তীব্র শীতের দাপটে গত কয়েক দিনে উষ্ণ কাপড়ের চাহিদা বেড়ে দ্বিগুণ হয়েছে। রাজধানীর নিউমার্কেট, গুলিস্তান থেকে শুরু করে গ্রামের হাটবাজার পর্যন্ত কম্বল, সোয়েটার, মাফলার, টুপি আর জ্যাকেটের ভিড়ে মুখরিত। বিক্রেতারা বলছেন, “শীত যত বাড়ছে, ক্রেতাদের ভিড় ততই বাড়ছে।” আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, আগামী এক সপ্তাহে তাপমাত্রা আরও ১-২ ডিগ্রি কমতে পারে।
বাজারে কী পাওয়া যাচ্ছে?
- শিশুদের জন্য:রঙিন টুপি, মোজা, ফ্লাফি জ্যাকেট (দাম: ২০০-৫০০ টাকা)।
- বড়দের জন্য:উলের সোয়েটার (৫০০-১,৫০০ টাকা), কাশ্মীরি শাল (২,০০০-৫,০০০ টাকা)।
- গ্রামীণ বাজার:হ্যান্ডমেড নকশিকাঁথা ও পাতলা কম্বল (৩০০-৮০০ টাকা)।
কেন এই চাহিদা?
আবহাওয়া অধিদপ্তরের তথ্য মতে, গত ১০ বছরের মধ্যে এবার জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহেই সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে (১০.৫°C)। নারায়ণগঞ্জের বাসিন্দা রিকশাচালক মো. রাজু বলেন, “গতকাল রাতে এত ঠাণ্ডা লাগছিল যে পুরোনো কম্বল দিয়ে চাদর মিলছিল না। আজ নতুন একটা কিনলাম।”
দাম বাড়লেও কেন কিনছেন মানুষ?
শীতের কাপড়ের দাম গত মাসের তুলনায় ২০-৩০% বেড়েছে। তবুও ক্রেতাদের ভিড় কমছে না। নিউমার্কেটের দোকানদার আলমগীর হোসেন বলেন, “একটা সোয়েটার আগে ৪০০ টাকায় বিক্রি হতো, এখন ৬০০ টাকা। তবু বিক্রি তিন গুণ!” ঢাকার অফিসার শারমিন আক্তার বলেন, “শীত থেকে বাঁচতেই তো কিনতে হচ্ছে! নইলে শিশু অসুস্থ হয়ে যাবে।”
গ্রামে বাজারের চিত্র
রাজশাহীর চারঘাট হাটে গরম কাপড়ের পাশাপাশি চুলা ও কাঠের বিক্রিও বেড়েছে। স্থানীয় বিক্রেতা সুমন মণ্ডল বলেন, “গ্রামের মানুষ কাঁথা-কম্বল কিনছে বেশি। কেউ কেউ পুরোনো কাপড় সেলাই করিয়ে নিচ্ছে।”
সরকারি সহায়তা
দরিদ্র পরিবারের জন্য ঢাকা সিটি কর্পোরেশন ৫ হাজার বিনামূল্যে কম্বল বিতরণের ঘোষণা দিয়েছে। এছাড়া, শিশু ও বৃদ্ধাদের জন্য উষ্ণ কাপড়ের ডিসকাউন্ট চালু করেছে কিছু এনজিও।
কীভাবে সাশ্রয়ীভাবে কিনবেন?
বাজার বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ:
- দরদাম করুন:একই জিনিস বিভিন্ন দোকানে ৫০-১০০ টাকা কমে মিলতে পারে।
- পুরোনো জিনিস রিসাইকেল:পুরোনো সোয়েটার বা শালে নতুন ডিজাইন সেলাই করুন।
- গ্রামীণ হাটে যান:শহরের চেয়ে সেখানে দাম ২০-৩০% কম।
পরবর্তী পূর্বাভাস
আবহাওয়া অধিদপ্তর সতর্ক করে দিয়েছে, ৫ জানুয়ারির মধ্যে উত্তরাঞ্চলে হালকা কুয়াশাসহ শৈত্য প্রবাহ অব্যাহত থাকতে পারে।
শেষ কথা:
শীতের এই দাপটে উষ্ণতা ছড়াচ্ছে উষ্ণ কাপড়ের বাজার। সাধারণ মানুষ যেমন প্রয়োজনে কিনছেন, তেমনি বিক্রেতাদেরও হাসি ফুটেছে। এখন চোখ আকাশের দিকে—কখন ফের ফিরবে রোদচাঁদনি!

মিজানুর রহমান হৃদয় 















