ওসমান হাদির জানাজা: মানিক মিয়া অ্যাভিনিউয়ে মানুষের ঢল।
সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায় জানাজার প্রস্তুতি: নিরাপত্তার চাদরে মানিক মিয়া অ্যাভিনিউ, স্লোগানে মুখর রাজপথ।
ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক শরিফ ওসমান বিন হাদির জানাজায় অংশ নিতে আজ শনিবার সকাল থেকেই জাতীয় সংসদ সংলগ্ন মানিক মিয়া অ্যাভিনিউয়ে মানুষের ঢল নেমেছে। বেলা ২টায় জানাজা শুরু হওয়ার কথা থাকলেও সকাল থেকেই রাজধানী ও ঢাকার আশপাশ থেকে হাজার হাজার মানুষ দলে দলে সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজার সামনে জড়ো হতে শুরু করেছেন।
সরেজমিনে দেখা গেছে, ফার্মগেট ও আসাদ গেট হয়ে আসা মানুষের হাতে এবং মাথায় জাতীয় পতাকা বাঁধা। তারা ছোট ছোট দলে ভাগ হয়ে বিভিন্ন স্লোগান দিচ্ছেন। শোকাতুর জনতার কণ্ঠে শোনা যাচ্ছে—‘আমরা সবাই হাদি হব যুগে যুগে লড়ে যাব’ এবং ‘দিল্লি না ঢাকা, ঢাকা ঢাকা’। লালবাগ থেকে আসা আহসান উল্লাহ জানান, “হাদি ভাইয়ের জানাজায় জনসমুদ্র হবে বুঝতে পেরেই আগেভাগে চলে এসেছি।”
জানাজা ও দাফনের প্রস্তুতি
ইনকিলাব মঞ্চের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, পরিবারের চাওয়া অনুযায়ী হাদিকে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের কবরের পাশে সমাহিত করা হবে। জানাজা শেষে মরদেহ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদে নেওয়া হবে। এই বিশেষ মর্যাদাপূর্ণ সমাধি প্রক্রিয়ার জন্য প্রয়োজনীয় Government Legal Support ও অনুমতির প্রক্রিয়া ইতোমধ্যে সম্পন্ন হয়েছে বলে জানা গেছে।
কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থা
জানাজাকে কেন্দ্র করে মানিক মিয়া অ্যাভিনিউ এলাকায় কয়েক স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে প্রশাসন। সেনাবাহিনীর সদস্যরা নিয়মিত টহল দিচ্ছেন। এছাড়া বিপুল সংখ্যক পুলিশ, র্যাব ও আনসার মোতায়েন করা হয়েছে। ডিএমপির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, ১ হাজার বডি ওর্ন ক্যামেরাসহ পর্যাপ্ত পুলিশ সদস্য মোতায়েন রয়েছে। নিরাপত্তার স্বার্থে মানিক মিয়া অ্যাভিনিউ হয়ে যানবাহন চলাচল সীমিত করা হয়েছে। জানাজায় আগতদের কয়েক দফা তল্লাশির মাধ্যমে ভেতরে ঢোকানো হচ্ছে। প্রয়োজনে উপস্থিত গণমাধ্যমকর্মীরা দ্রুত তথ্য আদান-প্রদানের জন্য High Speed Internet সুবিধা ব্যবহার করছেন।
হাদির ওপর হামলা ও অকাল মৃত্যু
গত ১২ ডিসেম্বর ঢাকার পুরানা পল্টনের বক্স কালভার্ট রোডে দুর্বৃত্তদের গুলিতে আহত হন শরিফ ওসমান হাদি। উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে সিঙ্গাপুরে নেওয়া হলেও ১৮ ডিসেম্বর তিনি শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন। গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যায় তাঁর মরদেহ দেশে আনা হয়। সিঙ্গাপুরে এই Critical Medical Treatment চলাকালীন পুরো দেশ তাঁর সুস্থতার জন্য অপেক্ষায় ছিল।
হাদির পরিবার থেকে জানানো হয়েছে, জানাজায় বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা ছাড়া অন্য কোনো পতাকা যেন না থাকে। ইনকিলাব মঞ্চের ফেসবুক পোস্টে দেশপ্রেম ও সংহতির এই আহ্বান সাধারণ মানুষের মাঝে ইতিবাচক সাড়া ফেলেছে।