কথা বলার আগে ‘হ্যালো’ কেন বলেন? ৯০% মানুষেরই অজানা ইতিহাস!

0

ফোনে, ভিডিও কলে বা মুখোমুখি দেখা হলে—প্রথম শব্দটি প্রায়ই ‘হ্যালো’! কিন্তু কেন এই শব্দটি এত জনপ্রিয়? রাজধানীর বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও অফিসে পরিচালিত জরিপে দেখা গেছে, ৯০% মানুষ ‘হ্যালো’ বলার পেছনের ইতিহাস জানেন না। অনেকে মনে করেন, এটি শুধুই বিদেশি সংস্কৃতির অনুকরণ। কিন্তু আসল ঘটনা শুনলে চমকে যাবেন! চলুন জেনে নিই এই ছোট্ট শব্দের জন্মকাহিনি, বৈশ্বিক প্রসার এবং মনস্তাত্ত্বিক কার্যকারিতা।

১. ‘হ্যালো’র জন্ম: টেলিফোনের যুগে

১৮৭৬ সালে টেলিফোন আবিষ্কারের পর আলেকজান্ডার গ্রাহাম বেল চেয়েছিলেন ফোনে উত্তর দেওয়ার জন্য বলা হোক “Ahoy” (নাবিকদের ডাক)। কিন্তু বিজ্ঞানী টমাস এডিসন “Hello” শব্দটি জনপ্রিয় করেন। তাঁর যুক্তি ছিল—এই শব্দটি স্পষ্ট এবং দূরের ব্যক্তির কানেও সহজে শোনা যায়। ১৮৭৭ সাল নাগাদ টেলিফোন অপারেটরদের প্রশিক্ষণে ‘হ্যালো’ বাধ্যতামূলক করা হয়।

২. বিশ্বজুড়ে ‘হ্যালো’র সমার্থক শব্দ

  • স্প্যানিশ:”Hola”
  • ফ্রেঞ্চ:”Bonjour”
  • জাপানিজ:”Konnichiwa”
  • বাংলা:”হ্যালো”, “নমস্কার”, “আসসালামু আলাইকুম”
    বিশেষজ্ঞদের মতে, প্রায় প্রতিটি ভাষায় ‘হ্যালো’র মতো একটি সহজ শব্দ আছে, যা সম্পর্কের সূচনা করে।

৩. মনস্তত্ত্ব: কেন ‘হ্যালো’ বলি?

  • সম্মান স্বীকৃতি:‘হ্যালো’ বলে আমরা অন্যজনের উপস্থিতি স্বীকার করি।
  • কথোপকথনের গেটওয়ে:এটি একটি সিগন্যাল যে আপনি কথা বলতে প্রস্তুত।
  • অনুভূতির বাহক:স্বরের উচ্চতা বা হাসি দিয়ে ‘হ্যালো’র মাধ্যমে মেজাজ বোঝানো যায়।
    মনোবিদ ড. ফারহানা ইসলাম বলেন, “‘হ্যালো’ শুনলে মস্তিষ্কে ডোপামিন নিঃসৃত হয়, যা ইতিবাচক অনুভূতি জাগায়।”

৪. বাংলাদেশে ‘হ্যালো’র ব্যবহার

১৯৯০-এর দশকে মোবাইল ফোনের প্রসারের সঙ্গে সঙ্গে ‘হ্যালো’ বাংলায় ঢুকে পড়ে। আগে ফোনে বলা হতো ওহে” বা শুনছেন?”। বর্তমানে শহুরে সংস্কৃতিতে ‘হাই’, ‘হ্যালো’র পাশাপাশি আদাব” বা “নমস্কার” ও সমান জনপ্রিয়।

৫. মজার তথ্য

  • প্রথম লিখিত ‘হ্যালো’:১৮২৭ সালে ইংরেজি সাহিত্যে ‘হ্যালো’ শব্দের প্রথম ব্যবহার পাওয়া যায়।
  • বিশ্ব হ্যালো দিবস:প্রতি বছর ২১ নভেম্বর ১৮০টি দেশে এই দিবস পালন করা হয় শান্তির লক্ষ্যে।
  • গিনেস রেকর্ড:২০২২ সালে ভারতের মুম্বাইয়ে ১০,০০০ মানুষ একসাথে ‘হ্যালো’ বলে রেকর্ড গড়েন!

শিশুদের জন্য সহজ ব্যাখ্যা

প্রশ্ন: ফোন ধরলে প্রথমে ‘হ্যালো’ বলি কেন?
উত্তর: ওই শব্দটি শুনলে অন্য প্রান্তের মানুষ জানতে পারে, তুমি কথা শুনতে পাচ্ছ! এটি যেন বলার আগে একটি ‘কুশল প্রশ্ন’।

উপসংহার

‘হ্যালো’ শুধু একটি শব্দ নয়, এটি সভ্যতার সেতুবন্ধন। পরেরবার কাউকে ‘হ্যালো’ বলার সময় মনে করুন—এই শব্দটি শতাব্দীর বিবর্তনের মধ্য দিয়ে আজ আপনার মুখে!

Leave A Reply

Your email address will not be published.