিন্ন কারণে আবেদন বাতিল হওয়া প্রার্থীদের আবেদন পুনর্বিবেচনা করবে সরকার। জনপ্রশাসন মন্ত্রী ফরিদুল হক আজ এক সংবাদ সম্মেলনে এ ঘোষণা দিয়ে বলেন, “আবেদনপত্র জমা দেওয়ার সময় টেকনিক্যাল ত্রুটির শিকার প্রার্থীদের সুযোগ দেওয়া হবে। তাদের পুনরায় আবেদন করতে বলা হবে, যা যাচাই-বাছাই করে চূড়ান্ত করা হবে।” এই সিদ্ধান্তের মাধ্যমে হাজারো প্রার্থীর আশা জেগেছে।
কেন এই সিদ্ধান্ত?
গত নভেম্বরে অনুষ্ঠিত ৪৩তম বিসিএসের প্রিলিমিনারি পরীক্ষায় প্রায় ১২ হাজার প্রার্থীর আবেদন বাতিল হয়েছিল ফরম পূরণে ভুল, ফি জমা না দেওয়া বা ছবি আপলোডে সমস্যার কারণে। প্রার্থীদের কাছ থেকে অভিযোগ ও আইনি নোটিশ পাওয়ার পর সরকার পুনর্বিবেচনার সিদ্ধান্ত নেয়। জনপ্রশাসন মন্ত্রী বলেন, “কেউ যেন ন্যায্য সুযোগ থেকে বঞ্চিত না হন, সেটি নিশ্চিত করতে আমরা কাজ করছি।”
কীভাবে আবেদন করবেন?
- আবেদনের সময়সীমা:১০ জানুয়ারি থেকে ২০ জানুয়ারি ২০২৫ পর্যন্ত।
- যারা আবেদন করতে পারবেন:শুধুমাত্র যাদের আবেদন পূর্বে বাতিল হয়েছিল।
- কোথায় জমা দেবেন:bpsc.gov.bd ওয়েবসাইটে নতুন একটি বিভাগ খোলা হবে।
- জরুরি নির্দেশিকা:ভুল সংশোধন করে ডকুমেন্ট আপলোড করতে হবে।
পাবলিক সার্ভিস কমিশনের ভূমিকা
বিসিএসের চেয়ারম্যান ড. সাইফুল ইসলাম বলেন, “আবেদনপত্র যাচাই করার জন্য একটি বিশেষ কমিটি গঠন করা হয়েছে। তারা প্রতিটি কেস আলাদাভাবে পরীক্ষা করবে। সঠিক প্রার্থীদের মূল পরীক্ষায় বসার সুযোগ দেওয়া হবে।”
প্রার্থীদের প্রতিক্রিয়া
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতকোত্তর শিক্ষার্থী রিয়াদ হাসান, যার আবেদন ছবি আপলোড না হওয়ায় বাতিল হয়েছিল, বলেন, “এবার সঠিকভাবে ফরম জমা দেব। সরকারের এই সিদ্ধান্ত আমাদের জন্য নতুন আশা এনেছে।”
ঢাকার প্রার্থী সাবিনা ইয়াসমিন বলেন, “ফি জমা দেওয়ার শেষ দিন ইন্টারনেট সমস্যা হয়েছিল। এখন আবার চেষ্টা করতে পারব।”
পরবর্তী পদক্ষেপ
- ২৫ জানুয়ারির মধ্যে পুনর্বিবেচিত আবেদনগুলোর তালিকা প্রকাশ করা হবে।
- ১ ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু হবে প্রিলিমিনারি পরীক্ষার নতুন তারিখের প্রস্তুতি।
- যাচাই শেষে যোগ্য প্রার্থীদের অ্যাডমিট কার্ড দেওয়া হবে।
বিশেষজ্ঞদের মতামত
ক্যারিয়ার বিশেষজ্ঞ ড. নাহিদ সুলতানা বলেন, “এটি একটি সময়োপযোগী সিদ্ধান্ত। অনেক মেধাবী প্রার্থী ছোটখাটো ভুলে সুযোগ হারাচ্ছিলেন। পুনর্বিবেচনা তাদের জন্য ন্যায়বিচার নিশ্চিত করবে।”
শেষ কথা:
সরকারের এই ঘোষণা বিসিএস প্রার্থীদের মধ্যে ব্যাপক স্বস্তি এনেছে। এখন চোখ পুনরায় আবেদন প্রক্রিয়া ও পরীক্ষার দিকে। এই সিদ্ধান্ত প্রশাসনিক সংস্কারের দিকে একটি ইতিবাচক পদক্ষেপ বলেই মনে করছেন বিশ্লেষকরা।